‘ধুর, পাক ক্রিকেটারদের দু’সপ্তাহ
মেয়েদের থেকে সরিয়ে রাখা যায় নাকি’
ক্তা চির-বিতর্কিত বীণা মালিক। প্রসঙ্গ: পাক টিমের উদ্দেশ্যে তাদের ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে পাঠানো আইসিসি-র নতুন বার্তা। টুর্নামেন্টে মহিলা সংসর্গ থেকে দূরে থাকো। বুকিরা তোমাদের আকৃষ্ট করার জন্য মধুচক্রের ফাঁদ পাতবে। তাতে পা দিও না। ফিনল্যান্ডে সাত দিন কাটিয়ে ভায়া মুম্বই এখন নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন বীণা। এক চ্যানেলে ক্রিকেট বিশ্বকাপের হোস্ট করার জন্য তিনি ভারতের রাজধানীতে। সেখান থেকেই আনন্দবাজারকে ফোনে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন। বললেন, বিশ্বকাপে পাক ম্যানেজার হলে তিনি ছেলেদের কী ভাবে সামলাতেন...


জোশ রখখো
প্রথমেই আমার স্পিচে টিমকে লক্ষ করে এটা বলতাম। স্পিচ তো ঠিক নয়। ওই মিটিং। যা হোক সেখানে শুরুতেই বলতে হত। গত ক’দিন একটা ফ্লাইট থেকে আর এক ফ্লাইটে মূর্তিমান তাড়াহুড়োর মধ্যেও আমি ইন্ডিয়া-পাক প্র্যাক্টিস ম্যাচটা টিভিতে দেখেছি। দেখে মনে হয়েছে পাকিস্তান টিমে অবশেষে বোধহয় রাজনীতি বন্ধ হয়েছে। একটা ঐক্যবদ্ধ ড্রেসিংরুম টিভিতে লাগল। ডাগ আউটের ছবি যখন ক্যামেরা ক্লোজ আপে ধরছিল, তখন মনে হচ্ছিল, যাক এদের মধ্যে ভাবটাব আছে। এটাই ভাল। পাকিস্তান জোশ নিয়ে খেললে, দলীয় ঐক্য ধরে রাখলে অপ্রতিরোধ্য। আমি ছেলেদের বলতাম, সবাই বলছে তোমরা টুর্নামেন্টে ডার্ক হর্স। আমার তো মনে হচ্ছে জোশ বজায় রাখলে তোমরা চ্যাম্পিয়নও হতে পারো। এ বার কোনটা বাছতে চাও, নিজেরাই বেছে নাও।

আফ্রিদি ফ্যাক্টর
শাহিদ আফ্রিদিকে যে আমি খুব ভাল ভাবে চিনি এমন নয়। মহম্মদ আসিফ যখন আমার বয়ফ্রেন্ড ছিল, তখন ওর মুখে আফ্রিদির কথাটথা শুনতাম। হাঃ হাঃ! সেগুলো ঠিক কাগজে বলার মতো নয়। আফ্রিদি যে ঠিক ক্যাপ্টেন মেটিরিয়াল নয় সেটা ও নিজেই বারবার প্রমাণ করেছে। এই ছেড়ে দিচ্ছে... এই খেলায় ফিরে আসছে। কাপ্তানি তো বাচ্চোকা খেল নেহি হ্যায়। এ কি হয় নাকি যে তুমি আজ থাকছ, কাল ছেড়ে দিচ্ছ। তবু আফ্রিদিকে আমি উদ্বুদ্ধ করতাম এ জন্য যে বিপক্ষ আজও ওকে ভয় পায়। আফ্রিদি মাঠে নামলে দেখবেন মুহূর্তে হাততালি-চিৎকার চেঁচামেচিতে মাঠের আবহাওয়াই কেমন বদলে যায়। আমি আফ্রিদিকে বলতাম, দ্যাখো কত লোকের তোমার ওপর কত আশা। এর প্রতিদান দিতে হবে তোমাকেই। আর বলতাম, পরের কোনও বিগ বস-এ আমায় ডাকলে শাহিদ আমি তোমাকে সঙ্গে নিয়ে যাবো। তোমার যা চেহারা-চালচলন-তাকাবার ভঙ্গি, বিগ বস হাউসে তুমি ঢুকলে জাস্ট ফেটে যাবে।

হাফিজ কা কামাল
মহম্মদ হাফিজকে আমি খোলাখুলি বলতাম, তোমাকে আমার ক্যাপ্টেন হিসেবে খুব পছন্দ। ওর বডি ল্যাঙ্গোয়েজ, হাঁটাচলা সব কিছুর মধ্যে একটা দৃঢ়তার ভাব আছে। টিমে এক্স ক্যাপ্টেন তো আরও আছে। শোয়েব মালিক রয়েছে, বহুত কমজোর কাপ্তান হুয়া করতা থা। ক্যাপ্টেন্সি করতে গেলে গেলে সখী মার্কা হলে চলবে না। এক সাংবাদিক আমায় জিজ্ঞেস করছিল, হাফিজ কি খুব শরিফ? মানে শরিফ বলতে যা বোঝায় আর কী। আমি প্রথমে একচোট হাসলাম। তারপর বললাম, শুনুন ভাই ও রকম শরিফ লোক আমি চাই না। ছোট ছোট বদমায়েশি না থাকলে (খিলখিল হাসি) সে দল চালাবে কী করে?

