‘স্টুডেন্ট ভাড়া’ দেওয়ার ‘অপরাধে’ ভরসন্ধ্যায় বাস থেকে রীতিমত ধাক্কা দিয়ে চার ছাত্রীকে ফাঁকা মাঠের মধ্যে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বেসরকারি একটি বাসের কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে। সোমবার সন্ধ্যায় তেহট্টের জিতপুর এলাকার ওই ঘটনার পরে রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক ও প্রশাসনের কর্তারা। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ছাত্রীরা তেহট্ট থানায় ও মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে। তেহট্টের মহকুমাশাসক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, “এটা অত্যন্ত অমানবিক ব্যাপার কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। পুলিশকেও গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সোমবার বিকেলে তেহট্টে এক শিক্ষকের কাছে সংস্কৃত পড়তে গিয়েছিল পলাশীপাড়ার বিদিশা ভৌমিক, রিয়াঙ্কা সরকার, শ্রাবণী কর্মকার ও অঙ্কিতা দে। প্রত্যেকেই তেহট্টের পলাশীপাড়া এম জি এস বিদ্যাপীঠের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। এদিন সন্ধ্যায় শিক্ষকের কাছে পড়া শেষে বেসরকারি বাসে তারা বাড়ি ফিরছিল। ওই ছাত্রীদের অভিযোগ, ‘‘আমরা বাসে উঠে কন্ডাক্টরকে অন্য দিনের মতো স্টুডেন্ট ভাড়া দুই টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু কন্ডাক্টর আমাদের কাছে পুরো ভাড়া চাইছিল। আমরা বারবার তাকে বলি যে আমরা স্টুডেন্ট ভাড়া দিয়েই রোজ যাতায়াত করি। কিন্তু কোন কথা না শুনেই ওই বাস কন্ডাক্টর আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করে। তারপর জিতপুর এলাকায় ফাঁকা মাঠের মধ্যে বাস দাঁড় করিয়ে আমাদের রীতিমত ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দেয়।” ওই ছাত্রীদের কথায়, “অন্ধকারে ফাঁকা মাঠের মধ্যে আমাদের ফেলে রেখে বাসটা চলে গেলে সত্যিই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। আশপাশেও কেউ ছিল না। তারপর প্রায় কুড়ি মিনিট হাঁটার পরে কয়েকজনকে দেখতে পাই। ওরাই আমাদের পরের একটি বাসে তুলে দিলে আমরা বাড়ি ফিরতে পারি।” শ্রাবণীর অভিভাবক সুখেন কর্মকার বলেন, “এরপর তো মেয়েকে বাসে তুলে দিতেই ভয় পাচ্ছি। ভাড়া নিয়ে গন্ডগোল হতেই পারে। তাই বলে ভর সন্ধ্যায় ফাঁকা মাঠে মেয়েদের ওভাবে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেবে? আমরা আতঙ্কিত’’ পলাশীপাড়া এম জি এস বিদ্যাপীঠের প্রধানশিক্ষক সাধন বিশ্বাস বলেন, “আমাদের স্কুলের বহু ছাত্রছাত্রী বাসে স্কুলে আসে কিংবা পড়তে যায়। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় ওই বাস কন্ডাক্টর যেটা করেছে, সেটা অমানবিক বললেও কম বলা হয়। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে ওই বাস কন্ডাক্টরের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।’’ নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা আর না ঘটে সে বিষয়ে আমরা কড়া নজর রাখব। ওই কন্ডাক্টরের সঙ্গেও আমরা কথা বলে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।” |