বহুতলে ‘আত্মহত্যা’
নিরাপত্তার কিছু ত্রুটি মানছেন আবাসন কর্তৃপক্ষই
সাউথ সিটি-র এক নম্বর টাওয়ারের ৩৩ তলার অতিথিশালায় যাবেন বলে রিসেপশনের খাতায় সই করেছিলেন মুকুতা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তাঁর মা ও বোনকে নিয়ে আদৌ সেখানে যাননি। পুলিশের দাবি, অতিথিশালার কেয়ারটেকার তাদের জানিয়েছেন, কেউ অতিথিশালায় যে যেতে চাইছেন, তা নিরাপত্তারক্ষীরা ইন্টারকম টেলিফোনে তাঁকে জানাননি। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জেনেছে, আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীরাও খোঁজ নিয়ে জানার চেষ্টা করেননি, শেষ পর্যন্ত ওই মহিলারা অতিথিশালায় ঢুকেছিলেন, না ঢোকেননি।
এই পরিস্থিতিতে ওই অভিজাত আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আরও।
যেমন, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও পুলিশের জানা নেই, রাত পৌনে ১২টা থেকে রাত আড়াইটে (যে সময়ে ওই তিন জন মহিলার দেহ উদ্ধার হয়) পর্যন্ত তিন মহিলা কোথায় ছিলেন। যদি ধরেও নেওয়া যায়, তাঁরা ছাদে ছিলেন, তা হলে সেখানে কি নিরাপত্তারক্ষীরা টহল দিয়েছিলেন?
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সাউথ সিটি আবাসনের
সামনে মানুষের জটলা। শুক্রবার সকালে। —নিজস্ব চিত্র
আর কী কী স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে? পুলিশ বলছে, রাত আটটা নাগাদ মারুতি জেন গাড়িটি ঢোকার কথা নিরাপত্তারক্ষীদের খাতায় উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ওই গাড়িটি কোন সময়ে বেরিয়ে গিয়ে রাত দশটা নাগাদ ফের ভিতরে ঢুকল, তার কোনও উল্লেখ নেই। অথচ, নিরাপত্তার খাতিরে তার উল্লেখ থাকা জরুরি।
আবাসনের প্রতিটি টাওয়ারে চারশোরও বেশি ফ্ল্যাট রয়েছে। কিন্তু, মাত্র তিন জন নিরাপত্তারক্ষী রাতে প্রতিটি টাওয়ার পাহারা দেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন বসেন রিসেপশনে। অন্য জন টাওয়ারের বাইরের দিক পাহারা দেন। পুলিশ জেনেছে, টাওয়ারের প্রতিটি তলে রক্ষী থাকেন না। একই সঙ্গে পুলিশ এটাও জেনেছে যে, এক নম্বর টাওয়ারে যে আটটি সিসিটিভি লাগানো রয়েছে, তার সব ক’টিই রিসেপশনে। ছাদে বা ল্যান্ডিংয়ের কোথাও সিসিটিভি লাগানো নেই।
আবাসনের ‘প্রপার্টি ম্যানেজার’ দেবাশিস দাসঠাকুর অবশ্য মেনে নিয়েছেন, নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করার সুযোগ রয়েছে। যদিও এ দিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর দাবি, “রিসেপশনের খাতা খতিয়ে দেখে মনে হয়েছে, নিরাপত্তারক্ষীরা কোনও ভুল করেননি।” একই সঙ্গে তিনি জানান, আবাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আরও বেশি সিসিটিভি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি লাগানোর সুযোগ রয়েছে। বাড়ানো যেতে পারে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও।
পুলিশের কি মনে হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ফাঁক রয়েছে? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “অনেক তথ্য জানা বাকি রয়েছে। আরও অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার কাজও বাকি। তবে যদি প্রমাণিত হয়, আবাসনের বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার গাফিলতি ছিল, তবে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।”

ফাঁক কোথায়
তিন মহিলা কোথায় গেলেন, নিরাপত্তারক্ষীরা তার খোঁজ রাখেননি।
গন্তব্যে পৌঁছে দিতেও কেউ যাননি।
প্রতিটি ছাদে আধ ঘণ্টা অন্তর রক্ষীদের টহল দেওয়ার কথা। তা হয়নি।
একটি টাওয়ারে নজরদারির জন্য রাতে মাত্র তিন জন নিরাপত্তারক্ষী।
আবাসন চত্বরে টহলদার নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কম।
আবাসনের সর্বত্র সিসিটিভির ব্যবস্থা নেই।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.