বেহাল রাস্তা দিয়েই দ্রুত গতিতে ছুটে আসছিল কাটোয়ামুখী বর্ধমান-আমলাই রুটের বাসটি। বাঁকের মুখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। সোজা নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে সেটি। সোমবার সকালে কাটোয়া-বোলপুর রোডে কেতুগ্রাম থানার বারান্দা গ্রামের কাছে ঘটনাটি ঘটে। আহত হন ৪০ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ২২ জনকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় ১৮ জনকে। যাত্রীদের একাংশ বাসচালকের বিরুদ্ধে কেতুগ্রাম থানায় অভিযোগ করেছেন। পুলিশ জানায়, বাসটি আটক করা হয়েছে। চালক পলাতক। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানার আমলাই বাস স্টপেজ থেকে বাসটি ছাড়ে। সেখান থেকে কাটোয়া হয়ে বর্ধমান যায়। কেতুগ্রামের পাঁচুন্দি থেকে ভুলকুড়ি পর্যন্ত কাটোয়া-বোলপুর রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ। রাস্তা ভর্তি খানা-খন্দে। উঠে গিয়েছে পিচের আস্তরণ। গাড়ি গেলেই ধুলো ওড়ে। এর মধ্যেই ওই রাস্তা দিয়ে খুব দ্রুত গতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন চালক। যাত্রীরা বারবার চালককে আস্তে গাড়ি চালানোর অনুরোধ করলেও তিনি তা শোনেননি বলে অভিযোগ।
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডের শল্য বিভাগে ভর্তি রয়েছেন আহত যাত্রী নিতাই হাজরা। বাড়ি ভরতপুরের করন্দি গ্রামে। তাঁর কথায়, “রাস্তা খারাপ। বাসটি জোরে চালাচ্ছিলেন চালক। চালকের পাশেই বসেছিলাম আমি। আস্তে চালাতে বলায় তিনি আমাকে বাস থেকে নেমে যেতে বলেন।” |
আর এক আহত যাত্রী, কেতুগ্রামের কুলাই গ্রামের নিখিল ঘোষ বলেন, ‘‘ভুলকুড়ি বাস স্টপ থেকে বাসে উঠেছিলাম। তার পর থেকেই দুলছিল বাসটি। যাত্রীরাও চিৎকার করছিলেন। বারান্দা বাঁক পেরোতেই গোত্তা খেয়ে নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে।” খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান কেতুগ্রামের আইসি আবদুল গফ্ফর। তিনি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বাসটি রাস্তায় চলাচলের অনুপযুক্ত ছিল। সেই কারণেই জোরে চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক।”
প্রসঙ্গত, গত শনিবারেও ওই রাস্তাতেই কোমরপুর ও কান্দরার মাঝে বাস উল্টে জখম হন বেশ কয়েক জন যাত্রী। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা খারাপের কারণেই এই দুর্ঘটনা। পূর্তভবনের রামজীবনপুর কান্দরার সহকারি বাস্তুকার নির্মল মণ্ডল বলেন, “দু’এক দিনের মধ্যেই রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”
এ দিনই বর্ধমানের ফাগুপুর মোড়ে চিত্তরঞ্জন-বর্ধমান রুটের একটি বাসকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে আসানসোল থেকে কলকাতাগামী একটি ভলভো বাস। এর জেরে ভলভো বাসটির চালক ও খালাসি-সহ ১৫ জন আহত হন। ৯ জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
|