সাঁকরাইল গার্লস হাইস্কুল |
প্রতিষ্ঠা-১৯৩১।
ছাত্রী সংখ্যা-১৩০০। মোট শিক্ষিকা-২৫ জন।
পার্শ্ব শিক্ষিকা-৩ জন। করণিক-১ জন। শিক্ষাকর্মী-৩ জন |
|
|
মমতা ভট্টাচার্য
(প্রধান শিক্ষিকা) |
|
১৯৩১ সালে অভয়চরণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ন্যাস পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত জমিতে এই বিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগী প্রয়াত কানাইলাল কাঁড়ার। স্কুলের নাম হয় সাঁকরাইল কুসুমকুমারী গার্লস স্কুল। এগিয়ে এসেছিলেন কিছু বিদ্যোৎসাহী মানুষ। তাঁদের অকুণ্ঠ সহযোগিতায় নানা প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে দূরন্ত গতিতে অতিক্রম করেছে এই বিদ্যালয় এক দীর্ঘ পথ। সময়ের তালে তালে ক্লাস এইট পর্যন্ত হয়ে নতুন নামকরণ হল সাঁকরাইল গার্লস জুনিয়র হাইস্কুল। ১৯৬৫-তে ক্লাস টেন পর্যন্ত অনুমোদন পেয়ে নামকরণ হল সাঁকরাইল গার্লস হাইস্কুল। আর ২০০৬-এ বিদ্যালয় শিক্ষার শীর্ষশিখর অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়। পাশাপাশি প্রাথমিক বিভাগটি ‘কুসুমকুমারী গার্লস প্রাইমারি স্কুল’ নামে প্রাতঃবিভাগেই চলছে। এই বিদ্যালয়ের সূচনা লগ্ন থেকে যে সব প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষিকা দায়িত্বপালন করে গিয়েছেন সেই পরম শ্রদ্ধেয়/শ্রদ্ধেয়াদের পথ অনুসরণ করেই ২০০৪ সালে প্রধান শিক্ষিকা পদে যোগ দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি বিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে। বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নে স্থানীয় গ্রামবাসী, অভিভাবকবৃন্দ, বিধায়ক, সাংসদ এঁদের অকৃপণ আর্থিক বা বিভিন্ন উপকরণের সাহায্যে বিদ্যালয় ভবনের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্বে স্থানীয় জুটমিলগুলি যে ভাবে বিদ্যালয়কে সাহায্য করেছিল, বর্তমানে ‘অম্বুজা’ সিমেন্ট কোম্পানির অবদান উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া পরিচালন সমিতির প্রতিটি সদস্যের সহযোগিতা ও সদুপোদেশ বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুটি পরীক্ষাতেই এই বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা হাওড়া জেলায় প্রথম সারিতেই স্থানলাভ করে। ২০০৯-এর মাধ্যমিকে এই বিদ্যালয়ের ছাত্রী রাজ্যের মধ্যে দশম স্থান অধিকার করে বিদ্যালয়ের সুনাম বৃদ্ধি করেছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষিকাদের যত্ন সহকারে সুললিত পাঠদান এবং পাঠচর্চার প্রক্রিয়া বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিদ্যালয়ে জায়গার অভাবে নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই গ্রামের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কাছে আমাদের আমাদের সবিনয় আবেদন, বিদ্যালয়কে জমিদান করে অথবা জমিদানের সুব্যবস্থা করে দিয়ে বিদ্যালয়ে আরও শ্রেণিকক্ষ তৈরির মাধ্যমে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান শাখা খোলার ব্যবস্থা করে দিলে ছাত্রছাত্রীদের প্রভূত উপকার হয়। এতে আরও বেশি ছাত্রী এই বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেতে পারবে। বর্তমানে বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ও কম্পিউটার রুম দুটি খুবই ছোট। সকলের সাহায্য পেলে ওই রুম দুটি বড় করার ইচ্ছা। |
আমার চোখে
অর্পিতা পাল
(ক্লাস টেন-এর ফার্স্ট গার্ল) |
|
|
এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় পঞ্চম শ্রেণিতে। ভর্তির জন্য মায়ের হাত ধরে এসে দাঁড়িয়েছিলাম হাইস্কুল প্রাঙ্গণে। প্রথম প্রথম একটা সংকোচ বোধ হলেও মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই মাতৃসমা শিক্ষিকা ও দিদিদের স্নেহচ্ছায়ায় এই বিদ্যালয়ের প্রতি আমার আত্মিক টান তৈরি হল। শিক্ষিাদের স্নেহপূর্ণ পাঠদান, একই সঙ্গে জীবনে শৃঙ্খলা মেনে চলার শিক্ষাদানের মধ্য দিয়ে আজ আমি দশম শ্রেণিতে পাঠরতা। শিক্ষিকা-ছাত্রীর আত্মিক মেলবন্ধনে জ্ঞানের পারস্পরিক আদান-প্রদানে স্বাধীন চিন্তা-ভাবনার উন্মুক্ত আধার আমাদের বিদ্যালয়। পড়াশোনার পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধুলা, বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ, শিক্ষামূলক ভ্রমণ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে সকল শিক্ষিকা ও সকল ছাত্রীর মিলিত খুশি যেন উপচে পড়ে। এত কিছুর মধ্যেও একটা আক্ষেপ থেকে গিয়েছে। তা হল, উচ্চমাধ্যমিক বিভাগে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার এখনও অন্তর্ভুক্তি না হওয়া। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একান্ত অনুরোধ, যদি কলা বিভাগের পাশাপাশি সঙ্গতি রেখে বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগ চালু করা হয়, তা হলে আরও দুটি বছর এই বিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণ করে জীবনে আরও সমৃদ্ধ হতে পারব।
|
ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়। |