|
|
|
|
উত্তরের চিঠি |
|
জলপাইগুড়ির আবেগ আছে |
১০ সেপ্টেম্বরের চিঠিতে প্রকাশ গুপ্ত ‘জলপাইগুড়ি কবে সাবালক হবে’ শীর্ষক যে প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন, পড়ে মনে হল সেটি উত্তরের নয়, শিলিগুড়ির চিঠি। ওঁর অন্য শহরের মানচিত্র দেখার যে অভ্যেস নেই তা চিঠিতে স্পষ্ট। তিনি বলেছেন, শহর বা জেলার উন্নয়নকল্পে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সম্পর্ক থাকাটা জরুরি নয়। বারবার শহরবাসীর উদ্যম হারানো মানসিকতাকে দায়ী করেছেন। উনি শুধু শুধু নিজের মত অন্যের উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন লেখায়। সরকারের অর্থানুকূল্য ছাড়া ক’জন শিল্পপতি বা বাগান মালিকদের দিয়ে শহরের উন্নয়নঅলীক ব্যাপার! জলপাইগুড়ির স্কুল-কলেজে পড়েছি, শহর নিয়ে ভেবেছি বলে মানুষকে কাছ থেকে দেখেছি। আপনার স্পোর্টস কমপ্লেক্স নিয়ে অভিযোগ থাকতেই পারে, কিন্তু গাছ কাটা বা মাঠে ঘাস কাটার জন্য মালির নিয়োগ কে করবে? স্থানীয় ক্লাব না হরিবাবু, রামবাবু। তাদের মাসিক মাইনের জোগাড় হবে আমার-আপনার বেতন কেটে, নাকি সরকারের ক্রীড়া দফতর নিয়োগ করবে মাঠ আর মানুষের স্বার্থে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র সিংহভাগ টাকাই খরচ হয়েছে শিলিগুড়ির উন্নয়নেঅডিট রিপোর্ট বলছে। |
|
ছবি: লেখক |
জলপাইগুড়িতে পঞ্চাশ বছর ধরে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন সম্ভব হয়নি শিলিগুড়ির আন্দোলনে। হরতাল, অবরোধ, আগুন জ্বালিয়ে বিরোধিতা করেছেন আপনারা। এক শহরের সরলতার সুযোগ নিয়ে আর এক শহরের তাকে পূর্ণগ্রাসের মতো গিলে ফেলাতেই এ বিপত্তি। আজ জলপাইগুড়িতে বড় ক্লাব লিগ হয় না। ক্রীড়ামন্ত্রীর দায় নেই। শহরবাসী উদ্যোগী হয়ে হ্যাল, ডেম্পো এনে লিগ চালাব, কেউ ভাবতে পারে? আজ জলপাইগুড়ির একশো বছরের দালান গুঁড়িয়ে ওয়ানওয়ে, সোডিয়াম ল্যাম্পের বাহার সৌজন্যে এসডিও নিত্যসুন্দর ত্রিবেদীউনিও তো সেই প্রশাসনের লোক! শহরকে লন্ডন বানাতে গেলে প্রশাসনেরই দ্বারস্থ হতে হবে। আমাদের ক্ষমতা, পুঁজি সবই লিমিটেড। জলপাইগুড়িকে তার মতো থাকতে দিন। শহরটা নাবালক আছে বলেই আবেগ আছে। অন্য শহরের পরিবর্তনে এখানকার মানুষের ঈর্ষা নেই, হতাশা নেই। আর রবীন্দ্রভবনের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে বলেই হয়তো সেখানে শশীকুমার নিয়োগী, গণেশচন্দ্র রায়ের মতো ব্যক্তিত্বরা নবনাট্য আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পেরেছিলেন। জল জমা, সাঁতার কাটা বড় নয়, মঞ্চে অভিনয় আর দর্শক থাকলে যুদ্ধাঙ্গনে নাটক চলতে পারে। শিলিগুড়ির মতো আইনক্স-মল নেই বলেই হয়তো শহরটা সুখে আছে। অর্থের জোগান কম আছে বলেই হয়তো এখানে দ্বন্দ্ব এক পথে হাঁটে না। সন্দীপন নন্দী, বালুরঘাট।
