পুলিশ-প্রশাসন পরিস্থিতি বদলের ঢাক পেটালেও বারাসত আছে বারাসতেই! লাঞ্ছনা থেকে দিদিকে বাঁচাতে গিয়ে ওই শহরের যে-কিশোর প্রাণ দিয়েছিল, সেই রাজীব দাসেরই এক পড়শি কিশোরী নিগৃহীত হল বুধবার রাতে। ঘটনাটি ঘটে রাজীব-হত্যার এলাকা স্টেশন রোডেই। বাধা দিতে গিয়ে মার খান কিশোরীটির মা-ও।
২০১১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-র রাতে দিদি রিঙ্কু দাসকে সাইকেলে বসিয়ে বাড়ি ফেরার পথে স্টেশন রোডের অফিসপাড়ায় খুন হয় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী রাজীব। আর বুধবার রাতে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরী মায়ের সঙ্গে বাজার করে স্টেশন রোড থেকে যশোহর রোড হয়ে গেঞ্জিকলের দিকে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হয়। প্রথমে দু’তিনটি যুবক মেয়েটিকে কটূক্তি করে। তাতে কান না-দিয়ে মা-মেয়ে এগোতে থাকায় গালাগালির মাত্রা বাড়ে। কিশোরীটি রুখে দাঁড়িয়ে এক যুবককে চড় মারে। পুলিশ জানায়, তার পরেই দুষ্কৃতীরা মেয়েটির উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে মারধর ও শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। মা প্রতিবাদ করায় পেটানো হয় তাঁকেও।
এলাকার লোকজন বারাসত থানায় ফোন করেন। পুলিশ আসতেই দুষ্কৃতীরা পালায়। পুলিশ মা-মেয়েকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁদের। মেয়েটির মা সেখানে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করে জানান, দুষ্কৃতীরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। এই ঘটনায় রাজু পরমান্ন নামে এক যুবক এবং তার দলবলকে সন্দেহ করছে পুলিশ। শহরের বিজয়নগর এলাকায় গেঞ্জিকলের কাছে রাজু ও তার দলবল রোজ মদের ঠেক বসায় বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাদের বিরুদ্ধে বারবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও কোনও কাজ হয়নি বলে জানান এলাকার লোকজন। গত ২৭ জুলাই রাতেও টিউশন সেরে বাড়ি ফেরার পথে রাজীব খুনের এলাকায় আক্রান্ত হয় এক কিশোরী। বাধা দেওয়ায় প্রহৃত হন তার বাবাও। সে-বার সঙ্গে সঙ্গে এক দুষ্কৃতী ধরা পড়েছিল। কিন্তু বুধবারের ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজীব-হত্যার পরে কয়েক দিন পুলিশি নজরদারি চললেও স্টেশন ও কাছারি ময়দান সংলগ্ন এলাকার পরিস্থিতি আদৌ বদলায়নি। |