মন জিততে মুখ খুললেন রোমনি
মুখ খুললেন মিট রোমনি।
বললেন, “বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, বিশ্বকে দূষণের হাত থেকে বাঁচাবেন। আমার প্রতিশ্রুতি অনেক ‘ছোট’ মাপের। আশ্বাস দিচ্ছি, প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ পেলে আপনার ও আপনার পরিবারের জন্য একটি সুস্থ, নিরাপদ ও সচ্ছল আমেরিকা গড়ে দেব।”
বললেন, “আমি খুব আশা করেছিলাম, ওবামা এক জন সফল প্রেসিডেন্ট হবেন। তিনি সফল হলেই আমেরিকা সাফল্যের মুখ দেখতো।”
বললেন, “দশ জনকে নিয়ে একটা কোম্পানি শুরু করেছিলাম। সেই সংস্থাটির ‘বেড়ে’ ওঠার কাহিনি বলে দিচ্ছে, আমেরিকার মানুষ স্বপ্ন দেখে, এবং সেই স্বপ্ন সফলও হয়। কিন্তু ওবামা যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন তো সফল হল না।”
এত দিন রোমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ’ ছিল, তিনি বিশেষ বাগ্মী নন। বক্তা হিসেবে বারাক ওবামার ধারেকাছেই আসেন না। কিন্তু সরকারি ভাবে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে প্রথম বক্তৃতায় সেই ভাবমূর্তি ভেঙে দিলেন রোমনি। পুরোদস্তুর। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর বক্তৃতা শুনে আমেরিকাবাসী বলছেন, এটাই মিট রোমনির জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা।
কেন গুরুত্বপূর্ণ? কারণ এই প্রথম রোমনি স্পষ্ট বললেন, ভেঙে পড়া মার্কিন অর্থনীতিকে কী ভাবে চাঙ্গা করতে চান তিনি। জানালেন, প্রেসিডেন্ট হলে ১ কোটি ২০ লক্ষ নতুন চাকরির সংস্থান করবেন। এর জন্য তিনি পাঁচ দফা সূত্রও দিয়েছেন।
এক, ২০২০ সালের পর আমেরিকাকে নিজের জ্বালানির জন্য কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। আমেরিকার মাটিতে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বিপুল ভাণ্ডার খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। আলাস্কা তো বটেই, নর্থ ডাকোটা, কোলোরাডো, ওহায়োর মতো জায়গাতেও প্রচুর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস মিলছে। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন শুরু হয়ে গেলে দেশে চাকরির সংস্থানও অনেক বেড়ে যাবে। কারণ, নতুন নতুন কারখানা ও সংশোধনগারে অনেক শ্রমিক লাগবে। চাকরির মন্দা কাটানোর এটা যে একটা বড় রাস্তা, তা সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট ভাষায় পৌঁছে দিয়েছেন রোমনি।
দুই, রোমনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, প্রত্যেক আমেরিকাবাসীর জন্য উচ্চমানের শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন। কোন স্কুলে ছেলেমেয়েদের পাঠাবেন, ঠিক করবেন অভিভাবকেরা নিজেই। প্রত্যেকটি শিশু যাতে শিক্ষার সুযোগ পায়, সে দিকেও নজর দেওয়া হবে।
তিন, বিভিন্ন দেশকে বাণিজ্য-অংশীদার বানিয়ে আরও নতুন নতুন বাণিজ্যের পথ খোলা হবে।
চার, শিল্পোদ্যোগীদের নিত্য-নতুন শিল্প গড়তে উৎসাহ দেওয়া হবে। তাঁদের আশ্বাস দিতে হবে যে, আমেরিকার অর্থনীতি কখনওই গ্রিসের মতো ধসে যাবে না। এর জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়তো ভর্তুকি কমাতে হবে। কিন্তু মধ্যবিত্তের উপর করের বোঝা বাড়ানো যাবে না।
পাঁচ, ছোট শিল্পে জোর দেওয়া হবে। উৎসাহ দেওয়া হবে ছোট মাপের শিল্পোদ্যোগীদের।
এখন পর্যন্ত বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, মার্কিন মহিলা ভোটারদের অধিকাংশই ওবামা-পন্থী।
রোমনি কিন্তু তাঁর আজকের বক্তৃতার অনেকটাই ব্যয় করেছেন মহিলাদের উপরে। অনেকেই জানেন, মিটের বাবা জর্জ রোমনি ম্যাসাচুসেট্সের গভর্নর ছিলেন। ১৯৬৮ সালে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীও ছিলেন তিনি।
কিন্তু আজ তাঁর বক্তৃতায় মিট রোমনি বেশি করে উল্লেখ করেন তাঁর মায়ের কথা। জানান, সেনেটের সদস্য হওয়ার জন্য ভোট লড়েছিলেন তাঁর মা। বাহবা দিয়েছেন স্ত্রী অ্যানকেও “আমি ব্যবসার কাজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছি। আর আমার স্ত্রী পাঁচ সন্তানকে মানুষ করার গুরুদায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন, একার হাতে।”
এই অ্যান রোমনিই দু’দিন আগে ট্যাম্পায় রিপাবলিকান দলের জাতীয় কনভেনশনে উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশে বলেছিলেন, “ইউ ক্যান ট্রাস্ট মিট মিটকে আপনারা বিশ্বাস করতে পারেন।”
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর প্রথম বক্তৃতা সেই বিশ্বাস অর্জনের লক্ষেই প্রথম ধাপ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.