ক’দিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছিল সিকিমে। তারই জেরে শুক্রবার রাতে হড়পা বানে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন হয়ে পড়েছে উত্তর সিকিমের চুংথাং-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার। সরকারি সূত্রের খবর, ভেসে গিয়েছেন শতাধিক বাসিন্দা। শনিবার বিকেল পর্যন্ত চারটি দেহ উদ্ধার হয়েছে। বাকিরা নিরুদ্দেশ। নিখোঁজদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইন্দো-টিবেট বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) জওয়ানও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, চুংথাং এলাকায় দু’টি ঝোরা ও লাচেন নদী ফুলেফেঁপে লাগোয়া দু’টি শহর প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গিয়েছে চুংথাংয়ের একটি পুলিশ ফাঁড়ি। এরই মাঝে কয়েকটি এলাকায় ধসও নামে। ফলে, উদ্ধারের কাজে বিঘ্ন ঘটেছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। শনিবার দুপুরে সিকিমের মুখ্য সচিব কর্মা গ্যাৎসা বলেন, “পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। উদ্ধার কাজ চলছে।”
সিকিমের রাজধানী গ্যাংটক থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে প্রায় ৬ হাজার ফুট উচ্চতায় চুংথাং। আগেও বেশ কয়েকবার ওই এলাকায় হড়পা বান নেমেছে। প্রতি বার লাচেন নদীই ছিল হড়পা বানের উৎস। শুক্রবার ওই বানের তোড়ে চুংথাং শহরের সড়ক যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। ধস নামায় চুংথাঙের সঙ্গে উত্তর সিকিমের জেলা সদর মঙ্গনের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উত্তর সিকিমের এসপি ভীমকুমার তামাং বলেন, “৪টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন মহিলা, একটি শিশু। চুংথাং বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।” রাজ্য থেকে ১০ জনের একটি পর্বতারোহী দল হড়পা বান প্লাবিত উত্তর সিকিমে রয়েছে। তবে এখনও তাঁদের অবস্থান স্পষ্ট নয়। শিলিগুড়ির নেচার অ্যান্ড হিমালয়ান ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসু জানান, সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কলকাতা থেকে ১০ জনের ওই পর্বতারোহী দলটি অভিযান শুরু করে। এখন তাঁদের উত্তর সিকিমের জংসং শিখরে থাকার কথা। অনিমেষ ভরসা দেন, “তাঁরা অনেক উঁচুতে রয়েছেন। সেখানে প্লাবনের সম্ভাবনা নেই। ফলে বড় সমস্যা হওয়ার কথা নয়।” |