কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পাকিস্তানের দু’টি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মহিলা ও শিশু-সহ কমপক্ষে ৩১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন অন্তত ৩১ জন। কাল প্রথম আগুন লাগে লাহৌরের জুতো কারখানায়। মৃত্যু হয় ২৫ জনের। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই স্থানীয় সময় সন্ধে ছ’টা নাগাদ করাচির কাছে বলদিয়া টাউনে একটি কাপড়ের কারখানায় আগুন লাগে। করাচির কমিশনার রোশন আলি শেখ আজ জানান, দুপুর পর্যন্ত কাপড়ের কারখানা থেকে ২৮৯ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে। কয়েক জন কারখানার ভিতরে আটকে থাকতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
করাচির কাপড়ের কারখানায় আগুন লাগার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কারখানার সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন কর্মীদের উদ্বিগ্ন আত্মীয়-স্বজন। পৌঁছয় দমকল বাহিনী। ৪০টি ইঞ্জিনের সাহায্যে বহু ক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। করাচির দমকল বাহিনীর প্রধান এথিশামুদ্দিন সিদ্দিকি জানান, বেশির ভাগেরই মৃত্যু হয়েছে দমবন্ধ হয়ে। বাইরে বেরোনোর প্রায় সব ক’টি রাস্তাই বন্ধ ছিল।
আগুন নেভানোর কাজটি কিন্তু মোটেই সহজ ছিল না। আগুন এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল যে, বহু ক্ষণ দমকল কর্মীরা কারখানার ভিতরে ঢুকতে পারেননি। আগুন তৃতীয় ও চতুর্থ তলে ছড়িয়ে পড়ায় বহু আতঙ্কিত কর্মী জানালা দিয়ে নীচে লাফ মারেন। অনেকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য মোবাইল জ্বালিয়ে দমকলকর্মীদের দিকে তুলে ধরেন। বিশেষ মইয়ের সাহায্যে তাঁদের তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বারান্দা থেকে নামিয়ে আনা হয়। অবস্থা আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ঘটনাস্থলে আরও ইঞ্জিন এবং নৌ-বাহিনীর বিশেষ প্রসিক্ষণপ্রাপ্ত লোকেদের খবর দেওয়া হয়।
আগুনের কারণ না জানা গেলেও কিছু প্রত্যক্ষদর্শী জানান, কারখানার দরজার কাছে থাকা একটি জেনারেটর থেকে আগুন লাগে। তবে প্রশাসনের কর্তারা জানায়েছেন, কোনও রকম নিরাপত্তা-বিধি মানেননি কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঘটনার পর থেকেই উধাও কারখানর মালিক। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন করাচির পুলিশ প্রধান ইকবাল মহম্মদ।
আগুন আয়ত্বে এলেও উদ্ধারকারীরা কাজ করতে বেশ বেগ পাচ্ছেন। ইকবাল বলেন, “পুড়ে যাওয়ায় যে কোনও মুহূর্তে কারখানাটি ভেঙে পড়তে পারে। |