হরভজন সিংহের কামব্যাক নিয়ে লিখতে বসে একটা সন্ধের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
খুব বেশি দিন আগের কথা নয়। চিন্নাস্বামীতে ভারত-নিউজিল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ চলছে। ব্যক্তিগত একটা কাজে জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে গিয়েছি। ভাজ্জি তখন ওখানে প্র্যাকটিস করছে। রাতে ওর সঙ্গে ডিনারে যাওয়া ঠিক হল। সেখানে আড্ডা মারতে মারতে হঠাই দেখলাম, আমার বহু দিনের বন্ধু কী রকম যেন ফুটছে ভেতরে ভেতরে। চাপা একটা রাগ। কথাবার্তায় বুঝতেও পারলাম, ও যে দেড় বছর ধরে টিমের বাইরে এটা ঠিক যেন মেনে নিতে পারছে না। একবার তো বলেও ফেলল, “আমি হরভজন সিংহ। চারশো উইকেট আছে আমার। অথচ না টেস্ট, না ওয়ান ডে, না টি-টোয়েন্টি, কোথাওই আমি নেই!”
আজ দেখে ভাল লাগছে যে, ও নিজের রাগটা পারফরম্যান্সের মধ্যে দিয়ে মাঠে বের করে আনল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উইকেট পাওয়ার পর ওর তীব্র চিৎকারগুলো দেখে মনে হচ্ছিল, হরভজনের মতো ক্রিকেটারদের কাছে আত্মসম্মানটা সত্যিই সবচেয়ে আগে থাকে। আসলে ভাজ্জি বুঝতে পেরেছিল যে স্কিলে নয়, গত দেড় বছর ও ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল মানসিকতায়। আমাকে বলেওছিল সেটা। ও যে ম্যাচ উইনার, ইডেনে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে হ্যাটট্রিক করেছিল এই জিনিসগুলোই নাকি ভুলতে বসেছিল। এনসিএ-তে ওর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আমি বুঝেছিলাম, ও স্রেফ একটা সুযোগ খুঁজছে। বলছিল যে, কাউন্টিতে দিনে কুড়ি-পঁচিশ ওভার বল করে করে আগের আত্মবিশ্বাসটা চলে এসেছে। ও এখন দেখাতে চায়, হরভজন ফুরিয়ে যায়নি।
|
আর সেটা ঠিক সময়ে ও পুরনো হরভজন বের করে আনল। দেখুন, ইদানীং টি-টোয়েন্টিতে আমাদের পারফরম্যান্স মোটেই ভাল নয়। বিশেষ করে বোলিং ভোগাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। সে দিক থেকে দেখতে গেলে, সুপার এইটের আগে ভারসাম্যটা ফিরে এল ভারতীয় বোলিংয়ে। ডেথ ওভার নিয়ে সমস্যা আছে। সেটা নিয়ে ধোনির পেসারদের সঙ্গে কথা বলা উচিত। দিন্দা বা বালাজি যাকেই ও বেছে নিক না কেন, তাকে আগে থাকতে বলা দরকার যে তুমি ডেথ-এ বল করবে। কিন্তু স্পিন নিয়ে আর কোনও চিন্তা থাকল না। ভাজ্জি আছে, অশ্বিন আছে। ব্যাকআপ হিসেবে যুবরাজ, পীযুষ চাওলাও ভাল করছে। আর প্রেমদাসার উইকেট যা দেখছি বাকি টুর্নামেন্টে এখানে স্পিনারদের ‘অ্যাডভান্টেজ’। ধোনির উচিত মাঝের এই ফাঁকা সময়টায় স্পিনারদের নিয়ে স্ট্র্যাটেজিটা নিখুঁত করে ফেলা।
কী রকম? অস্ট্রেলিয়া দিয়ে শুরু করি। সুপার এইটে ভারতের প্রথম ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়ার কিন্তু সে রকম দরের ব্যাটসম্যান তিন জন। ওয়ার্নার, ওয়াটসন আর মাইক হাসি। শেষ দু’জন স্পিন-পেস দু’টোই ভাল খেলে।