বহু জায়গায় মেলে না সরকারি বিকল্প সেচ ব্যবস্থা। বাধ্য হয়েই চড়া দামে বেসরকারি মাধ্যম থেকে চাষের জল কিনতে হয়। এমনই অভিযোগ কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকার চাষিদের।
কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় লক্ষাধিক মানুষজনের বসবাস। বেশির ভাগেরই জীবিকা চাষাবাদ। চাষিদের দাবি, রবি মরসুমে চাষের জন্য প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ওই সময়ে বৃষ্টির জল না মেলায় বিকল্প সেচ ব্যবস্থার উপরেই নির্ভর করতে হয় তাঁদের। কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির তরফে জানা গিয়েছে, কোন কোন জায়গায় কী কী ধরনের বিকল্প সেচ ব্যবস্থা প্রয়োজন তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়। ওই তালিকা অনুযায়ী উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন গভীর নলকূপ বসানোর প্রয়োজন রয়েছে আলাগড়, মুরাগাছা, কৃষ্ণপুর, ন’গাছা, নান্দাই, রংপাড়া, রাধানগর, তামাসাপুর, ঘুঘুডাঙা, রুস্তমপুর, সারগোড়িয়া ও পশ্চিম সাহাপুর গ্রামে।
মধ্য মানের গভীর নলকূপ প্রয়োজন মোট সাতটি। সেগুলি প্রয়োজন ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতের ভবানীপুর, হাটকালনা পঞ্চায়েতের মিরপুর, সুলতানপুর পঞ্চায়েতের গোপালপুর, কাঁকুরিয়া পঞ্চায়েতের জুরেপাড়া, ন’পাড়া, বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের রাধানগর ও বেগপুর পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর এলাকায়।
পাশাপাশি ওই তালিকায় সাতটি মৌজায় পাঁচটি করে অগভীর নলকূপ বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। মৌজাগুলি হল, সূর্যপুর, খড়িনান, বেলকুলি, ভাটরা, কাঁকুরিয়া, মেদগাছি ও মির্জাপুর। এছাড়াও বছর চারেক আগে তৈরি ওই পরিকল্পনাটিতে নান্দাই পঞ্চায়েত এলাকার দুপসা গ্রামে দু’টি ও ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রাম কালনা এলাকায় একটি নদী সেচ প্রকল্প তৈরি করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। তবে সেই তালিকাটি জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হলেও সেচ ব্যবস্থার উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
কালনা ১ ব্লকের নান্দাই পঞ্চায়েতের প্রধান ঈদের আলি মোল্লা বলেন, “সরকারি সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হলে এলাকার কয়েক হাজার চাষি উপকৃত হবে। বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েত এলাকার চাষি রমজান শেখের কথায়, “বোরো মরসুমে ধান চাষের জন্য প্রচুর জলের প্রয়োজন হয়। ওই সময়ে চড়া দামে বেসরকারি মাধ্যম থেকে জল কিনে চাষ করতে হয়। ফলে খরচ প্রতিবারই বেশ বেড়ে যায়। এলাকায় সরকারি ভাবে বিকল্প সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হলে এই সমস্যা তো মিটবেই। পাশাপাশি আরও নানা ধরনেও চাষেও উৎসাহ বাড়বে।” কালনা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শান্তি চাল বলেন, “জেলা প্রশাসন মধ্য মানের গভীর নলকূপ ও অগভীর নলকূপ বসানো ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে। এ ব্যাপারে সেচ দফতর একটিসমীক্ষাও শুরু করেছে। আশা করি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।” তাঁর দাবি, “উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন গভীর নলকূপ ও নদী সেচ প্রকল্পগুলি যাতে বাস্তবায়িত হয়, সে ব্যাপারেও চেষ্টা চলছে।” |