|
|
|
|
ঘাটাল পুরসভা নিয়েও জল্পনা |
রেলশহরে পুরপ্রধান নির্বাচন ৬ই |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বহু টানাপোড়েনের পর খড়্গপুর পুরসভার পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন স্থির হয়েছে বুধবার। এ জন্য বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে আগামী ৬ অক্টোবর, শনিবার। উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরী বলেন, “পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য শনিবার বোর্ড মিটিং ডাকা হয়েছে।”
তৃণমূল পরিচালিত এই পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গত ১৪ অগস্ট অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। তার প্রেক্ষিতে ২৭ অগস্ট পুরসভায় বোর্ড মিটিং হয়। এই মিটিংয়ে ঠিক কী হয়েছে, মিটিংটি বৈধ না অবৈধ, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কংগ্রেসের দাবি ছিল, বৈধ ভাবেই মিটিং হয়েছে। অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, ওই মিটিং অবৈধ ভাবে হয়েছে। এ নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। ৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে পুর-দফতর থেকে একটি নির্দেশিকা আসে। তাতে বলা হয়, অনাস্থা সংক্রান্ত বৈঠকের বিষয়টি লিগাল সেলের বিবেচনাধীন। যতক্ষণ না সেল মতামত দিচ্ছে, ততক্ষণ জহরলাল পাল পুরপ্রধানের কাজকর্ম চালাবেন। এই নির্দেশকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিষয়টি যখন লিগ্যাল সেলের বিবেচনাধীন, তখন উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরীকে পুরপ্রধানের কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়াই উচিত ছিল।
পুরসভার ওই বোর্ড মিটিংকে কেন্দ্র করে রাজ্যের পুর-দফতর যে নির্দেশিকা দিয়েছিল, গত ২৪ সেপ্টেম্বর তার উপর স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট জানায়, পুর-আইন অনুযায়ী পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরসভার কাজ চালিয়ে যাবেন উপ-পুরপ্রধান। এরপরই আদালতের নির্দেশ মেনে এক সপ্তাহের মধ্যে পুরপ্রধান নির্বাচনের দিন ঘোষণার জন্য উপ-পুরপ্রধান তুষার চৌধুরীর কাছে দাবি জানায় কংগ্রেস। বুধবার পুর-কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, আগামী ৬ অক্টোবর বোর্ড মিটিং হবে। ওই মিটিংয়েই পুরপ্রধান নির্বাচন হবে। এই মিটিংয়েও যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলর কংগ্রেসের প্রস্তাবকে সমর্থন করেন, তাহলে পুরবোর্ড তৃণমূলের হাতছাড়া হবে।
এ দিকে, ঘাটাল পুরবোর্ডের ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর এক মন্তব্যে। বুধবার সবংয়ে দলীয় সভায় এসে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার ঘাটালে যাচ্ছি। সভা আছে। খড়্গপুরে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে কংগ্রেস। আমাদের পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে। খড়্গপুরের জবাব ঘাটালেই দেব।” তাহলে কী ঘাটাল পুরবোর্ড থেকে সরে আসবে তৃণমূল? শুভেন্দুর বক্তব্য, “সিপিএমের সুবিধা হয়, এমন কোনও কাজ আমরা করব না। তবে আমাদের আবেদন থাকবে, যাঁরা সিপিএম বিরোধিতা করতে চান, তাঁরা আমাদের সঙ্গে আসুন।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের ৩টি পুরসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূল জোটের বোর্ড রয়েছে। ঘাটাল, রামজীবনপুর ও মেদিনীপুরে। মেদিনীপুর, রামজীবনপুরে পুরপ্রধান পদ তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ঘাটালে পুরপ্রধান পদ কংগ্রেসের দখলে রয়েছে। কেন্দ্রের পর রাজ্য স্তরে জোট ভেঙে গিয়েছে। এরপর জেলাস্তরেও জোট না রাখার সিদ্ধান্ত হলে এই ৩টি পুরসভায় রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ঘাটালে পুরপ্রধান পদে রয়েছেন কংগ্রেসের জগন্নাথ গোস্বামী। উপপুরপ্রধান তৃণমূলের উদয়শঙ্কর সিংহ রায়। ২০১০ সালের নির্বাচনে এখানে কংগ্রেস পেয়েছিল ৫টি আসন। তৃণমূল ৪টি ও সিপিএম ৮টি আসনে জিতেছিল। পরে সমীকরণ পাল্টায়। সিপিএমের দুই কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে তৃণমূলের আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬টি। খড়্গপুরে তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস। “খড়্গপুরের জবাব ঘাটালে দেব”, শুভেন্দুর এই মন্তব্যের পর ঘাটাল পুরবোর্ডের ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। |
|
|
|
|
|