দেখতে দেখতে চার বছরে পা দিল শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার ‘নৃত্যশ্রী’। বয়সে কম হলেও এই নৃত্যকলা কেন্দ্রটি শিক্ষার্থীদের চটজলদি প্রশিক্ষণ দিয়ে চমকে বিশ্বাসী নয়। অন্তত নৃত্যকলা কেন্দ্রের কর্ণধার তথা রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুরশ্রী বসাক তাই-ই মনে করেন। নাচের ইতিহাসের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই ভবিষ্যতে সত্যিকারের নৃত্যশিল্পী হয়ে ওঠার পথ সুগম করতে সম্প্রতি ‘নৃত্য কর্মশালা’ ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল ‘নৃত্যশ্রী’। গত ২৫ অগস্ট থেকে ২৭ অগস্ট আর্য সমিতিতে আয়োজিত ওই কর্মশালার মূল বিষয় ছিল ‘নৃত্যযোগ সূত্র’ এবং ‘ভরতনাট্যম’। কর্মশালা পরিচালনা করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের রাহুল দেব মণ্ডল। আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত ওই শিল্পীকে কাছে পেয়ে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বসিত। কর্মশালায় উঠে এসেছে বিশ্ব নৃত্যের প্রেক্ষাপটে ভারতীয় নৃত্যের প্রভাব ও বিস্তার। রাহুলের হাত ধরে যে ‘নৃত্যযোগ সূত্র’ আমেরিকা, ইন্দোনেশিয়া সহ ইউরোপে সমাদৃত হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা হয়। নৃত্যশ্রী নৃত্যকলা কেন্দ্রের অধ্যক্ষা সুরশ্রী বসাক কর্মশালার সাফল্যে খুশি। তিন দিনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে অস্মিতা বসু, সিঞ্জিনী সাহা, পূজিতা ভট্টাচার্য, সমাদৃতা ভট্টাচার্য, অভিসিক্তা লাহিড়ী, লভিস্কা অগ্রবাল, নয়নিতা শর্মা, সোহনী সিংহ, তিথি বিশ্বাস, অনুষ্কা মোদক, অন্বেষা মোদক, আস্থা তেওয়ারি, ধৃতি অগ্রবাল, মোহন অগ্রবাল, জয়শ্রী অগ্রবাল, দেবস্মিতা কর্মকার সহ অনেকেই।
|
‘টেগোর ন্যাশনাল মাইম ফেস্টিভ্যালে’ অংশ নিলেন জলপাইগুড়ি সৃষ্টি
মাইম থিয়েটারের শিল্পীরা। কবিগুরুকে নিয়ে গত ২৪ জুন থেকে ৩০ জুন কলকাতা সল্টলেকে আয়োজিত ওই উৎসবের আয়োজক ছিল ‘ইণ্ডিয়ান মাইম থিয়েটার’। সহযোগিতায় ছিল ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রক। রবীন্দ্র রচনাকে কেমন করে মূকাভিনয়ে ফুটিয়ে তোলা যায় তা নিয়ে উৎসবের ওয়ার্কশপে আলোচনা হয়। সেখানে কবিগুরুর কবিতা, নাটক, গল্প পাঠ করা হয়। আলোচনায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদও। দ্বিতীয় দিনে সৃষ্টি মাইম থিয়েটারের শিল্পীরা পরিবেশন করেন ‘তোতা কাহিনি’।
|
পঁচিশ বছরে পা রাখল জলপাইগুড়ি কলামণ্ডলম। গত ২৬ অগস্ট স্থানীয় সরোজেন্দ্রদেব রায়কত কলা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হল সংস্থার রজত জয়ন্তী বর্ষ উৎসব। সংস্থার অধ্যক্ষা কৃষ্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নৃত্য শিক্ষা গুরু থাঙ্কমুনি কুট্টি। তিনি কাজ করেছেন গৌরীয় নৃত্য গবেষক মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। রজত জয়ন্তী বর্ষ উৎসবে সংবর্ধনা জানানো হয় সমর চৌধুরী, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, কালিদাস সরকার, মধুমিতা মুখোপাধ্যায় এবং শঙ্কর দে-কে। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ভরত নাট্যমের ধ্রুপদী আঙ্গিকে পরিবেশিত হয় চোলকট্ট, ভূমি প্রণাম। গণেশ বন্দনায় অবশ্য ধ্রুপদী নৃত্যের রক্ষণশীলতা অতিক্রম করে নৃত্যশৈলী আধুনিকীকরণ করা হয়। সংস্থার অধ্যক্ষার নৃত্য ভাবনায় বরাবর সৃজনশীলতার পরিচয় পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ‘টগবগ টগবগ’, ‘পালকীর গান’, ‘রাজার সাজা’ ছিল তাঁর অনুপম উপহার। কন্ঠসঙ্গীতে ছিলেন মধুমিতা মুখোপাধ্যায়,ও মানস ভৌমিক। ভাষ্যে ছিলেন সুচন্দ্রা বসাক। নৃত্য পরিকল্পনা, পোশাক পরিকল্পনা এবং সংস্থার ছাত্রছাত্রীদের নৃত্যাভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করে। অন্তত ৭৫ জন ছাত্রছাত্রী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। উৎসবে প্রাক্তনীরা পরিবেশন করে ‘মোহিনী’। এ ছাড়াও ছিল উৎসা ঘোষ কুণ্ডুর একক অনুষ্ঠান। টানা আট বছর কলামণ্ডলমে নাচের তালিম নেন উৎসা। নৃত্য শিক্ষার জন্য চেন্নাই কলাকেন্দ্রে মনোনীত হন। সেখানে ছয় বছর প্রশিক্ষণের পরে এখন নিজে নৃত্য শিক্ষক। কলাক্ষেত্র আঙ্গিকে তাঁর পরিবেশিত ‘নাটেশা কাউত্যম’, ‘তনি আবর্তনম’ ও তুলসীদাসের ভজন ‘শ্রীরামচন্দ্র কৃপানুভজনম’ দর্শকদের মুগ্ধ করে। |