রাজ্যে বেআইনি মদ বিক্রি রুখতে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগে অবৈধ ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগ প্রমাণিত হলে এক বছর পর্যন্ত জেলের ব্যবস্থা ছিল। নতুন ব্যবস্থায় এই অপরাধে কারাদণ্ডের মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত হতে পারে। সেই জন্য ইতিমধ্যেই আবগারি আইন সংশোধন করা হয়েছে বলে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টকে জানাল রাজ্য সরকার। হাইকোর্ট অবশ্য ফের জানিয়ে দিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংগ্রামপুরে বিষাক্ত চোলাই মদ খেয়ে মৃতদের পরিবারকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দু’লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এখনই দেওয়া যাবে না।
২০১১ সালের ডিসেম্বরে সংগ্রামপুরে বিষমদ খেয়ে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। তা নিয়ে তোলপাড়ের পরে মৃতদের পরিবারপিছু দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে রাজ্যের নতুন সরকার। ক্ষতিপূরণের সেই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে তিনটি জনস্বার্থের মামলা হয়। সেই সব মামলার সূত্রেই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, জেলাশাসকের কাছে ক্ষতিপূরণের টাকা পৌঁছে গেলেও তা বিলি করা থেকে আপাতত বিরত থাকতে হবে।
অন্যতম আবেদনকারিণী বাসবী রায়চৌধুরীর আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের টাকা দিলেই বেআইনি মদ বিক্রির সমস্যা শেষ হয়ে যাবে না। সংগ্রামপুরের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পরেও রাজ্যে চোলাই মদের ব্যবসা বন্ধ করা যায়নি। আবগারি দফতর এবং পুলিশের যোগসাজশেই এই ব্যবসা চলে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর মন্তব্য, আবগারি আইনের ৪৬ ধারা সংশোধন না-করলে কোনও মতেই চোলাই মদের বেআইনি ব্যবসা বন্ধ হবে না।
সুব্রতবাবুর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র জানান, রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই আবগারি আইনের ৪৬ ধারা সংশোধন করেছে। আগে ওই ধারায় দোষী ব্যক্তির এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের ব্যবস্থা ছিল। আইন সংশোধন করে কারাবাসের সর্বাধিক মেয়াদ সাত বছর করা হয়েছে। অনিন্দ্যবাবু জানান, সংগ্রামপুরের বিষমদ কাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ ইতিমধ্যে চার্জশিটও দিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই বিচার শুরু হবে।
অন্য একটি মামলার আবেদনকারী চিত্তরঞ্জন পাণ্ডার আর্জি ছিল, বিষাক্ত চোলাই খেয়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে যেন নগদ টাকা দেওয়া না-হয়। এ দিন চিত্তরঞ্জনবাবু তাঁর বক্তব্য জানানোর জন্য সময় চেয়ে আবেদন জানান। ২৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। সংগ্রামপুর কাণ্ডে মৃতদের পোষ্যের সঙ্গে সঙ্গে বিষমদ খেয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকেও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন সুব্রতবাবু। ওই ধরনের ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা কত, আগামী শুক্রবার রাজ্য সরকার তা হাইকোর্টে জানাবে। |