পুজোর মুখে বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডে কোচবিহারের নিশিগঞ্জ বাজারের ৩২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মাথাভাঙা মহকুমার ওই বাজারে ঘটনাটি ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে অগ্নিকান্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় দেড় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। মাথাভাঙা ও কোচবিহার সদর থেকে দমকলের ৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় চার ঘন্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্যবসায়ীরা অবশ্য অভিযোগ করেছেন, দমকল কর্মীরা খবর দেওয়ার ঘন্টাখানেক পরে নিশিগঞ্জে এসেছে। অথচ মাথাভাঙা মহকুমা সদর থেকে নিশিগঞ্জের দূরত্ব বড়জোর ১৫ কিমি। কোচবিহারের দূরত্ব প্রায় ২৭ কিমি। শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শনে যাওয়া ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি মাথাভাঙার বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের সামনে ক্ষোভ উগড়ে দেন ব্যবসায়ীরা। দমকল কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পাশাপাশি, এলাকায় দমকল কেন্দ্রেরও দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। মাথাভাঙার মহকুমা শাসক ছিয়ং পালজার বলেন, “গভীর রাতের অগ্নিকান্ডে বেশ কিছু দোকান পুড়ে গিয়েছে। বিডিও’র কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সাহায্য করার বিষয়টি দেখা হচ্ছে।” |
দমকল সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ অন্যান্য দিনের মত নিশিগঞ্জ বাজারে দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এর কয়েকঘন্টা বাদে বাজারের একটি বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দোকান থেকে খোঁয়া বার হতে দেখেন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন পরপর দোকানে ছড়াতে থাকে। ওষুধ, মোবাইল, গয়না, মুদি, ঘড়ি, টিভি-সহ মোট ৩২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। নিশিগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুশীল দেবনাথ বলেন, “বহু দোকান পুড়ে গিয়েছে। খভর কম হলেও দেড় কোটি টাকার বেশি আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সামান্য দূরত্বের মাথাভাঙা থেকে দমকল ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি করায় ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। প্রশাসনের কাছে সকলকে আর্থিক সাহায্য করার দাবি জানিয়েছি।” পুজোর মুখে ঘটনার পর মাথায় হাত পড়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের। তাঁদেরই এক জন গোপাল সাউদ বলেন,“রাত ১টা নাগাদ আগুন লাগে। দমকল তাড়াতাড়ি আসলে হত ক্ষতির মুখে পড়তাম না।” আর এক ব্যবসায়ী ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, “দোকান বন্ধ করে নিশ্চিন্তে বাড়ি গিয়েছিলাম। এত বড় সর্বনাশ হবে ভাবতেও পারছি না।” মাথাভাঙার বিধায়ক বিনয়কৃষ্ণ বর্মন দমকল কেন্দ্র গড়া নিয়ে ব্যবসায়ীদের দাবি পূরণের ব্যাপারে রাজ্যের দমকল মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে আশ্বাস দেন। মাথাভাঙা দমকল কেন্দ্রের আধিকারিক ইমরান কুরেশি বলেন, “ শটসার্কিট থেকে ওই ঘটনা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আগুন লাগার খবর আমরা ১ টা ৫ মিনিটে পাই। নিশিগঞ্জে ইঞ্জিন গিয়েছে ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ। দোলংমোড় থেকে রাস্তা বেহাল বলে মিনিট দশেক বেশি সময় লেগেছে মাত্র।” |