উত্তরের চিঠি

মহীপাল দিঘির হৃতগৌরব ফিরিয়ে আনা চাই
মহীপাল দিঘি রাজা দ্বিতীয় মহীপালের এক গৌরবময় কীর্তি ও সাবেক দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার অন্যতম বড় দিঘি। কিন্তু বর্তমানে এই দিঘিকে কেন্দ্র করে চলছে তীব্র অরাজকতা। রাজনীতির মারপ্যাঁচে মহীপাল দিঘির প্রাণ ওষ্ঠাগত। গত কয়েক বছর ধরেই দিঘির জলাশয় ও মাছ নিয়ে চলছে পরিকল্পিত দীর্ঘ কালোবাজারি। যা প্রতিমুহূর্তে ইঙ্গিত দিচ্ছে এক হিংস্র বিদ্রোহের। এখনও বোঝা যাচ্ছে না দিঘি কার দায়িত্বে রয়েছেমৎস্য সমিতির না সরকারের না জনগণের না কুচক্রান্তকারীদের? দিঘি যার দায়িত্বেই থাকুক না কেন, দিঘির অসংখ্য জলজ প্রাণীর প্রাণ রয়েছে কিন্তু কিছু লোলুপ স্বার্থপর ভক্ষকের হাতে। যাদের হাতে রয়েছে মৎস্য শিকারের হরেক উপকরণ ও বুদ্ধিশাণিত কৌশল। মহীপাল দিঘিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মৎস্য সংগ্রহশালা বলা যেতে পারে। কেননা প্রাচীন এই দিঘিতে রয়েছে অসংখ্য প্রজাতির মাছ। যে মাছগুলি গত কয়েক দশকে আমাদের নদী, পুকুর, বিল জলাশয় থেকে হারিয়ে গেছেতাদের অন্তিম আস্তানা এই মহীপাল দিঘি। কুড়ি-পঁচিশ কেজি ওজনের বোয়াল, পনেরো কেজি ওজনের রুই-কাতলা কিংবা চল্লিশ কেজি ওজনের গজাল মাছ মহীপাল দিঘিতে আকছার পাওয়া যায়।
কখনও কখনও সাত-আটশো গ্রাম ওজনের কই মাছ দেখেও চমকে উঠতে হয়। কিন্তু গত মাস থেকে মহীপাল দিঘিতে চলছে ব্যাপক ভাবে মৎস্যনিধন। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সকাল হলেই নেমে পড়ছে দিঘির পচা জলে। জল তো নামমাত্র। এ বারের অনাবৃষ্টি আর তপ্ত খরায় দিঘির জল শুকিয়ে পাঁকে পরিণত হয়েছে। কম করেও ১০ ফুট পাঁক দিঘির সর্বত্র। এই পাঁকে হাজার হাজার মানুষের অত্যাচারে স্বাভাবিক ভাবেই তাই ধরা পড়ছে বড় ছোট অসংখ্য মৎস্যকুল। ব্যাহত হচ্ছে দিঘির বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য। অন্যান্য জলজ ও উচ্চতর প্রাণীর অবস্থাও সংকটাপন্ন। হেলে সাপ ও ব্যাঙ যত্রতত্র মরে পড়ে রয়েছে। কচ্ছপও গুটিগুটি পায়ে ধ্বংসের দরজায় হাজির। শীতকালে মহীপাল দিঘিতে বহু পরিযায়ী পাখি দল বেঁধে নানা স্থান থেকে ছুটে আসে। গত কয়েক বছর এই সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। খাদ্যের অভাব এবং দিঘির পরিবেশ দূষণই এর জন্য দায়ী। এখন হাতে-গোনা কয়েকটি রাজহাঁস আর বালিহাঁস সঙ্গীহীন হয়ে তারস্বরে চিৎকার করে। মহীপাল দিঘিকে তার হৃতগৌরব ফিরিয়ে দিতে গেলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ভাবে দিঘির লিজ দেওয়া। তার পরে দিঘির সংস্কার। আর সেই সঙ্গেই দিঘির পাড়ের সৌন্দর্যায়ন করে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা। তবে বর্তমান কর্তব্য হল, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাছ ধরা বন্ধ করে জলজ প্রাণীদের নিধন রোধ করা। তথা দিঘির বাস্তুতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখা।
পদাতিক এক্সপ্রেসের সম্প্রসারণ চাই
