বাঁধাকপি চাষে ক্ষতি
খেয়ালি আবহাওয়াই কারণ, বলছেন দেগঙ্গার চাষিরা
প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় চরম সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা ব্লকের চাষিরা। প্রচণ্ড গরম ও বৃষ্টির জন্য এই ব্লকের প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে চাষ করা বাঁধাকপির প্রায় ৯০ শতাংশ ইতিমধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন পরেই দুর্গাপুজো। পুজোয় বাঙালির পাতের অপরিহার্য কপির পদ। তাই চাষিরা মুখিয়ে থাকেন পুজোর বাজারের দিকে। কিন্তু এ বার এই বিপত্তি তাঁদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। ক্ষতির কথা ভেবে অনেকেরই মাথায় হাত পড়েছে।
মহকুমা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দেগঙ্গার সোহাই, শ্বেতপুর, খাঁপুর, ওধনপুর, হরিণখোলা, যাদবপুর ও চাকলা এলাকার মানুষ পদ্মা নদীর ধার বরাবর উর্বর জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেন। পুজোর মুখে বাজারে বাঁধাকপি ভাল চাহিদা থাকে। তাই গত কয়েক বছর ধরেই পুজোর কয়েক মাস আগে থেকে এই সব এলাকায় চাষিরা বাঁধাকপি চাষ শুরু করেন। এক বিঘা জমিতে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করে চাষ করলে ৪৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। ফলে কিছুদিনের মধ্যেই চাষিদের কাছে লাভজনক হয়ে ওঠে এই চাষ। কয়েক বছর ধরে চাষে লাভ করলেও এ বার বিপাকে পড়ে গিয়েছেন চাষিরা।
নষ্ট ফসল। চিন্তায় চাষি। —নিজস্ব চিত্র।
এ বছর কপির গায়ে এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণের কারণে কপির পাতা কালো হয়ে গুটিয়ে যাচ্ছে। খাঁপুর গ্রামের সরিফুল ইসলাম বলেন, “গত কয়েক বছর লাভ হওয়ায় এবছরও ঋণ নিয়ে বাঁধাকপির চাষ শুরু করেছিলাম। বীজ রোপণের কিছু দিন পর থেকেই লক্ষ্য করি কপির পাতায় একধরনের কালো কালো ছোপ। কোনও ওষুধেই কাজ হল না। ৫ বিঘা জমির প্রায় পুরোটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আগের বার যে কীটনাশক ব্যবহার করেছিলাম এ বারও সেটাই করেছি। আসলে আবহাওয়ার খামখেয়ালিই ডুবিয়ে দিল।” যাদবপুর গ্রামের সহিদুল ইসলাম জানালেন, “এলাকায় এই চাষ জলদি কপি চাষ নামে পরিচিত। এ বছর বেশি লাভের আশায় অনেকেই বেশি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু যা অবস্থা দাঁড়িয়েছে তাতে সর্বস্বান্ত হওয়ার জোগাড়। কীটনাশক দিয়েও আর ফসল বাঁচানো সম্ভব নয়। পুজোর মুখে এই ক্ষতি আমাদের পথে বসিয়ে দিল।”
গ্রামের চাষিদের বীজ রোপণ ও ফসলে সঠিক কীটনাশক প্রয়োগের বিষয়ে যাঁরা চাষিদের সচেতন করে থাকেন তেমনই একজন সনাতন বিশ্বাস। তাঁর কথায়, “অতিরিক্ত গরমের সঙ্গে মাঝে-মধ্যে বৃষ্টির জন্য কপিতে পচন দেখা দিয়েছে। তবে সময়মত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করলে হয়তো কৃষকেরা এতটা ক্ষতিগ্রস্ত হতেন না।” জেলার উদ্যান-পালন আধিকারিক দীপক সারেঙ্গী বলেন, “বেশিরভাগ জমির বাঁধাকপি অল্টার মেডিয়া (ছত্রাক) রোগের আক্রমণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ক্ষতি সামাল দিতে চাষিদের যদি কোনওভাবে সাহায্য করা সম্ভব হয় তার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে সঠিক কীটনাশক ব্যবহার করলে এই ক্ষতি এড়ানো যেত বলেই মনে হয়”।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.