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হরভজন আর অশ্বিন দু’জনকেই খেলানো উচিত। শুধু তাই নয়, আমি একধাপ এগিয়ে বলব বোলিং ওপেন করুক ওরা। অশ্বিন আগে যা করেছে। আর ভাজ্জিকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ানদের একটা ভয় সব সময়ই আছে। ডেথে বল করুক জাহির বা বালাজি। কিংবা আমাদের দিন্দা। স্পষ্ট বলছি, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ধোনির সাত ব্যাটসম্যানের পুরনো ফর্মূলায় ফেরত যাওয়া উচিত নয়। ধোনির বরং উচিত নিজেকে উপরে তুলে আনা। আর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে যে টোটকার কথা বললাম, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও ওটাই কাজে দেবে। কারণ অস্ট্রেলিয়ার মতো স্পিন খেলার লোক ওদেরও দু’জন। আমলা আর ডে’ভিলিয়ার্স। তা ছাড়া শ্রীলঙ্কার এই পিচ থেকে ফায়দা তুলবে, তেমন দরের স্পিনারও দু’টো টিমের কারও নেই। |
ভয় শুধু পাকিস্তান নিয়ে। বিশ্বসেরা স্পিনার সইদ আজমল ওদের টিমে। আফ্রিদি টি-টোয়েন্টিতে দুর্ধর্ষ বোলার। তা ছাড়া হাফিজ আছে। পাকিস্তানের স্পিনাররা যদি দশে নয় পায়, আমরা পাব আট-সাড়ে আট। উমর গুলরা থাকায় পেস অ্যাটাকেও ওরা এগিয়ে। ব্যাটিংয়ে আমাদের বড় বড় নাম আছে। কিন্তু ওদের কামরান বা উমর আকমলের যে দিন ব্যাটে ঠিকঠাক লাগবে, বিশ্বের ঢের বড় বড় ব্যাটসম্যানকেও শিশু দেখাবে। ওরা শুধু মার খায় ধারাবাহিকতায়। ভারতকে মারতে হবে ফিল্ডিংয়ে। ওদের সিঙ্গলস নেওয়া যদি আটকানো যায়, তা হলে বড় শটের দিকে ওরা যাবেই। তখন উইকেট তোলার সুযোগ আসবে।
তবু বলছি, সুপার এইটের ভারতের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ ৩০ সেপ্টেম্বর। প্রতিপক্ষ যেখানে পাকিস্তান। আর এটা তো শুধু দু’দেশের যুদ্ধ নয়, বিশ্বকাপের ‘ম্যাচ অব দ্য টুর্নামেন্ট’ও বটে!
|
সুপার এইটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
সংবাদসংস্থা • কলম্বো |
২০১০ সালে ইংল্যান্ডের মতো একটাও ম্যাচ না জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সুপার এইটে চলে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এ দিন আয়ারল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ বৃষ্টিতে বাতিল হয়ে গেল। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরেছিল ক্যারিবিয়ান দল। এ দিন ১৯ ওভারে ১২৯-৬ তোলে আয়ারল্যান্ড। কিন্তু তার পরেই প্রবল বৃষ্টিতে আর খেলা সম্ভব হয়নি। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেল আয়ারল্যান্ড।
|
ঝুলনদের সামনেও অস্ট্রেলিয়া
সংবাদসংস্থা • কলম্বো |
ধোনিদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযানের মধ্যেই দ্বীপরাষ্ট্রের বাইশ গজেই মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেমে পড়ছে ভারত। টিম ধোনি সুপার এইটে শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগের দিন মেয়েদের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ারই মোকাবিলায় নামবে মিতালি রাজের ভারত। এবং তার দিন তিনেক আগে ভারতীয় মেয়ে ক্রিকেট দলের উদ্দীপিত হওয়ার মতো তথ্য রয়েছে আইসিসি-র মহিলা ক্রিকেটারদের বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে। ব্যাটসম্যান-বোলার মিলিয়ে বিশ্বের সেরা দশের তালিকায় রয়েছেন বঙ্গতনয়া ঝুলন গোস্বামী-সহ ভারতের চার মেয়ে ক্রিকেটার। সোমবারই প্রকাশিত হয়েছে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিং। বোলারদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ঝুলন। বর্তমান অধিনায়ক মিতালি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। এ ছাড়া ব্যাটিং বিভাগে সেরা দশে রয়েছেন হরপ্রীত কৌর। অলরাউন্ডারদের মধ্যে প্রথম পাঁচে রয়েছেন অমিতা শর্মা। |