|
|
|
|
|
‘পরিবর্তনে’র পরে কমেছে বঞ্চনা
সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাঘরে আনন্দবাজারের পাঠকদের
মুখোমুখি হয়েছিলেন সভাধিপতি গান্ধী হাজরা ও সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন।
নানা দাবি-দাওয়া, প্রাপ্তি-প্রত্যাশার বিষয় ওঠে আলোচনায়। সঞ্চালনায় ছিলেন
আনন্দ মণ্ডল। অনুষ্ঠানের বাছাই প্রশ্নোত্তরের প্রথম পর্ব আজ প্রকাশিত হল। |
|
|
• গ্রাম-গঞ্জের অধিকাংশ রাস্তা বেহাল। জেলা পরিষদ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে কি? কৃষি প্রধান এই জেলায় কৃষকদের উন্নত পদ্ধতিতে চাষের প্রশিক্ষণ দিতে কৃষি কলেজ খোলা হচ্ছে না কেন?
সংকর্ষণ মাইতি, মহিষাদল বাম পরিচালিত পূর্বতন জেলা পরিষদের বকেয়া মেটাতে হচ্ছে। তাই টাকার অভাবে গ্রামীণ রাস্তা মেরামতির কাজ হচ্ছে না। তবে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে ১১২ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়াও রাজ্যের কাছে ২০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। আশা করি দুর্গাপূজার আগে রাস্তার হাল অনেকটাই ফেরানো যাবে। নন্দকুমারে কৃষি খামারের জমিতে কৃষি কলেজ গড়ার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে রাজ্যের কাছে।
• সজলধারা প্রকল্পে পানীয় জল পেতে গ্রামবাসীরা টাকা জমা দিয়েছিলেন কয়েক বছর আগে। এখনও কাজ হয়নি। চণ্ডীপুরের চক-পাটনায় পাকা সেতু, চণ্ডীপুর-ঈশ্বরপুর ও হাঁসচড়া-বয়াল রাস্তা পাকা করার কাজও হয়নি। জেলায় লোডশেডিং সমস্যা বাড়ছে দিনদিন। জেলা পরিষদ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে কী?
হিমাদ্রীনন্দন ভুঁইয়া, চণ্ডীপুর
সজলধারা প্রকল্পে জেলায় ১০৬টি জলপ্রকল্পের অনুমোদন মিলেছিল। নাম বদলে ‘ন্যাশনাল রুরাল ড্রিঙ্কিং ওয়াটার প্রোগ্রামে’র আওতায় নতুন করে ওই প্রকল্পগুলিরই কাজ চলছে। একটু দেরি হলেও কাজ ঠিক হবে। সেতু তৈরির ক্ষেত্রে জিনিসপত্রের দাম অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ করতে চাইছেন না। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। আইনি জটিলতায় আটকে ছিল হাঁসচড়া-বয়াল রাস্তার কাজ। বিদ্যুৎ পরিকাঠামো উন্নতি করতে নতুন ৮টি সাবস্টেশন তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব হওয়ায় কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে।
|
|
ছবি: পার্থপ্রতিম দাস |
• এ বছর প্রথম দিকে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আমন চাষে কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে। জলসেচের বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে কী কাজ হয়েছে? হলদিয়ার সুতাহাটা থেকে কুকড়াহাটি পর্যন্ত রাস্তা খানাখন্দে বেহাল। ওই রাস্তা মেরামতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি?
রাজ্যশ্রী মাইতি, সুতাহাটা
আমাদের জেলায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রাস্তা মেরামতের পাশাপাশি জলাশয় খনন ও পুকুর সংস্কারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্পে নন্দীগ্রাম-সহ উপকূলবর্তী এলাকায় ২৩টি বড় জলাশয় খননের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। আরও প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সুতাহাটা থেকে কুকড়াহাটি রাস্তা মেরামতির জন্য ইতিমধ্যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। পূজার আগেই কাজ হবে।
• জেলার প্রবেশদ্বার মেচেদা বাসস্ট্যান্ড সামান্য বৃষ্টিতেই বেহাল হয়ে যায়। উত্তর দিকে জঞ্জাল জমে থাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ট্রাফিক পুলিশও থাকে না আর। রাতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন যাত্রীরা। জেলা পরিষদ ব্যবস্থা নিচ্ছে কি?
সুকুমার মাইতি, মেচেদা
তহবিলে প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকা থাকা সত্ত্বেও ওই বাসস্ট্যান্ড রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে খামতি রয়েছে। বাসস্ট্যান্ড পরিচালনার দায়িত্ব স্থানীয় শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত বাসস্ট্যান্ডে যাতায়াতের রাস্তা সংস্কারের জন্য জেলা পরিষদ ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে কাজ করছে। বাসস্ট্যান্ড-সহ মেচেদার নিরাপত্তা নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
• আন্দোলনের পীঠস্থান নন্দীগ্রামে উন্নয়নের কাজ কতটুকু হয়েছে? হাসপাতালের অবস্থা ভাল নয়, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য ভাল খেলার মাঠ, কমিউনিটি হল নেই। এই পরিস্থিতি কেন?
সুকুমার পাহাড়ি, নন্দীগ্রাম
নন্দীগ্রামের উন্নয়নে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কাজও চলছে। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এই বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। নন্দীগ্রামে রেল লাইন, পাকা রাস্তা তৈরির কাজ চলছে। আধুনিক হাসপাতাল, স্টেডিয়াম ও নতুন কমিউনিটি হল তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জেলিংহ্যামে রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা গড়ার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।
• নতুন রাজ্য সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই জেলায় আগের চেয়ে সরকারি অর্থ বরাদ্দ বেড়েছে কী?
প্রণব বাহুবলীন্দ্র, তমলুক।
আগের চেয়ে বঞ্চনা কমেছে নিঃসন্দেহে। ২০০২ সালে নতুন জেলা গঠন হলেও বাম সরকারের আমলে প্রশাসনিক ভবন তৈরির কাজ তেমন এগোয়নি। সেখানে নতুন রাজ্য সরকার জেলার প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে ৫৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। নতুন সর্বদীপ প্রকল্পে ২৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। আর স্পেশ্যাল বিআরজিএফ প্রকল্পে জেলায় ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। |
|
|
|
|
|