|
|
|
|
এ বার চিঠি মুখ্যসচিবকে |
হলদিয়া বন্দরের শান্তির উদ্যোগ হামলায় বানচাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা ও হলদিয়া |
এক দিকে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বৈঠক, অন্য দিকে নতুন করে হামলা। নিটফল, হলদিয়া বন্দরের স্বাভাবিক অবস্থা ফেরার কোনও পথই দেখা যাচ্ছে না। শান্তির যেটুকু উদ্যোগ ও কাজ শুরুর যেটুকু চেষ্টা চলছিল, হামলায় তার সবই ভেস্তে যায়।
হলদিয়া বন্দরের অচলাবস্থা কাটাতে শুক্রবার কলকাতায় বৈঠকে বসেছিল বন্দরের অছি পরিষদ। সমস্যার সমাধানে অছি পরিষদ রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক মহলের হস্তক্ষেপ চেয়েছে। ঠিক হয়েছে, বন্দর-কর্তৃপক্ষ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের তত্ত্বাবধানে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক ডাকার অনুরোধ জানাবেন। সেখানেই শ্রমিক-অসন্তোষ এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে সব পক্ষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে। অছি পরিষদের আশা, ওই বৈঠকেই কোনও একটা সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে।
কিন্তু ওই বৈঠক হলদিয়ায় হলে সেখানে পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজি উপস্থিত থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান মণীশ জৈন বৃহস্পতিবারেই সব পক্ষকে নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। কিন্তু এবিজি সেখানে যায়নি। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের বিভিন্ন মহলের কর্মী ও অফিসারেরা যাতে হলদিয়ায় পা না-দেন, সেই জন্য তাঁদের ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই অবস্থায় কলকাতায় কোনও বৈঠক হলে তারা থাকতে রাজি।
বন্দরের অছি পরিষদের এ দিনের বৈঠকে হলদিয়ায় দ্রুত কাজ শুরুর আবেদন জানানো হয়েছে এবিজি-র কাছে। ১৫ সেপ্টেম্বর এবিজি-র সঙ্গে বন্দর-কর্তৃপক্ষের যে-চুক্তি হয়েছিল, তা মেনেই ওই সংস্থাকে কাজ চালু রাখার আর্জি জানিয়েছে অছি পরিষদ। কিন্তু এবিজি সেই আর্জি কতটা মানবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, এ দিনই হলদিয়ার দু’নম্বর বার্থে ছাঁটাই হওয়া কর্মীরা কাজ করতে ইচ্ছুক শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছে বলে এবিজি-র তরফে অভিযোগ। বন্দর সূত্রে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়া থেকে ‘জেথার’ নামে একটি জাহাজ কোকিং কোল নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ হলদিয়া বন্দরের দু’নম্বর বার্থে পৌঁছয়। তার আগে ওই বার্থে থাকা কোকিং কোল বোঝাই অন্য জাহাজ ‘আথিনা ক্যারাস’কে চার নম্বর বার্থে সরিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালে কোনও কাজ হয়নি। বিকেল নাগাদ এবিজি-র শ্রমিকেরা দু’নম্বর বার্থে আসা নতুন জাহাজের পণ্য খালাস করতে যেতেই ফের গোলমাল শুরু হয়। এবিজি-র ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকদের একাংশ কাজ করতে চাওয়া শ্রমিকদের বাধা দিয়েছেন বলে বন্দর সূত্রের খবর। তার পরেই সংঘর্ষ বাধে। জখম হন শিপ লিডার সুব্রত মণ্ডল ও ক্রেন অপারেটর শেখ সুফিয়ার রহমান। তাঁদের হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামলায় বন্দরে মোতায়েন সিআইএসএফ (শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী)। এবিজি-র সিইও গুরপ্রীত মালহি বলেন, “আমাদের বলা হয়েছিল, বন্দরের ভিতরে রাজ্য পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। অথচ এ দিন দেখা গেল, সিআইএসএফ হামলা রুখতে সাহায্য করছে। কিন্তু রাজ্য পুলিশকে দেখা যায়নি।” সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করে বন্দরে অশান্তি বন্ধ করার জন্য বন্দর-কর্তৃপক্ষ, রাজ্য প্রশাসন এবং সিআইএসএফ-কে আর্জি জানিয়েছে এবিজি। |
|
|
|
|
|