ধর্মঘটের পথের শেষে আজও ভোগাবে বনধ
বিশ্বকর্মা পুজোর দিনটা ভালই কেটেছিল বাসকর্মীদের। বছর ঘুরে এমন একটা দিনে কার্যত পড়ে পাওয়া ‘ছুটি’, সৌজন্যে সোমবার থেকে শুরু হওয়া বাস ধর্মঘট। চার দিনের মাথায় আজ, বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টার বনধ ে সেই কর্মহীনতাই কার্যত চুড়ো ছুঁতে চলেছে। ষোলকলা পূর্ণ হতে চলেছে আমজনতার ভোগান্তির।
রাজনীতি বনাম অর্থনীতির দড়ি টানাটানিতে কী হাল হয়েছে পথ চলতে চাওয়া মানুষের, মঙ্গলবার পেরিয়ে বুধবারেও তা স্পষ্ট চোখে পড়েছে। যদিও সন্ধ্যায় সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য নিরুপম সেন দুর্গাপুরে দাবি করেন, শুক্রবারের সাধারণ ধর্মঘট সফল হবে। তাঁর মতে, “সরকারের জনবিরোধী নীতির চাপে হাসফাঁস করছেন সাধারণ মানুষ। স্বতস্ফুর্তভাবেই তাঁরা সাধারণ ধর্মঘটের স্বপক্ষে সাড়া দেবেন।”
দুর্গাপুর তো বটেই, আসানসোলের খনি এলাকাতেও ব্যাহত হয়েছে জনজীবন। বড় বাস না চলায় রাস্তায় বেরিয়ে নাকাল হতে হয়েছে শয়ে শয়ে যাত্রীকে। দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডে ট্রেকার, ম্যাটাডরে করে যাতায়াত করেছেন তাঁরা। চড়া ভাড়া দিয়ে অটোয় যাতায়াতও করতে হয়েছে অনেককে। তবে মিনিবাস চলাচল করায় ট্রেন থেকে নামা যাত্রীদের দুর্গাপুর শহরের ভিতরে পৌঁছতে বা ট্রেন ধরতে স্টেশনে যেতে বেগ পেতে হয়নি যাত্রীদের। কলকাতাগামী বাস চলাচলও প্রায় স্বাভাবিক ছিল। মূলত সরকারি পরিবহণ সংস্থার বাসই এই রুটে চলে।
আজ বনধের দিনেও এই বড় বাসের পরিষেবা স্বাভাবিক থাকবে বলে দাবি করেছেন আইএনটিইউসি নেতা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি তথা দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ (পূর্ত) প্রভাত চট্টোপাধ্যায় জানান, বনধ যাতে ব্যর্থ হয় তার জন্য প্রয়োজনে তাঁরা রাস্তায় নামবেন।
পক্ষে-বিপক্ষে...
আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।
তিনি বলেন, “মানুষ যাতে কোনও ভাবেই দুর্ভোগে না পড়েন তা দেখতে হবে। কল-কারখানাতেও কর্মীরা যাতে স্বাভাবিক ভাবে কাজে যোগ দিতে পারেন, সে দিকে লক্ষ্য রাখা হবে।” তবে যাত্রিবাহী যান চলাচলে যথেষ্ট প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে আসানসোলে। তবে প্রশাসন বাস চালাতে ইচ্ছুক মালিক ও শ্রমিক-কর্মীদের সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। পর্যাপ্ত বাস চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আইএনটিটিইউসি-র পরিবহণ কর্মী সংগঠনও।
গত তিন দিন ধরে বাস ধর্মঘটের জেরে যা ভোগান্তি হয়েছে, তাতে অবশ্য আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারা বিশেষ আশা দেখছেন না। এ ক’দিন মিনিবাস রাস্তায় দেখা গেলেও বড় বাস প্রায় চোখেই পড়েনি। তবু যাঁদের রাস্তায় বেরোতেই হয়েছে, অফিস-কাছারিতে হাজিরা দিতে হয়েছে, সেই সাধারণ যাত্রীরা বাদুড়ঝোলা অবস্থায় যাতায়াত করতে বাধ্য হয়েছেন। রাজ্য সরকারি কর্মচারী সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই দু’দিন তো ঝুলতে ঝুলতে যাতায়াত করেছি। ভাবছি বৃহস্পতিবার কী করব!”
আশঙ্কার কারণও আছে। রাজ্য সরকার জানিয়ে দিয়েছে, বনধের দিন সরকারি কর্মী এমনকী স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অফিস ও স্কুলে যেতেই হবে। কিন্তু কী ভাবে, সেই উত্তরই অনেকের জানা নেই। সরকারি কর্মী প্রবীর চৌধুরীর কথায়, “দু’দিন তো যেমন-তেমন করে অফিস গিয়েছি। বৃহস্পতিবার যদি বাস না চলে তা হলে কী হবে?” প্রশাসনের তরফে অবশ্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, বাস চালাতে ইচ্ছুক মালিক ও শ্রমিকেরা যেন কোনও ভাবেই রাস্তায় বাধা না পায় তা নিশ্চিত করা হবে। রাস্তায় পিকেটিং আটকানো হবে কঠোর ভাবে। আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত মোটর ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়ার দাবি, শহরের সব রুটে পর্যাপ্ত বাস ও মিনিবাস চালাবেন তাঁদের সমর্থক কর্মীরা। এক দিন এই দল, তো অন্য দিন ওই দল। কখনও ‘নির্দল’ ব্যবসায়ীরা। সকলেই যদি পথ আটকায়, জনতার দিন আর চলে কী করে?



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.