পরিচালন সমিতির ভোটে মনোনয়নপত্র জমা না দিতে পারার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করলেন তিন জন অভিভাবক। মুজিবর মণ্ডল, শরিফ মণ্ডল ও বাবলু ঘোষ নামে ওই তিন অভিভাবক বৃহস্পতিবার এই ব্যাপারে কালনা মহকুমাশাসক শশাঙ্ক শেঠির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
ওই অভিভাবকেরা জানান, কালনা ১ ব্লকের বেগপুর ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের পরিচালন সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল আগামী ৭ অক্টোবর। বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। অভিযোগ, এ দিন মনোনয়ন জমা দিতে গেলে প্রধান শিক্ষক দেবাশিস ভট্টাচার্য জানান, নোটিশ বোর্ডে মনোনয়ন জমা না নেওয়া হবে না জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। তা শুনে ফিরে যান অভিভাবকেরা। দুপুর দেড়টা নাগাদ স্কুল থেকে ফোনে তাঁদের জানানো হয়, দুপুর ২টো পর্যন্ত মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে। অভিভাবকদের দাবি, আচমকা স্কুলে যেতে বলায় প্রধান শিক্ষকের কাছে আরও কিছুটা সময় চান তাঁরা। কিন্তু দেবাশিসবাবু তা দিতে চাননি। ফলে তাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলে তদন্ত দাবি করেছেন ওই অভিভাবকেরা।
দেবাশিসবাবুর অবশ্য বক্তব্য, “কালনা থানা থেকে আমাদের জানানো হয়, ভোটের দিন পুলিশ দেওয়া যাবে না। তাই বৃহস্পতিবার প্রথমে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়নি। পরে মহকুমা ও জেলা স্কুল পরিদর্শক মনোনয়ন নিতে বলায় দেরিতে তা নেওয়া হয়।” তাঁর আরও দাবি, দেরি করে মনোনয়ন জমা নেওয়া শুরু হওয়ায় ২টোর পরিবর্তে বিকেল সাড়ে ৩টে অবধি অপেক্ষা করা হয়েছে। কালনা থানার এক আধিকারিক জানান, ৭ অক্টোবর কালনা ২ ব্লকের একটি সমবায়ে ভোট রয়েছে। তাই ওই স্কুলে পুলিশ দেওয়া যাবে না বলে প্রধান শিক্ষককে জানানো হয়েছিল।
তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেগপুর এলাকায় তৃণমূলের ইনসান শেখ ও হারান শেখ নামে দুই নেতার গোষ্ঠী এই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র তোলে। সিপিএম মনোনয়ন না তোলায় এই দু’পক্ষের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যুব তৃণমূল নেতা হারান শেখের লোকজন মনোনয়ন জমা না দেওয়ায় জয়ী হয় ইনসান শেখের অনুগামীরা। ইনসান শেখ এ দিন বলেন, “নিয়ম মেনে ৬টি আসনে আমরা মনোনয়ন জমা দিয়েছি। অন্য কোনও মনোনয়ন জমা না পড়ায় আর ভোটের দরকার হয়নি।” হারান শেখের পাল্টা দাবি, “স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির জন্য আমরা ভোটে প্রার্থী দিতে পারিনি। এ নিয়ে আদালতে যাব।” মহকুমাশাসক জানান, বিষয়টি নিয়ে স্কুল পরিদর্শককে তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রামে আমাটিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে প্রার্থী দিতে না পারায় সিপিএম তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছে। বুধবার ছিল ওই স্কুলে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। স্থানীয় সিপিএম নেতা অশেষ কোনারের অভিযোগ, “ওই দিন প্রার্থী দিতে গেলে তৃণমূল মারধর করে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে। আমাদের পাঁচ জন জখম হন।” তৃণমূলের মন্তেশ্বর ব্লক সভাপতি অজয় রায় অবশ্য বলেন, “ ওখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ছিল।আমরা কাউকে বাধা দিইনি।” |