রাজনৈতিক দলগুলিকে হুঁশিয়ারি কেজরিওয়ালের
রাজনৈতিক দলের নাম এখনও ঠিক হয়নি। এমনকী এই দল গড়তে গিয়ে ভেঙে গিয়েছে অণ্ণা শিবিরও। কিন্তু তাতে মোটেই দমবার পাত্র নন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। সেই প্রমাণ পাওয়া গেল আজ। রীতিমতো মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর জন্মদিনে দেশের রাজধানীতে তাঁর রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি ঘোষণা করে দিলেন অণ্ণার এক সময়ের ছায়াসঙ্গী। জানালেন, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংস্কারই তাঁদের লক্ষ্য। তা-ও গাঁধী এবং লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে ‘সাক্ষী’ রেখে!
মঞ্চের পিছনে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এবং লালবাহাদুর শাস্ত্রীর ছবি। কেজরিওয়ালের টুপিতে লেখা ‘আমি আম আদমি’। যা সম্ভবত নিজেকে আম আদমির কাছের লোক প্রমাণ করার চেষ্টা। এ ভাবেই মঞ্চ থেকে সব রাজনৈতিক দলকে হুঁশিয়ারি দিলেন কেজরিওয়াল। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, তাঁদের দলের নামকরণ হবে ২৬ নভেম্বর।
এ দিন উপস্থিত সদস্য-সমর্থকদের সদ্য রাজনৈতিক দল গড়া কেজরিওয়াল পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন। সংসদে যেতে তাঁরা মোটেও ভয় পান না। বলেন, “যখন আমরা লোকপাল প্রসঙ্গ তুলেছিলাম, তখন নেতারা আমাদের প্রশ্ন করেছিলেন, আপনারা কেন নির্বাচনে অংশ নিয়ে আইন তৈরির চেষ্টা করছেন না। এখন থেকে আমরা সেই কাজটি করেই দেখিয়ে দেব।” এর পরেই তাঁর হুঙ্কার, “আজ থেকে আম আদমি রাজনাতিতে আসছে। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা নিজেদের দিন গুনতে শুরু করে দিন।” তাঁর অভিযোগ, “সব রাজনৈতিক দল আমাদের ঠকিয়েছে। কিন্তু এখন থেকে আমরা আর কাকুতি-মিনতি করব না। এ বার সরাসরি রাজনৈতিক লড়াই চলবে।”
নয়াদিল্লিতে এক সভায় কেজরিওয়াল। ছবি: পি টি আই।
আর কী বললেন কেজরিওয়াল? বললেন, একটা সময় ছিল যখন কেউ নির্বাচন লড়লে তাঁকে দেশপ্রেমিকের মর্যাদা দেওয়া হত। কিন্তু এখন যাঁরা নির্বাচনে লড়েন, তাঁরা ক্ষমতার জন্য লালায়িত। বললেন, এখন কোনও বিরোধী পক্ষ নেই। সব রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায়। কেজরিওয়ালের আরও অভিযোগ, দেশের সব রাজনৈতিক দলই দুর্নীতিগ্রস্ত। আজ তিনি বলেন, “আমাদের দল শুধু সংসদেই যাবে না, এই ব্যবস্থারও পরিবর্তনও ঘটাবে। এটাই লোকসভা-বিধানসভাকে পরিষ্কার করার সময়।”
কিন্তু কী ভাবে? কেজরিওয়ালের মতে, সংসদের বদলে বাজেট তৈরি হওয়া উচিত রাস্তায়। এই ব্যবস্থার সমর্থনে ব্রাজিলের একটি শহরের উদাহরণ টেনেছেন তিনি। আম আদমির হাতে সরাসরি ক্ষমতা দেওয়ারও পক্ষপাতী কেজরিওয়াল। বলেন, “অনেকেই মনে করেন, এটি একটি অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু আমি বলছি, এটা সম্ভব। আমরা যদি নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসি, তা হলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করব।”
আইন প্রণয়নের ব্যাপারে বিভিন্ন ফাঁক-ফোঁকরের উল্লেখ করে কেজরিওয়ালের দাবি, “সংসদের অর্ধেক সদস্য অশিক্ষিত, যাঁরা বলেন বেশি ভাগ সাধারণ মানুষেরই আইনের ব্যাপারে কোনও ধারণা নেই।” কেজরিওয়ালের কথায়, “যদি তাঁরা আইন তৈরি করতে পারেন, যদি রাবড়ি দেবী বিহার চালাতে পারেন তা হলে সাধারণ মানুষও আইন তৈরি করতে পারবেন।” তাঁর আরও দাবি, “আমরা যদি আরও দেরি করি, তা হলে দেশ বিক্রি হয়ে যাবে।”
কিন্তু কেজরিওয়াল যে ধরনের পরিবর্তনের কথা বলছেন, তা কি আদৌ বাস্তবসম্মত? উঠছে সেই প্রশ্নও।
রাজনৈতিক কারবারীদের মতে, ভারতের মতো দেশে এই ধরনের সমাজব্যবস্থা কার্যত অসম্ভব। সম্ভবত এটি বুঝতে পারছেন, অণ্ণা-শিবিরের এক সময়ের সদস্য কুমার বিশ্বাস। তিনি বলেন, “আমি এই রাজনৈতিক দলের সদস্য হব না। ধরুন ১০ বছর পরে এই দলে কোন ভুল বা অন্যায় হয়, তা হলে তার বিরুদ্ধে যন্তরমন্তরে প্রতিবাদ করার জন্য তো কাউকে না কাউকে থাকতে হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.