দুপুর থেকেই মেঘলা ছিল আকাশ। খেলার ফাঁকেই ঝেঁপে নেমেছিল বৃষ্টি। শনিবার বিকেলে রঘুনাথগঞ্জের দফরপুরে মাঠের পাশেই গাছতলায় তাই ঠাঁই নিয়েছিল সদ্য-কিশোর খেলুড়েরা। আচমকা সেই গাছেই বাজ পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেল চার কিশোর। পরে হাসপাতালে মারা যায় আরও এক জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে আরও ৯ জনকে।
মসজিদপাড়ার মাঠে খেলা দেখতে এ দিন ভিড় করেছিলেন গ্রামের কয়েক জন প্রৌঢ়ও। বৃষ্টির ছাঁট থেকে বাঁচতে তাঁরাও ভিড় করেছিলেন ওই গাছতলাতেই। কেউ বা ছুটে ছিলেন লাগোয়া স্কুলের বারান্দায়। তাঁদেরই এক জন, তাজামুল শেখ বলেন, “বৃষ্টির সঙ্গেই শুরু হল বজ্রপাত। |
ক্রমাগত বাজ পড়ছিল। মাঠে আর বল দেখা যাচ্ছিল না বলে বাচ্চাগুলো এক সময়ে খেলা বন্ধ করে ওই গাছতলাতেই ছুটে এল। আমি ছুটে গিয়েছিলাম পাশের স্কুলের বারান্দায়। মিনিট কয়েক পরে শুনি প্রবল শব্দ আর তীব্র আলোর ঝলকানি। চোখ খুলে দেখি, চার দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ওই ছেলেগুলো।” তাজামুলের আক্ষেপ যাচ্ছে না, “ছেলেগুলো গাছতলায় না গিয়ে স্কুলের ওই বারান্দায় এসে দাঁড়ালেই তো পারত।”
বৃষ্টি থামেনি। থেকে থেকেই বাজ পড়ছিল। স্থানীয় গ্রামবাসী তার মধ্যেই উদ্ধারে নামেন। সরিফুদ্দিন শেখ বলেন, “আমরা ওর মধ্যেই ভ্যান রিকশা এনে সকলকে নিয়ে মাইল তিনেক দূরে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ছুটি। গাড়িতেই অবশ্য আবদুল্লা শেখ (১২), সোহেল খান (১২), মোবারেক শেখ (১৫) এবং জসিমউদ্দিন শেখ (১৬) মারা যায়।” হাসপাতালে পৌঁছনর কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায় বছর চব্বিশের রবিউল শেখ। জানা গিয়েছে মৃতেরা সকলেই দফরপুর গ্রামের আশপাশের এলাকার বাসিন্দা। এক মাত্র আবদুল্লা রবিউলের শ্যালক। দিন কয়েক আগে সে দফরপুরে জামাইবাবুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। এ দিন সে জামাইবাবুর সঙ্গে মাঠে গিয়েছিল খেলা দেখতে।
হাসপাতালের সুপার শাশ্বত মণ্ডল বলেন, “আহত ৯ জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। বাকিদের অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।” |