ঝাড়গ্রাম নিয়ে তদন্ত কমিটি
শুধু শিক্ষক নন, ছাত্রেরাও হেনস্থা হচ্ছেন, মত ব্রাত্যর
ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে অধ্যক্ষকে ‘মারধরের’ তদন্তে কমিটি গড়ছে সরকার। রবিবার তারাপীঠে এ কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
মন্ত্রী বলেন, “ঝাড়গ্রাম কলেজে কিছু দিন ধরেই সমস্যা চলছে। অধ্যক্ষের মত শুনেছি। তাঁর সঙ্গে আরও কথা বলব। ছাত্রদের মতও শুনেছি। রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তাকে বলেছি, ছোট একটা তদন্ত কমিটি গড়ে রিপোর্ট জমা দিতে।”
চলতি বছরের গোড়া থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন কলেজে প্রায় নিয়মিত ব্যবধানে ‘অধ্যক্ষ-লাঞ্ছনা’ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। কিছু ক্ষেত্রে কাঠগড়ায় ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কেবল শিক্ষকেরাই হেনস্থা হচ্ছেন, তা নয়। ছাত্র-হেনস্থার ঘটনাও ঘটছে। ব্যান্ডেলেরই একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে। ছাত্রদের একতরফা দোষ দিলে ঠিক হবে না। সামাজিক অসহিষ্ণুতাও কাজ করছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে। অধ্যক্ষদের যেমন নিরাপত্তা দেওয়া দরকার, ছাত্রদেরও নিরাপত্তা দরকার।”
গোলমাল এড়াতে কি ছাত্রভোটের প্রক্রিয়া বাতিল করা উচিত? শিক্ষামন্ত্রীর জবাব, “ছাত্র নির্বাচন বাতিল করা এর সমাধান নয়। বরং ২-৩ বছর অন্তর ভোট হলে বা বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে নির্বাচন প্রক্রিয়া নির্বাচন কমিশনের আওতায় আনতে পারলে ভাল হবে।” শনিবার রাজ কলেজ চত্বরেই অধ্যক্ষ কিশোরকুমার রাঢ়ীকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সহ-সভাপতি সৌমেন আচার্যর বিরুদ্ধে। ছাত্রভোট নিয়েই গোলমাল। জঙ্গলমহলে ‘অস্থিরতা’র জেরে ২০০৭-এর পর থেকে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে নির্বাচন হয়নি। গত বছর নির্বাচন প্রক্রিয়া চলাকালীন ‘আক্রান্ত’ হওয়ার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় এসএফআই। হাইকোর্ট নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দেয়।
সম্প্রতি বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুজোর আগে বিভিন্ন কলেজে (যে সব কলেজে স্থগিতাদেশ নেই) ছাত্রভোট করার নির্দেশ দেন। রাজ কলেজের অধ্যক্ষর দাবি, ওই নির্দেশের কথা জেনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ অগ্রাহ্য করে তাঁকে ছাত্রভোট করার জন্য সর্বদল বৈঠক ডাকতে চাপ দিচ্ছিল কিছু ছাত্র। শনিবার ওই বৈঠক ডাকেন অধ্যক্ষ। তিনি ‘মার খাওয়ার’ পরেও টিএমসিপি দাবি করে, শনিবারই ওই বৈঠক করতে হবে। হাসপাতাল থেকে ফিরে বৈঠকে বসেন অধ্যক্ষ। স্থির হয়, ১৩ অক্টোবর ছাত্র সংসদের ভোট হবে। ‘তড়িঘড়ি করা’ ওই বৈঠকের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে একাধিক ছাত্র সংগঠন। অধ্যক্ষের উপরে ‘হামলা’র প্রতিবাদে আজ, সোমবার জেলায় প্রতিবাদ দিবস পালনের ডাক দিয়েছে এসএফআই। সংগঠনের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সৌমেন মাহাতোর দাবি, “ভোট নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। তার মধ্যেই টিএমসিপি-র চাপেই কলেজ কর্তৃপক্ষ বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয়েছেন। ওই বৈঠক অবৈধ।” ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি মহম্মদ সইফুল বলেন, “বৈঠকে শুধু টিএমসিপিই ছিল। এ ভাবে একতরফা বৈঠক হতে পারে না।” যদিও টিএমসিপি-র জেলা চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ গিরির বক্তব্য, “আমরা ওই কলেজে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ তা নিয়ে বৈঠক ডাকেন। এতে অবৈধ কী আছে?”
অধ্যক্ষ এ দিনও বলেন, “চাপের মুখে বৈঠক করে ভোটের দিন ঘোষণা করেছি। সরকার বা আদালত যদি নতুন নির্দেশ দেয়, সেই মতো পদক্ষেপ করব।” তাঁর সংযোজন, “কলেজেরই এক ছাত্রের হাতে যে ভাবে হেনস্থা হয়েছি, তাতে আমি অত্যন্ত অসম্মানিত। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জানাব, শিক্ষাঙ্গনে কী চলছে!” এ দিনও সৌমেনকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পাল্টা মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন সৌমেন। সে ব্যাপারেও মামলা শুরু হয়নি। ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ এ দিনও মন্তব্য করেননি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.