পূর্ব কলকাতা
ফুটবল
উদযাপন
তিন তলা ভবনে নতুন রঙের প্রলেপ। হয়েছে আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও। কারণ, এ বছর সল্টলেকের বিকে ব্লকের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র হাইস্কুল ফর বয়েজ-এর রজতজয়ন্তী। এই উপলক্ষে আন্তঃস্কুল ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। জমজমাট ফাইনালে আয়োজক স্কুলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল সুকান্তনগর বিদ্যানিকেতন।
স্কুলের পিছনেই বিকে ব্লকের মাঠ। সেখানে আটটি স্কুলের ফুটবল দল লড়াইয়ে নামে। ক্যালকাটা এয়ারপোর্ট ইংলিশ হাইস্কুলকে ৭-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে সুকান্তনগর স্কুল। সেমিফাইনালে তারা বিধাননগর হাইস্কুলকে ৫-০ গোলে হারিয়ে দেয়। অন্য দিকে, আয়োজক স্কুল প্রথম ম্যাচে হরিয়ানা বিদ্যামন্দিরকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেয়। সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে দমদম এয়ারপোর্ট হাইস্কুলকে হারিয়ে দেয়।
ব্যান্ড বাজিয়ে, বেলুন উড়িয়ে শুরু হয় ফুটবল ফাইনাল। ফাইনালের আগে ইস্টবেঙ্গলের কোচ ট্রেভর জেমস মর্গ্যান ফুটবলারদের সঙ্গে পরিচিত হন। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে ম্যাচটি জমে উঠেছিল। প্রথমার্ধের শেষ দিকে মোতাসির সিদ্দিকীর গোলে এগিয়ে যায় সুকান্তনগর স্কুল। দ্বিতীয়ার্ধে প্রথমে একটি গোল করে ব্যবধান বাড়ান মোতাসির। পরে আরও একটি গোল করে সুকান্তনগরের জয় নিশ্চিত করে সুপ্রতীক বাড়ুই। পরিচিত মাঠ ও দর্শকদের সমর্থন থাকলেও গোল করতে ব্যর্থ হন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র স্কুলের পল্লব নন্দী, চিন্ময় বিশ্বাস, স্নেহাশিস সাধুখাঁ, সুমন প্রধানরা। তবে বেশ কয়েকটি গোল বাঁচিয়ে নজর কেড়েছে গোলরক্ষক বিকাশ শিকদার। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র বিকাশ রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা পরিচালিত ফুটবল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুশীলন করে।
চ্যাম্পিয়ন সুকান্তনগর স্কুলের সাই কোচ সঞ্জীবকুমার পাল বললেন, “একেবারেই সাধারণ পরিবারের ছেলেদের নিয়ে এই স্কুল। সাই অধিগ্রহণের পরে স্কুলটি ফুটবলে পরিচিতি পেয়েছে। গত বছর কলকাতায় মাহিন্দ্রা ইয়ুথ আন্তঃস্কুল ফুটবল এবং বেঙ্গালুরুতে আন্তঃশহর ফুটবলে ছেলেরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এখান থেকেই বিশাল হরিজন ও জয়ন্ত মণ্ডল স্কটল্যান্ডের সেলটিক ক্লাবে ১২ দিনের ফুটবল ট্রেনিংয়ে যাওয়ার সুযোগ পায়। দু’বার এই স্কুল সুব্রত কাপ জিতেছে।”
জয়ী সুকান্তনগর বিদ্যানিকেতন
আয়োজক স্কুলের ক্রীড়াশিক্ষক স্বপনকুমার ভাণ্ডারী বলেন, “রজতজয়ন্তী উদযাপনের পাশাপাশি প্রতিযোগিতার লক্ষ্য ছিল স্থানীয় স্কুলগুলির মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো।” আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রতীক বসু বললেন, “১৯৮৭-এর ১১ এপ্রিল এই স্কুলের জন্ম। বহু কৃতী ছাত্র দিয়েছে এই স্কুল। প্রভাতফেরির মধ্য দিয়ে রজতজয়ন্তী উদযাপনের সূচনা হয়েছে। ফুটবল প্রতিযোগিতা ছাড়াও বিজ্ঞান প্রদর্শনী, ক্যুইজ, আবৃত্তি, বিতর্ক, প্রবন্ধ রচনা প্রতিযোগিতা-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবর সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলিক সংস্কৃতি কেন্দ্রে সমাপ্তি অনুষ্ঠান হবে।”
ফাইনালের পরে এক প্রদর্শনী ফুটবলে অংশ নেন তুষার রক্ষিত, বাসুদেব মণ্ডল, দেবজিৎ ঘোষ, অমিত দাস, সঞ্জয় মাঝির মতো অতীতের ফুটবলাররা। উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রথম পরিচালন সমিতির সভাপতি ভবেশ মৈত্র, বর্তমান সভাপতি বিশ্বজীবন মজুমদার, সম্পাদক ও স্থানীয় কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায়, ফুটবলার ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায় প্রমুখ।

ছবি: শৌভিক দে




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.