মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ফের রেলের শৌচাগারের নোংরা, দুর্গন্ধময় জলে ভাসল হাওড়া সাবওয়ে। এ বারও সাবওয়ে থেকে গঙ্গার সঙ্গে যুক্ত নিকাশি পাইপে প্লাস্টিক ও অন্যান্য আবর্জনা আটকে গিয়ে এই বিপত্তি বলে জানা গিয়েছে। আর এই নিয়েই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) এবং পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। ঘটনার দায় দু’পক্ষই পরস্পরের উপরে চাপিয়েছেন। তবে প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় তিনটি পাম্প চালিয়ে সাবওয়েকে জলমুক্ত করলেও অফিসের ব্যস্ত সময়ে ওই নোংরা জল ঘেঁটেই কলকাতার বাস ধরতে যেতে হয়েছে হাজার হাজার যাত্রীকে। |
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার এই বিভ্রাটের শুরু হয় সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ। কেএমডিএ-র হাওড়া স্পেশাল রোড ডিভিশনের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আচমকা সাবওয়ে দিয়ে যাওয়া গঙ্গার সঙ্গে যোগাযোগকারী পাইপলাইন থেকে নোংরা জল ‘ব্যাক ফ্লো’ করতে শুরু করে। যার জেরে জল জমতে থাকে সাবওয়েতে। এক সময়ে টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রায় চার-পাঁচ ইঞ্চি জল জমে যায়। দুগর্ন্ধে ভরে যায় চারদিক। ওই ইঞ্জিনিয়ার জানান, সাবওয়ে তৈরির সময়ে ওই পাইপলাইন ব্যবহারের জন্য রেল কেএমডিএ-র থেকে ‘নো অবজেকশন’ সার্টিফিকেট নিয়েছিল। সেই থেকেই হাওড়া স্টেশনের সমস্ত শৌচাগারের নোংরা জল ওই পাইপলাইন দিয়ে গঙ্গায় ফেলে রেল। কিন্তু নিয়মিত সংস্কারের অভাবে পাইপলাইন আবর্জনায় বুজে গিয়ে সাবওয়েতে জল জমে যাওয়া ছিল প্রায় প্রতি বর্ষার ঘটনা।
কেএমডিএ-র দাবি, কয়েক মাস আগে এই নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। তাতে ঠিক হয়, সাবওয়ে দিয়ে যাওয়া পাইপলাইন দিয়ে যেহেতু শুধু রেলের শৌচাগারের নোংরা জল যায়, তাই তা পরিষ্কার রাখবে রেল। কিন্তু রেল তা না করাতেই বারবার এই বিপত্তি হচ্ছে। যদিও রেলের দাবি, সাবওয়ের উপরের অংশে যেখান দিয়ে ওই নিকাশি পাইপ গঙ্গায় গিয়েছে, তা সম্পূর্ণ কেএমডিএ এলাকার মধ্যে পড়ে। তাই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেএমডিএ-র। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার উপরে গজিয়ে ওঠা নানা বেআইনি দোকানদারেরা তাঁদের সুবিধের জন্য ওই পাইপলাইনে গর্ত করে প্লাস্টিক, ডাবের খোলা ও অন্যান্য বর্জ্য ফেলছেন। যার ফলে পাইপলাইন আটকে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিলে এই সমস্যা মিটবে না।
হাওড়ার ডিভিশন্যাল রেলওয়ে ম্যানেজার অনির্বাণ দত্ত বলেন, “আমরা নিয়মিত ওই পাইপ পরিষ্কার করি। কিন্তু ম্যানহোল দিয়ে ও অন্য ভাবে পাইপলাইনে বেআইনি দোকানদারেরা আবর্জনা ফেলায় পাইপ আটকে যাচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।” |