|
ওরা ছিল বাঁশ ঝাড়ে |
ছেলেবেলায় বাঁশবাগানগুলো দেখে ভয় মেশানো বিস্ময় অনুভব করতাম। মনে হত এই বুঝি ওখানে থেকে বেরিয়ে আসবে দু-একটা দৈত্যদানো, না হলেও দু-একটা বাঘ-সিংহ। আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া লেগেছে গ্রামগঞ্জগুলিতেও। এখন সেখানকার বাড়ি তৈরিতে বাঁশ এবং বাঁশের তৈরি জিনিসের বদলে ইট, কাঠ, পাথরের ব্যবহার বেড়েছে এবং সেই সঙ্গে কমেছে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন দৈনন্দিন জিনিসপত্রের চাহিদা। আর বাঁশের চাহিদা কমার সঙ্গে সঙ্গে বাঁশ বাগানগুলোর সংখ্যা কমে আসছে। গ্রামেগঞ্জের ওই বাঁশবাগানগুলোই ছিল বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গ, প্রজাপতি, সরীসৃপ, পাখি এবং ছোট কিছু স্তন্যপায়ীদের জায়গা। |
|
ছবি: লেখক |
শিকারি প্রাণী ও লোকচক্ষুর আড়ালে বাসাকে সুরক্ষিত রাখা যায় বলে দুধরাজ, চাকদোয়েল পাখির বাসা বানানোর বড় প্রিয় জায়গা ছিল ওই বাঁশবাগানগুলো। বাঁশবাগানগুলোতে উপস্থিত বিপুল সংখ্যক পোকামাকড়ের লোভে তুলিকা, ছাতারে, দোয়েল, দামা, মেঠোছাতারে, চুটকি, টিকরার মতো পাখিদের দিনের বেশির ভাগ সময় ওই বাঁশবাগানগুলোর আশেপাশে দেখা যেত। তাদের কাছে ওই বাঁশবাগানগুলো ছিল খাদ্যের ভাণ্ডার। আবার দলবেঁধে আসা চড়ুই, শালিখ, বুলবুলির মতো পাখিদের কাছে ওই বাঁশবাগানগুলো ছিল রাতের আশ্রয়স্থল। বাঁশবাগানগুলোর ঝোপ, শুকনো পাতা বা আলো-আঁধারি ছিল প্রজাপতিদের আত্মরক্ষার জায়গা। গ্রামবাংলার পরিচিত রাতচরা টঙ্ক পাখির ‘চউঙ্ক চউঙ্ক’ পিলে চমকানো আওয়াজ এখন আর শোনাই যায় না। দিনের বেলায় এদের প্রধান আশ্রয়স্থল বাঁশবাগানগুলো আর নেই। আর ভাম, বেজি, শেয়ালের মতো ছোট স্তন্যপায়ীরা তো বাঁশবাগানগুলোর ধ্বংসের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের পরিবেশ থেকে তাদের শেষ আশ্রয়টুকু হারাচ্ছে।
চন্দন পান্ডে, গঙ্গারামপুর।
|
কোচবিহারে ডাক পরিষেবা বেহাল |
ডাক পরিষেবা কোথায়? অর্থের বিনিময়ে সঠিক পরিষেবা পাওয়া যায় কি? বর্তমানে কম্পিউটারে কাজ হচ্ছে। গতি দ্রুতর পরিবর্তে ধীর। কোচবিহার-মালদহের দূরত্ব ৩৫০ কিমি। আমি একটি গরিব মেয়ের উচ্চ শিক্ষায় ব্যাঙচাতরা রোড ডাকঘর থেকে ১১ জুলাই মানি অর্ডার যোগে এক হাজার টাকা পাঠাই। পাঠাবার কমিশন ৫০ টাকা। অদ্যাবধি প্রাপ্তি সংবাদ পেলাম না। ডাক বিলির পিয়ন নেই। জরুরি পরিষেবার জন্য নেই সাইকেল ম্যাসেঞ্জার। ডাক ব্যবস্থার এ হাল অতীব দুখের। এর প্রতিকার কি?
দেবেশচন্দ্র ভট্টাচার্য, কোচবিহার।
|
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ
নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে।
উত্তরের চিঠি
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি-৭৩৪৪০১ |
|
|
|
|
|
|