আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের দাবিতে ‘পানিশালা চলো’ অভিযানের ডাক দিলেন রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সি। বুধবার দুপুরে জমি অধিগ্রহণের দাবিতে উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ সদরে দীপাদেবীর নেতৃত্বে ‘মহামিছিলে’ পা মেলান কংগ্রেসের কয়েকশো নেতা-কর্মী-সমর্থক। তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিলে সামিল হন বহু মানুষ। পরে দীপাদেবী বলেন, “উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। সেই কারণে শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার রায়গঞ্জের শীতগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিশালা এলাকার সরকারিভাবে চিহ্নিত হওয়া ১০০ একর জমি অধিগ্রহণ করছে না। চাষিরা প্রতিদিনই স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা আমাদের জানাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাসপাতাল তৈরির কাজ রুখে দিতেই জমি অধিগ্রহণ করছেন না। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু করা না হলে প্রশাসনিক জটিলতায় তা আটকে যেতে পারে। সেই কারণে আগামী ১১ অক্টোবর দুপুর ২ টায় প্রদেশ কংগ্রেসের তরফেই ‘পানিশালা চলো’ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে।” দীপা দেবী জানান, ওইদিন পানিশালা এলাকায় জমি অধিগ্রহণের দাবিতে একটি পদযাত্রার আয়োজন করা হবে। পদযাত্রায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য সহ প্রদেশ কংগ্রেসের নেতারা সামিল হবেন। পাশাপাশি, ওই পদযাত্রায় এলাকার সমস্ত চাষিকে সামিল করা হবে। এর পরে চিহ্নিত জমির পাশেই একটি জনসভায় প্রদীপবাবু সহ প্রদেশ ও জেলা কংগ্রেসের নেতারা বক্তব্য রাখবেন। |
জনসভার মঞ্চে উঠে প্রায় ১০০ জন চাষি স্বেচ্ছায় জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করবেন। এদিন দীপাদেবী জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত, দলের দুই জেলা সাধারণ সম্পাদক পূর্ণেন্দু দে ও পবিত্র চন্দকে ১১ অক্টোবরের ওই অনুষ্ঠানকে হাসপাতাল তৈরির স্বার্থে জেলার সমস্ত স্তরের সাধারণ মানুষকে সামিল করার অনুরোধ করেন। ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি রায়গঞ্জের তৎকালীন সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় সরকার ৮২৩ কোটি টাকা খরচে ১০০ একর জমিতে ৯৬০ শয্যার ওই হাসপাতাল তৈরির ব্যাপারে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু, জমি অধিগ্রহণ না-হওয়ায় সে কাজ শুরু হয়নি। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে দীপাদেবীর পাশে বসে জেলা কংগ্রেসের তিন নেতা তথা কালিয়াগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যাণ অরুণ দে সরকার, ডালখোলা পুরসভার চেয়ারম্যাণ সুভাষ গোস্বামী ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “হাসপাতাল তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারই তো টাকা দেবে। রাজ্য সরকারকে শুধু জমি অধিগ্রহণ করে কেন্দ্রের হাতে তুলে দিতে হবে। রাজ্য সরকার টাকা দিতে পারবে না জানালে উন্নয়নের স্বার্থে আমরাই চাঁদা তুলে চাষিদের কাছ থেকে জমি কিনে কেন্দ্রের হাতে তুলে দেব।” তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “দীপাদেবীদের কথায় আমরা কোনও গুরুত্ব দিচ্ছি না। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকার জোর করে জমি অধিগ্রহণ করবে না। চাষিরা যদি স্বেচ্ছায় জমি দিতে রাজি থাকেন, তা হলে তাঁরা কেন তা লিখিতভাবে রাজ্য সরকারকে জানাচ্ছেন না, তা বুঝতে পারছি না। পূর্বতন রাজ্য সরকারের দেনার বোঝা নিয়ে বর্তমান রাজ্য সরকার চলছে। চাষিরা স্বেচ্ছায় জমি দিলেও রাজ্য সরকারকে ক্ষতিপূরণ তো দিতে হবে? সেই কারণে হাসপাতাল তৈরির জন্য উদয়পুর এলাকায় অব্যবহত কৃষিফার্মের সরকারি জমি অধিগ্রহণ করা যায় কি না সেই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম।” |