পরপর চুরি, ছিনতাই নিয়ামতপুরে
কমিশনারেটের বর্ষপূর্তির দিনেই নানা অপরাধ
দিনের আলোয় ব্যবসায়ীর হাত থেকে ছিনতাই সোনা, রুপো ও টাকা ভর্তি ব্যাগ। পুলিশ ফাঁড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কার্যালয়ের তালা ভেঙে চুরি জিনিসপত্র। দরজা ভেঙে পরপর চুরি চারটি বাড়িতে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বর্ষপূর্তির দিন ও তার আগের রাতে শিল্পাঞ্চল জুড়ে নানা অপরাধের ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠল এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে নিজের স্কুটারে চেপে দোকানে পৌঁছন নিয়ামতপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ী বঙ্কিম দত্ত। স্কুটারটি দোকানের সামনে রেখে সবেমাত্র দোকানের তালা খোলার জন্য এগিয়েছেন, এমন সময়ে তাঁর হাতের ব্যাগটি ছোঁ মেরে ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় দুই দুষ্কৃতী। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিড়ে মিলিয়ে যায় তারা। চিৎকার করেও তাদের নাগাল মেলেনি বলে জানান বঙ্কিমবাবু।
এই সোনার দোকানের সামনেই ছিনতাই হয়।—নিজস্ব চিত্র।
নিয়ামতপুর পুলিশ ফাঁড়ির ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার একটি কার্যালয়। শুক্রবার সকালে কর্মীরা কাজে গিয়ে দেখেন, দরজার তালা ভাঙা। খবর যায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। পর্ষদের বরাকর সাবস্টেশনের ম্যানেজার সমীর চট্টোপাধ্যায় জানান, বেশ কিছু মিটার-সহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। কম্পিউটার ঘরেরও তালা ভাঙা হয়েছে। কিন্তু কিছু নিতে পারেনি দুষ্কৃতীরা। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার রাতেই নিয়ামতপুর নয়াপাড়া এলাকায় পরপর চারটি বাড়িতে দরজা ভেঙে চুরি করেছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ জানিয়েছে, সব ক’টি ঘটনারই তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থলগুলি পরিদর্শন করা হয়েছে। দুষ্কৃতীরা দ্রুত ধরা পড়বে বলে আশ্বাস পুলিশের।
গত বছর ১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেট। আমূল পরিবর্তন হয়েছে দুই মহকুমার পুলিশি পরিকাঠামোয়। বেড়েছে উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সংখ্যা। সাধারণ পুলিশকর্মীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। হাজারখানেক অস্থায়ী পুলিশকর্মী নিয়োগ হয়েছে। তৈরি হয়েছে মহিলা থানা। দুই মহকুমার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আধিকারিকদের কার্যালয় বসানো হয়েছে। পুলিশের গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। দুষ্কর্ম ও অপরাধ রুখতে একাধিক অত্যাধুনিক গাড়ি এসেছে। কিন্তু এ সবের অনুপাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না, সে প্রশ্নে ডিসিপি (সদর) শীষরাম ঝাঝারিয়ার বক্তব্য, “এই বিষয়টি সাধারণ মানুষই ভাল বলতে পারবেন।”
কমিশনারেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে খুন ও খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে মোট ২২টি। ব্যবসায়ী আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে প্রায় সাতটি। চুরি, ছিনতাই, লুঠপাটের ঘটনার সংখ্যাও প্রচুর। কয়েকটি ঘটনায় তারা আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাধারণ সম্পাদক রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান। তবে কমিশনারেটের কিছু পদক্ষেপে খুশি শিল্প ও বাণিজ্য মহল। রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের মতে, “শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তায় কমিশনারেট কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ করেছে।” তিনি জানান, রানিগঞ্জ-সহ আশপাশের এলাকার জনবহুল অঞ্চলগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসেছে। আর্থিক লেনদেনের সময়ে শহরের পুলিশি টহল বেড়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় নজরদারি বেড়েছে। আসানসোল চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি সুব্রত দত্ত জানান, ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সীমানার থানাগুলি নিয়মিত বৈঠক করে একজোট হয়ে কাজ করায় সীমানা এলাকায় অপরাধ প্রবণতা কমেছে। ট্রাফিক ব্যবস্থাও আগের থেকে উন্নত হয়েছে বলে জানান সাধারণ নাগরিকেরা। ডিসিপি (সদর) শীষরাম ঝাঝারিয়া নাগরিকদের আশা, এক বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে শহরের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার খামতিগুলিও আগামী বছরের মধ্যে কাটিয়ে উঠবে কমিশনারেট।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.