বাড়িতে ঢুকে এক বিধবাকে গণধর্ষণের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনাটি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২ ব্লকের বড়রা পঞ্চায়েত এলাকার। জেলা পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “ওই মহিলার অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন জনকে ধরা হয়েছে। এক জন পলাতক। মহিলার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত চার জনই তৃণমূল কর্মী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। সম্প্রতি তাঁরা দলে যোগ দিয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর দাবি, “অভিযুক্তরা স্বঘোষিত তৃণমূল কর্মী। ওদের সাথে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ নিজের কাজ করেছে। আইন নিজের পথেই চলবে।” আবার তৃণমূলের বড়রা অঞ্চল সভাপতি গৌতম সরকারের বক্তব্য, “অভিযুক্তেরা সিপিএম ছেড়ে আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। সেই আক্রোশেই সিপিএম ওঁদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়েছে।” সিপিএম অভিযোগ অস্বীকার করেছে। নিজেদের তৃণমূল কর্মী জানিয়ে রবিবার রঘুনাথপুর আদালত চত্বরে ধৃতেরাও দাবি করেন, তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর পঁয়তাল্লিশের ওই মহিলা তাঁর দাদা ও মায়ের সঙ্গে থাকেন বড়রা পঞ্চায়েতের একটি গ্রামে। পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ওই মহিলা জানান, শনিবার সন্ধ্যায় বৃষ্টির সময়ে বাড়িতে তিনি ও তাঁর মা ছিলেন। সেই সময়ে স্থানীয় বড়গড়িয়া গ্রামের শ্যামলাল মুদি, মাঝি মুদি, নাড়ু মুদি ও মনা ধীবর বাড়িতে ঢুকে তাঁকে খাটের সঙ্গে বেঁধে ধর্ষণ করে। বাধা দেওয়ায় তাঁকে ও তাঁর মাকে মারধরও করে ওই চার জন। মা-মেয়ে প্রাণপণ চিৎকার করলে তারা পালায়। শনিবার রাতেই ওই মহিলা রঘুনাথপুর থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মনা ধীবর পলাতক। ধৃত তিন জনকে এ দিন রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল-হাজতের নির্দেশ দেন।
এ দিন রঘুনাথপুর থানায় বসে ওই মহিলা বলেন, “চার বছর আগে আমার স্বামী মারা যান। আগেও ওই চার জন আমাকে বহুবার কুপ্রস্তাব দিয়েছে। শনিবার রাতে দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে ওরা আমারই শাড়ি দিয়ে আমাকে বেঁধে শারীরিক অত্যাচার চালায়।” এ দিন রঘুনাথপুরে ঘটনার তদন্তে যান পুরুলিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অবধেশ পাঠক। প্রাথমিক তদন্তে ওই মহিলাকে বেঁধে রাখার প্রমাণ মিলেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই পরিবারটির আরও অভিযোগ, পুলিশের কাছে যাওয়ায় এ দিন সকালে অভিযুক্তদের পরিবারের লোকেরা তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। |