মমতা নেই, দ্রুত জমি বিল আনতে চায় দিল্লি
মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতেই এত দিন ধরে আটকে ছিল জমি অধিগ্রহণ বিল। এ বার সংস্কারের যাবতীয় কর্মসূচির সঙ্গে এই বিলটি নিয়েও এগোতে চাইছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ আজ এ কথা স্পষ্ট করে দিয়ে জানিয়েছেন, শুধু সংস্কার এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই নয়, তার সুফল যাতে সামাজিক কর্মসূচিতে ব্যবহার করা যায়, সে জন্য খাদ্য সুরক্ষা বিলটিও আনতে চলেছেন তাঁরা।
অর্থাৎ, গতি লাগছে রথের চাকায়। তিন বছর পরে।
তিন বছর ধরে মূলত এক জনের জন্যই যে আটকে ছিল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি, তা নিয়ে এর মধ্যেই ফলাও করে প্রচার শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। এর আগে বিদেশ সফরে গেলে সংস্কার সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বহুবার জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতার কথা বলেছিলেন। কারও নাম না নিয়ে সামগ্রিক ভাবে বলেছিলেন, শরিকদের চাপে আটকে যাচ্ছে কাজ। তৃণমূলের সঙ্গে জোট ভেঙে যাওয়ার পরে এখন সেই কথাটাই খুল্লমখুল্লা বলতে শুরু করেছেন সলমন খুরশিদ-গুলাম নবি আজাদের মতো সরকারের প্রথম সারির মন্ত্রীরা। যে আক্রমণে নিশানা এক জনই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
যে বিষয়গুলি নিয়ে মমতা এত দিন সব থেকে বেশি বেগ দিয়েছেন কেন্দ্রকে, তার অন্যতম জমি বিল। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তাই তখতে বসার সময় থেকেই মমতার ঘোষিত অবস্থান, বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করবে না সরকার। অথচ অধিগ্রহণ না করলে শিল্পের জন্য একলপ্তে অনেকটা জমি পাওয়া রাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশেও বেশ কষ্টকর কাজ। এ কথা বলেছেন জমি বিশেষজ্ঞরা এবং শিল্পমহল। মমতাকে বোঝাতে জয়রাম রমেশের মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা একাধিক বার কলকাতায় গিয়ে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তাতেও বিলটি সংসদে পেশ করা সম্ভব হয়নি।
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে ভাট্টা-পারসল নিয়ে যখন রাজনীতি উত্তপ্ত, তখন রাহুল গাঁধী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, শীঘ্রই বিলটি সংসদে আনা হবে। তার পরে মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও জমি বিল সেই তিমিরেই।
সলমন খুরশিদ আজ বলেছেন, “আমরা তো এ বার জমি বিলও আনব। উনি (মমতা) কি এখন আর এই বিলের বিরোধিতা করতে পারবেন?” এই বিলে অন্যদের সমর্থন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। বলেছেন, “সমাজবাদী পার্টি-সহ সব শরিকের সমর্থন পাব। সুতরাং সংসদে সংখ্যা নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই।” একই দিনে আর এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ বলেছেন, “যদি মমতার মতো নেতারা এত দিন ধরে চাপ না দিতেন, তা হলে সংস্কার সংক্রান্ত পদক্ষেপ বহু আগেই নেওয়া সম্ভব হত।”
কংগ্রেসের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা বলছিলেন, সংস্কারের পথে পা ফেলার পরে সরকারের কৌশল এখন স্পষ্ট। এত দিন ধরে মমতার বাধায় যে কাজগুলি তারা করতে পারছিল না, সেই সব ক্ষেত্রেই তৃণমূল নেত্রীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে যেমন সংস্কার সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলি আছে, তেমনই আছে জমি বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি।
দিল্লির কৌশলের আরও একটি দিকও রয়েছে। মনমোহন সিংহের সংস্কারের মাধ্যমে সরকার যখন খরচ কমাবে এবং রোজগারও বাড়াবে, তখন কোষাগার কিছুটা মজবুত হলে নজর দেওয়া হবে সনিয়া গাঁধীর সামাজিক প্রকল্পগুলির দিকে। ইউপিএ-১ এর সময়ে একশো দিনের কাজ ছিল নজরকাড়া প্রকল্প। এ বার তেমনই দেশের অধিকাংশ মানুষের জন্য খাদ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে চাইছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। সলমন খুরশিদ এ দিন বলেছেন, “খাদ্য সুরক্ষা নিয়ে খসড়া বিলটি চূড়ান্ত করছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে গরিবদের আর না খেয়ে থাকতে হবে না। কেউ পেটে খিদে নিয়ে ঘুমোতে যাবে না। এই বিলের আওতায় আসবেন ৭০ ভাগ ভারতীয়।” এর পরেই তাঁর হুঙ্কার, “আমরা দেখতে চাই, কোন দল এই বিলের বিরোধিতা করে!”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.