শিশু শ্রমিকদের ‘অত্যাচারে’ জেরবার হোমের মূক-বধিরেরা
গাড়ি সাফাই করে ‘ছোট মেকানিক’ হিসেবেই ওদের অনেকের দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যেত। কেউ বা গভীর রাত পর্যন্ত হোটেলের টেবিল আর বাসন মুছত। রায়গঞ্জ শহর জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১০ থেকে ১৪ বছরের এমনই ১৬ জন শিশু শ্রমিককে সম্প্রতি ‘উদ্ধার’ করে রাখা হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের এক মাত্র সরকারি হোম সূর্যোদয়-এ। কিন্তু জেলা প্রশাসনের এই ‘তৎপরতা’য় জীবন ‘অতিষ্ঠ’ হয়ে উঠেছে হোমের পুরনো আবাসিক জনা পঁয়ত্রিশ মূক-বধির শিশু-কিশোরের।
কেন? আকারে-ইঙ্গিতে হোমের ওই নির্বাক শিশু-কিশোরেরা যা জানিয়েছে, তা অভিযোগ হিসেবে অগ্রাহ্য করার মতো নয়। খাবার কেড়ে খেয়ে নেওয়া থেকে মারধর, রাতবিরেতে হাত-পা টেপানো, ঘরে ধূমপান থেকে শৌচকর্ম করাশিশু শ্রমিকদের ‘অত্যাচারে’ তাদের অনেকেই এখন হোম থেকে পালাতে পারলে বাঁচে।
কিন্তু মূক-বধিরদের হোমে ওই শিশু শ্রমিকদের রাখা হল কেন? জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট-২০০৬ অনুসারে, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে কোনও ভাবেই সুস্থ স্বাভাবিক ওই শিশু-কিশোরদের ঠাঁই হওয়ার কথা নয়। নারী ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ওই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “অত্যন্ত উদ্বেগজনক ঘটনা। যত দ্রুত সম্ভব শিশু শ্রমিকদের অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।” কিন্তু কে সরাবে?
জেলায় আর সরকারি হোম নেই। সূর্যোদয় হোমের শিশুকল্যাণ কমিটির চেয়ারম্যান তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুনীলকুমার ভৌমিক দাবি, পরিবার বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে চাইছে না ওই শিশু শ্রমিকদের। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলছেন, “কিছু করার নেই। শিশু শ্রমিকদের জন্য আলাদা হোম নেই। আপাতত ওখানেই থাকবে ওরা।”
ওই হোমের সুপার পার্থসারথি দাস বলেন, “শিশু শ্রমিকদের ভয়ে মূক-বধির ওই শিশু-কিশোরেরা বাস্তবিকই আতঙ্কে। ঠিকমতো খেতে পাচ্ছে না। বাচ্চাগুলো আকারে ইঙ্গিতে বলছে, কী ভাবে ওদের মারধর করা হচ্ছে। কিন্তু ওদের আলাদা রাখার জায়গা কোথায়? মূক-বধির বাচ্চাগুলোর কষ্ট দেখে অসহায় লাগছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.