আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশে ন্যাটো বাহিনীর সব চেয়ে বড় ঘাঁটিতে হামলা চালাল তালিবান। ওই ঘাঁটিতেই মোতায়েন আছেন ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারি। তবে তাঁর কোনও ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন বাহিনীর মুখপাত্ররা।
ব্রিটিশ হেলিকপ্টার ইউনিটের সদস্য হিসেবে হেলমন্দ প্রদেশের ওই ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে হ্যারিকে। তাঁর আফগানিস্তানে যাওয়ার খবর প্রচার হওয়ার পরেই তালিবান জানায়, তারা হ্যারিকে খুন বা অপহরণ করার চেষ্টা করবে। তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ বলেন, হ্যারিকে ‘সরিয়ে দেওয়ার’ সব চেষ্টা করা হবে। রাজকুমারকে এনে আফগানিস্তানে ‘পরাজিত’ ব্রিটিশ সেনার মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশ সেনাকে আফগানিস্তান ছেড়ে পালাতে হবে। তালিবান মুখপাত্রের ওই হুমকির পরে এই হামলা ন্যাটো বাহিনীর চিন্তা অনেক বাড়িয়ে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে হ্যারিকে খুন করতেই ওই হামলা কি না, তা স্পষ্ট নয়। সম্প্রতি ইসলাম-বিরোধী একটি ফিল্ম নিয়ে অনেক দেশেই মার্কিন-বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। তালিবান কম্যান্ডার কারি ইউসুফ আহমদির দাবি, হ্যারিকে খুন এবং ওই সিনেমার প্রতিবাদ করতে হামলা চালানো হয়েছিল। তবে অন্য তালিবান নেতাদের বিবৃতিতে হ্যারির কথা উল্লেখ করা হয়নি। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্য, প্রথমে মুসলিম-বিরোধী ফিল্মের কথাই বলেছিল তালিবান নেতারা। হ্যারির কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরে তারা সুর বদলেছে।
হেলমন্দ প্রদেশের ওই ঘাঁটিটি আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সেনার সব চেয়ে বড় শিবির। শুক্রবার মাঝ রাতে গ্রেনেড, মর্টার ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে হামলা চালায় জঙ্গিরা। আগেও বহু বার এই শিবিরে হামলা চালিয়েছে তারা। কিন্তু, এ বার অনেক বেশি সংখ্যক জঙ্গি হানা দিয়েছিল বলে ধারণা ন্যাটো বাহিনীর।
ন্যাটোর মুখপাত্র মার্টিন ক্রাইটন ও বব বার্কো জানান, হ্যারির বিপদের আশঙ্কা ছিল না। ব্রিটিশ সেনা সূত্রে খবর, হ্যারি কয়েক মাইল দূরে শিবিরের অন্য অংশে ছিলেন। জঙ্গিরা তাঁর কাছে পৌঁছতে পারেনি। সংঘর্ষে দু’জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন। আহত বেশ কয়েক জন। ১৮ জন জঙ্গিও নিহত হয়েছে, দাবি ন্যাটোর।
তবে হ্যারির উপস্থিতি কি ব্রিটিশ বাহিনীর উপরে হামলার সম্ভাবনা বাড়িয়েছে? ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্য, সামরিক বাহিনীর সব সদস্যের উপরে হামলার সম্ভাবনাই বারবার খতিয়ে দেখা হয়। হ্যারিকে আফগানিস্তানে মোতায়েন করলে কী কী বিপদ হতে পারে তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার পরেই তাঁকে সে দেশে পাঠানো হয়েছে। |