|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৪... |
|
উদ্যোগ যেন বহতা হয় |
বইপোকা |
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বজ্রে তোমার বাজে বাঁশি সে কি সহজ গান’ একদা হিন্দিতে এই প্রকারে অনূদিত হইয়াছিল: ব্রজ মে তেরে বাজে বাঁশরি...। বাঁশি নামক সঙ্গীতযন্ত্রটি যে ব্রজের বাহিরে কী প্রকারে বাজিতে পারে, তাহাও কড়কড় বাজের সহিত, তাহা নিশ্চয় অনুবাদকের চিন্তার অতীত হইয়া উঠিয়াছিল অনুবাদকালে। নহিলে এমন বিপত্তি আর ঘটিবে কী করিয়া? এই প্রকারে ভাবিলে বিষয়টি নিখাদ মজার। অনুবাদ লইয়া এমন দুশো মজা অহরহ ঘটিয়া চলিয়াছে। কিন্তু ভাবা যদি প্র্যাকটিস করি, তবে বিষয়টিকে এত সহজে ছাড়িয়া দিলে চলে না। কিঞ্চিৎ গভীরে প্রবেশ করিলে দেখিব, ‘ভারতীয় সাহিত্য’ বলিয়া যে একটি তাত্ত্বিক ধারণা আমাদিগের মস্তিষ্কে নিছক কথার কথা হইয়াই রহিয়া গিয়াছে এই অনুবাদ তাহার এক বিষময় ফল। ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে কোথাও একটি যুক্তিপূর্ণ ধারাবাহিক আদানপ্রদানের পরিবেশই গড়িয়া উঠে নাই। ফলে এক ভাষার ধারণা, সেই ভাষার শব্দ যাহা প্রকাশ করে, তাহা আর এক ভাষায় প্রকাশের উপযুক্ত শব্দটি অনুবাদের সময় অনেক ক্ষেত্রে খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। আশার কথা, সেই অভাব পূরণ করিতে উদ্যোগী হইয়াছে সাহিত্য অকাদেমি। অতি সম্প্রতি অকাদেমি হইতে প্রকাশিত হইয়াছে বাংলা-সাঁওতালি ও বাংলা-মৈথিলী অভিধান। অকাদেমির আঞ্চলিক সচিব বাবু অংশুমান কর মহাশয় জানাইয়াছেন অচিরেই প্রকাশিত হইবে আরও কতিপয়। উদ্যোগ সাধু, তবে লক্ষ রাখিতে হইবে, অভিধান যেন ছাপিয়া গোলায় তুলিয়া রাখিবার দ্রব্য না-হইয়া পড়ে। ভাষার প্রাণ যে বহতা ধারা অভিধান যেন সেই ধারা-বাহিক হইতে পারে। |
|
|
|
|
|