কড়া মনমোহন, একঘরে বিজেপি
নির্জোট সম্মেলন সেরে দেশে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী জানালেন, তাঁর ইস্তফার কোনও প্রশ্ন নেই। ২০১৪ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে বিজেপিকে। একই দিনে, সংসদে টানা অচলাবস্থার প্রতিবাদে ধর্নায় বসলেন মুলায়ম সিংহ-সহ চার বাম দলের নেতারা। ফলে দিনের শেষে প্রধান বিরোধী দল কিছুটা অস্বস্তিতেই।
কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে বিরোধীদের হট্টগোলে প্রতিদিনই অচল থাকছে সংসদ। বিদেশযাত্রার আগে সংসদে প্রবল বিক্ষোভের মধ্যেই বিবৃতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ ফেরার পথে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, এই পরিস্থিতিতে ইস্তফা দিয়ে ‘পলাতক’ আখ্যা পেতে তিনি রাজি নন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “যদি ইস্তফাই দিতাম, তা হলে এখানে থাকতাম না।” বিজেপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জন্যই সংসদ চলছে না বলে অভিযোগ করেন কিছুটা স্বভাববিরুদ্ধ ভাবেই আক্রমণাত্মক মনমোহন।
এই অবস্থায় আজ সংসদে গাঁধীমূর্তির সামনে মুলায়মকে নিয়ে চার বাম দল, টিডিপি, বিজেডি ও এডিএমকে নেতারা ধর্নায় বসেন। সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান কোনও বিচারপতিকে দিয়ে কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত করানোর দাবির পাশাপাশি সংসদের অচলাবস্থার জন্য বিজেপির সমালোচনাও করা হয়। বিজেপির মনোভাবের বিরুদ্ধে সব চেয়ে বেশি সরব ছিলেন সিপিআই নেতা গুরদাস দাশগুপ্ত। অথচ বিজেপির পরিকল্পনা ছিল, কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে সপা ও বাম দলগুলিকে পাশে নিয়ে আক্রমণে যাওয়া। দৃশ্যতই ‘একঘরে’ বিজেপি নেতারা আজ ক্ষোভ গোপন করেননি। সাংসদ শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হোক বা কয়লা কেলেঙ্কারি সব ক্ষেত্রেই কংগ্রেসকে বাঁচাতে তৎপর সপা নেতৃত্ব।” সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত করানোর বিষয়টি সরকার ‘ভেবে দেখতে পারে’ বলে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ আশ্বাস দেওয়ার পরে অসন্তোষ আরও বেড়েছে বিজেপির। অরুণ জেটলি অবশ্য বলেছেন, “দুর্নীতির প্রশ্নে একা লড়াই করার প্রয়োজন হলে পিছপা হবে না বিজেপি। এটা আমাদের কাছে রাজকীয় একাকীত্ব।”
সংসদের ওই ধর্না প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আশা করছি বিজেপির শুভবুদ্ধির উদয় হবে।” পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন, বিজেপি যতই তাঁর ইস্তফা চেয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করুক, তিনি বিরোধী দলের সঙ্গে কাদা ছোড়াছুড়িতে নামবেন না। তাঁর কথায়, “প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের একটা মর্যাদা রয়েছে। তা ভাঙতে পারব না। আমি আগেও বলেছি, এর থেকে ভাল নিশ্চুপ থাকা।”
বিমানে সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গাঁধীর মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এ বিষয়ে রাহুল কী ভাবছেন, তিনি জানেন না। তবে তিনি আন্তরিক ভাবে চান রাহুল মন্ত্রিসভায় আসুন। উপরাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাহুলের মন্ত্রিসভায় অর্ন্তভুক্তির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ শেষ হওয়ার পরেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের সম্ভাবনা।
প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি আগামী মাসেই মন্ত্রিসভায় আসছেন রাহুল?
বিশেষজ্ঞদের অবশ্য মত, শুধু রাহুল নন, সনিয়া গাঁধীও চান না, এই সময়ে রাহুল মন্ত্রিসভায় যোগ দিন। আসল ব্যাপার হল, কংগ্রেস নেতৃত্বই খুব সচেতন ভাবেই প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে আগামী দিনে রাহুলকে ভবিষ্যতের নেতা হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে। তা ছাড়া বিজেপির একটি অংশ মনমোহন-রাহুলের মধ্যে দূরত্ব তৈরিতে সক্রিয়। আজ কিন্তু সেই প্রচেষ্টাতেও জল ঢেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.