অর্থ খরচ হচ্ছে। কাজ চালানোর পক্ষে বেশ ভাল পরিকাঠামোও আছে। তা সত্ত্বেও কোনও এক অদৃশ্য কারণে থমকে আছে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ। স্বাভাবিক ভাবে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।
পুরসভার পক্ষ থেকে জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য ব্যয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এখনও জমে রয়েছে জঞ্জাল। যেমন, পুরসভার ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়কের পাশে অবস্থিত জীবনানন্দ পল্লির সামনে জমে থাকা জঞ্জালের দুর্গন্ধের জন্য এখন হাঁটাই দায়! ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হাইরোডের ধারে টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সামনে জমে থাকা ছাই ছোটখাটো টিলার রূপ নিয়েছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর পূর্ণিমা মণ্ডলের যুক্তি, “কী করব? ওয়ার্ডে প্রতি সোমবার একটা করে জঞ্জাল সাফাইয়ের গাড়ি আসে। ওই একটা গাড়িতে কত জঞ্জাল সাফাই করা সম্ভব? এ ছাড়া পুরসভা থেকে জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য মাসে মাত্র ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। ওই টাকায় কতটা কাজই বা করা যায়?” |
সব্জি হাটের পাশে আবর্জনার স্তূপ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম। |
৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাড়গ্রাম মোড় ও বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জঞ্জাল সাফাই নিয়েও ক্ষোভ আছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, “৭ নম্বর ওয়ার্ড পুরপ্রধানের এলাকা হওয়া সত্ত্বেও সেখানে পরিবেশ সচেতনতা একদম নেই। খোদ পুরপ্রধানের ওয়ার্ডে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে বাকি ওয়ার্ডের অবস্থা তো সহজেই অনুমেয়!” ৫ নম্বর ওয়ার্ডে হাটতলার বাজারে জমে থাকা জঞ্জাল এলাকার দূষণের অন্যতম কারণ। ওই ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সুপর্ণা চৌধুরী বলেন, “বাজারের রাস্তা সংকীর্ণ বলে সাফাইয়ের গাড়ি ঢোকাতে সমস্যা হয়।”
বাসিন্দাদের ক্ষোভ, ঘরে ঘরে জ্বর হচ্ছে। সম্প্রতি কারও কারও রক্তে ডেঙ্গিরও জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। অথচ পুরসভাই জঞ্জাল সাফাই করছে না। জ্বরের পাশাপাশি অন্য রোগও হচ্ছে।
রামপুরহাটের পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারির দাবি, “একে বাজারের রাস্তা সংকীর্ণ। তার উপর বেশিরভাগ রাস্তাই দোকানদারদের দখলে। তাঁদের সরাতে গেলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে। অথচ জঞ্জাল সাফাইয়ের প্রয়োজন। এ বিষয়ে প্রশাসনের সাহায্য চাইলেও তেমন কোনও সদর্থক উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে সম্প্রতি প্রশাসনের কাছে আবেদন করে শহর লাগোয়া ভাটিনা মৌজায় ৯.৫১ একর জমি পাওয়া গিয়েছে। সেখানে জঞ্জাল ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছ, স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন। লিফলেটও বিলি করা হচ্ছে। পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক ত্রিশঙ্কুকুমার পাল বলেন, “পুর এলাকায় কেউ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সরকারি তথ্য এখনও নেই।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪২ জন সাফাই কর্মীর কাজের জন্য প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা ও দৈনিক শ্রমিকের মজুরি বাবদ মাসে প্রায় দুই লক্ষ টাকা ব্যয় হয়। এ ছাড়াও রয়েছে পুরসভার জঞ্জাল সাফাইয়ের তিনটি গাড়ি। প্রতিটি গাড়ির জন্য দৈনিক বরাদ্দ হল ১৭ লিটার তেল। সম্প্রতি কেনা হয়েছে মশা দমনের যন্ত্র। স্বাভাবিক ভাবে পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই। অথচ জঞ্জাল কেন সাফাই হচ্ছে না তা নিয়ে প্রশ্ন এলাকাবাসীর। যদিও তেলের যোগানের অভাবে ওই সব যন্ত্র এখন ব্যবহার করা যাচ্ছে না বলে দাবি পুরসভার। |