মধুচক্রের ফাঁদ সামলানো
আইসিসি কী বলছে? টানা দু’সপ্তাহ পাকিস্তান ক্রিকেটারদের মহিলাদের থেকে দূরে থাকতে হবে! হল না। জাস্ট হল না। এই সব মরদরা সুন্দরীদের ফোন আর নানান সূত্রের লোভনীয় সব ভাব উপেক্ষা করে গম্ভীর মুখে হোটেল রুমে বসে থাকবে, এ কি বাস্তব নাকি? মধুচক্র মানেটা কী! ক্রিকেটাররা কেউ তো আর বাচ্চা নয় যে রোজ তাদের ন্যাপি বদলাতে হয়। এদের প্রেমকাহিনি সম্পর্কে আমার যে খুব ফার্স্ট-হ্যান্ড অভিজ্ঞতা আছে এমন নয়। আসলে ক্রিকেটারদের যে সব খুলে-আম পার্টিফার্টি হত সেই রসের জগতে আসিফ কখনও আমাকে নিয়ে যায়নি। আমাকে বাড়িতে রেখে যেত। বলত, তুমি হচ্ছো হোম-মেকার। ফিরে এসে অবশ্য কী দেখল, গল্পটল্প করত। যা বলত তার কিছুটাও যদি সত্যি হয়, এই মধুচক্রটক্র কী ভাবে সামলাতে হবে তাতে ওরা এক-একজন ওস্তাদ। আমার মনে হয় না কারও কোনও পরামর্শের দরকার আছে বলে। সবচেয়ে বড় কথা, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা যদি দু’জনেই স্বেচ্ছায় যৌনসংসর্গ করে, কার কী বলার থাকতে পারে। দেখতে হবে কোথাও যেন কেউ ফাঁসিয়ে না দেয়। আমাদের আম্পায়ার আসাদ রউফের বেলায় যেটা হল। আমার এখানে পরামর্শ হবে তোমরা নিজেরা বিচক্ষণ হতে চেষ্টা করো যে, কোন মধুতে ফাঁদ পাতা থাকতে পারে। কোনটাতে প্রবলেম নেই। আমি ম্যানেজার হলে এই বাস্তবের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতাম যে, সুন্দরী এবং আবেদনসম্পন্নারা ছিল। আছে। থাকবে।

বুকি ট্র্যাপের মোকাবিলা
টিম ম্যানেজার হলে এটাই আমার কঠিনতম চ্যালেঞ্জ হত। কেননা টাকার চেয়ে বড় সৌন্দর্য সুন্দরী মহিলারও নেই। আমি চেষ্টা করতাম প্লেয়ারদের গাইড করতে। বোঝাতাম বিশ্বকাপ কী বিশাল মঞ্চ তোমাদের জন্য। যেখানে সম্পূর্ণ আনুগত্য কেবল একটা ব্যাপারকেই উপভোগ করতে দিওতোমার ক্রিকেট! আমি আসিফের বেলা দেখেছি নিজের ভেতর থেকে সততা না তৈরি হলে কিছুতেই শুধু বাইরে বলে বলে এটা হয় না। হাততালি দিতে যেমন দুটো হাত লাগে, তেমনই বুকিদের সম্পূর্ণ উৎখাত করতে হলেও টিম ম্যানেজমেন্ট-টিম প্লেয়ার দু’পক্ষের পূর্ণ সহযোগিতা দরকার। আমি প্লেয়ারদের বলতাম পাকিস্তান ক্রিকেটের সাম্প্রতিক বদনামগুলো তো নিশ্চয়ই জানো। সেই তালিকা কি আরও বাড়াতে চাও? মহম্মদ আমের হতে চাও? নাকি প্রশংসা পেতে চাও? আমি কিন্তু কোনও বেচাল বরদাস্ত করব না। কোনও এক্সকিউজও না। আমি টিম ম্যানেজার মানে বুকি সংক্রান্ত একবার যদি ঝুটঝামেলা দেখি, গোটা জীবনের জন্য গেলে। যদি ম্যানেজার হিসেবে আমার টিপস চাও তো বলব, সন্দেহজনক টাইপ, খুব শো-অফ করছে, এই প্রকৃতিকে এড়িয়ে চলো।

আমার বিশ্বাস, এই পাঁচটা টোটকায় টিমকে দাঁড় করিয়ে দিতাম (হাসি)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.