প্রতি বছর আমরা জলপাইগুড়িবাসীরা অনেক আশা ও প্রত্যাশা নিয়ে রেলবাজেটের দিকে তাকিয়ে থাকি। ভাবি, রেলমন্ত্রী হয়তো এ বার জলপাইগুড়ি ও হলদিবাড়ি যাত্রীদের স্বার্থে অন্য কোনও নতুন ট্রেনের প্রস্তাব রাখবেন রেলবাজেটে। কিন্তু অতি দুঃখের বিষয় এই যে, প্রতিবারই রেল বাজেট ঘোষণার পর জলপাইগুড়িবাসীর ভাগ্যে না-জোটে না কোনও নতুন ট্রেন, না সম্প্রসারণ হয় দার্জিলিং মেল ও পদাতিক এক্সপ্রেসের যাত্রাপথজলপাইগুড়ি ও হলদিবাড়ির মানুষ রেলমন্ত্রকের কাছে যে দাবি করে আসছেন দীর্ঘকাল ধরে। যার ফলে রেলবাজেট ঘোষণার পর পরই আমাদের হতাশ হতে হয় এবং জলপাইগুড়ির মানুষের প্রতি রেলমন্ত্রকের বঞ্চনার ক্ষোভও দিন দিন যেন বাড়তেই থাকে। শুনেছি, শিশুরা না কাঁদলে নাকি মায়েরা তাদের স্তন্য পান করান না। কিন্তু শিশুরা কাঁদার পরও যদি মায়েরা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকেন, তা হলে মায়েদের মমতা নিয়েও আমাদের মনে কিছু প্রশ্নচিহ্ন আঁকা হয় না কি? মনে হয়, আমাদের এই প্রাচীন ঐতিহ্যপূর্ণ শহরটির প্রতিও রেলমন্ত্রকের কৃপাদৃষ্টি না থাকার ফলেই বুঝি আমাদের জোরালো দাবিগুলোকে প্রতিবারই রেলবাজেটে এড়িয়ে যেতে চান মাননীয় রেলমন্ত্রী। তাই নতুন কোনও ট্রেন পাওয়া তো দূরের কথা, ‘পদাতিক’ বা ‘দার্জিলিং মেল’-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন দুটিও হলদিবাড়ি পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় না। তাই জলপাইগুড়ি শহরের মঙ্গলকামী একজন বর্ষীয়ান নাগরিক হিসাবে জেলার সমস্ত জনপ্রতিনিধির কাছে বিনীত অনুরোধ রাখিআসন্ন রেলবাজেটের আগেই তাঁরা যেন জলপাইগুড়ি ও হলদিবাড়ির যাত্রীদের স্বার্থে পদাতিক এক্সপ্রেসের মতো একটি দ্রুতগামী ও গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের হলদিবাড়ি পর্যন্ত সম্প্রসারণের জোরালো দাবি রাখেন রেলমন্ত্রীর কাছেযা বাস্তবায়িত হলে রেলমন্ত্রকের প্রতি ক্ষোভ যেমন অনেকটা প্রশমিত হবে, তেমনই আপামর জলপাইগুড়ি ও হলদিবাড়িবাসীও জনপ্রতিনিধিদের এই সাফল্যের জন্য তাঁদের আশীর্বাদ জানাবে আগামী দিনে।
বিধান মার্কেটের স্টলের পাট্টা চাই
উত্তরবঙ্গের প্রাণকেন্দ্র শিলিগুড়ি শহরের প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র বিধান মার্কেট। মূলত বাণিজ্যনগরী হিসেবেই এই শহর দেশ ও বিদেশের কাছে পরিচিত। ১৯৬০ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডা.বিধানচন্দ্র রায়ের উদ্যোগে এই মার্কেট গড়ে ওঠে। মূলত এই মার্কেট পূর্ববঙ্গ থেকে আগত উদ্বাস্তুদের জন্যই রূপায়িত হয়। ১৪৬১ জন উদ্বাস্তু জীবিকা অর্জনের জন্য এই রিফিউজি বাজার স্টল পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে আরও কিছু স্টল বিলিবণ্টন করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৫০ বছর পরও আমরা আমাদের স্টলের মালিকানা বা পাট্টা পাইনি। যার ফলে আমরা ব্যাঙ্ক-লোন ও দোকানের ইন্সিওরেন্স থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছি। এই মার্কেটে শিলিগুড়ি-সহ শুধু তরাই ডুয়ার্সের মানুষই আসেন না, পার্শ্ববর্তী নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ থেকেও ক্রেতারা আসেন ন্যায্য দামে ভাল জিনিসের খোঁজে। সংলগ্ন হংকং মার্কেটে (যা কিনা বিধান মার্কেটেরই একটি অংশ) দেশবিদেশের প্রচুর পর্যটক আসেন। সবার আগে আমাদের বিধান মার্কেটের স্টলের পাট্টা বা মালিকানা দেওয়া দরকার। আশা করি, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।

উত্তরের চিঠি
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ
১৩৬/৮৯ চার্চ রোড
শিলিগুড়ি-৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.