মানছে পুলিশও
নজরদারির ফাঁক, শহরে বাড়ছে বিদেশি অপরাধীদের সংখ্যা
মাস খানেক আগেকার ঘটনা। হাওড়া স্টেশন থেকে এক নাইজিরীয় যুবককে ধাওয়া করে, এন্টালি এলাকায় এসে তাকে পাকড়াও করেন গোয়েন্দারা। ওজিম্বা নামে ওই যুবকের কাছ থেকে মেলে প্রায় ১০০ গ্রাম কোকেন।
দিন কয়েক আগে উল্টোডাঙা থেকে জুড চিকেজি ওজিনওয়া এবং কেনেথ উদোকা এনোজি নামে দুই নাইজিরীয় ধরা পড়ে। তাদের কাছেও ১০০ গ্রাম কোকেন পায় পুলিশ। সঙ্গে মেলে বিদেশি সিমকার্ড ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ভিসা।
শুধু মাদক চক্র নয়, কিছু বিদেশি নাগরিক শহরে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি-সহ নানা অপরাধ চালাচ্ছে বলে অনুমান পুলিশের। কিন্তু পুলিশের কাছে কোনও তথ্য না থাকায় তাদের ধরা যাচ্ছে না।
শহরে বসবাসকারী বিদেশিদের সম্পর্কে (বাংলাদেশি, পাক এবং নেপালি নাগরিক ছাড়া) নজরদারির দায়িত্ব ‘সিকিওরিটি কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন’ (এসসিও)-এর। কিন্তু তাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য নেই বলে অভিযোগ উঠেছে লালবাজারের পক্ষ থেকেই। সম্প্রতি কোকেন পাচার চক্রের কয়েক জন চাঁই ধরা পড়ায় গোয়েন্দা দফতর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে এসসিও-কে। তাতে বিদেশিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোর কথা বলা হয় বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
গোয়েন্দারা বলছেন, অনেক সময়েই দেখা যাচ্ছে, মুম্বই বা দিল্লিতে ধৃত অপরাধীরাও বেশ কয়েক বার কলকাতায় এসে থেকে গিয়েছে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, “বিদেশিদের আনাগোনা এমন বেড়েছে যে তিলজলা এলাকায় একটি গির্জার নাম বিশেষ একটি মহাদেশের নামে পরিচিত হয়ে গিয়েছে।” গোয়েন্দারা জেনেছেন, অধিকাংশ বিদেশির বসবাস দক্ষিণ শহরতলি বিশেষ করে পূর্ব যাদবপুর, তিলজলা-সহ ই এম বাইপাস সংলগ্ন এলাকায়। দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশেরই পাসপোর্ট বাতিল হয়ে গিয়েছে অথবা ভিসার মেয়াদ ফুরিয়েছে। লালবাজারের এক গোয়েন্দা অফিসারের কথায়, “তথ্য ভাণ্ডার এতটাই দুর্বল যে এই অভিযুক্তেরা ধরা না পড়লে, বিষয়গুলি সামনেই আসত না।”
পুলিশের একাংশের দাবি, বিদেশিদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্ট-ভিসা দেখে নেওয়া এবং সে সম্পর্কে স্থানীয় থানায় জানানোর কথা বারবার বলা সত্ত্বেও সচেতনতা বাড়েনি।
পুলিশের একাংশের দাবি, অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত বিদেশিরা দিল্লি বা মুম্বই হয়ে আসছে। ফলে কলকাতা বিমানবন্দর মারফৎ তাদের তথ্য পাচ্ছে না পুলিশ। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্তার অভিযোগ, “যে এলাকায় এই সব বিদেশিরা ঘাঁটি গাড়ছে, সেখানে এসসিও-র নজরদারি নেই। স্থানীয় থানাতেও বিদেশিদের কোনও তথ্য থাকছে না।”
তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ এসসিও-র যুগ্ম ডেপুটি ডিরেক্টর শাকিল আহমেদ। তিনি বলেন, “নজরদারি এখনও রয়েছে। তা আরও বাড়ানোর জন্য দিল্লিতে সর্বভারতীয় স্তরে পরিকল্পনাও চলছে।” কিন্তু নজরদারি থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে এত দিন বিদেশি অপরাধীরা শহরে লুকিয়ে ছিল, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি।
লালবাজার-কর্তারা বলেন, মুম্বইয়ের মীরা রোড বা ভায়ান্দরের মতো এখানে শহরতলি এলাকা নজরদারির অভাবেই বিদেশি অপরাধীদের ঘাঁটি হয়ে গিয়েছে। আশঙ্কা, পুলিশ সতর্ক না হলে যাদবপুর, তিলজলাও তেমনই হয়ে উঠবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.