কাজিয়া তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীতে
মমতার নির্দেশ শিকেয়, সংঘর্ষে বন্ধ সিটি কলেজ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শৃঙ্খলা’ বজায় রাখার জন্য মঙ্গলবারেই দলীয় ছাত্র সংগঠনের সমর্থকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি, তৃণমূল-সমর্থক ছাত্রদেরই দু’টি গোষ্ঠীর মারামারিতে উত্তেজনা ছড়াল আমহার্স্ট স্ট্রিটের সিটি কলেজে। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চালায় পুলিশ। কর্তৃপক্ষ তিন দিন কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার বেলা ১টা নাগাদ। পুলিশি সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাত্র সংগঠনের দু’টি গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে তুমুল মারপিট হয়। জখম হন তিন ছাত্র। দু’পক্ষের ইট ছোড়াছুড়িতে জখম হয়েছেন এক পুলিশকর্মীও। তার পরে পুলিশ লাঠি চালিয়ে যুযুধান দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরে অধ্যক্ষ মুকুলকান্তি মান্না জানান, ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাই ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গণ্ডগোলের পর সিটি কলেজের সামনে পুলিশি প্রহরা। —নিজস্ব চিত্র
কলেজ সূত্রের খবর, ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়েই তৃণমুল-সমর্থক ওই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় হাঙ্গামা বাধছে। আর এই ছাত্রদের পিছনে রয়েছে তৃণমূলের দুই নেতানেত্রীর মদত। কিছু দিন আগে শিয়ালদহের সুরেন্দ্রনাথ কলেজেও তৃণমূল-সমর্থক দুই ছাত্রগোষ্ঠীর মারামারিতে কর্তৃপক্ষ কলেজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতির সামাল দেন। শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, “কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিদের নিয়ে গড়া একটি পরিদর্শকদল পাঠানো হচ্ছে সিটি কলেজে। রাজনৈতিক রং না-দেখে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে পুলিশ কমিশনারকে।” ব্রাত্যবাবু জানান, আজ, বৃহস্পতিবার পরিদর্শকেরা ওই কলেজে যাবেন। পরিদর্শকদের কাছে দ্রুত রিপোর্ট চেয়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি জানান তিন দিন কলেজ বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন। ওঁকে বলেছি, পরিদর্শকদল যদি মনে করে পরিস্থিতি তেমন উদ্বেগজনক নয়, তা হলে শুক্রবারেই কলেজ খোলা যেতে পারে।”
ব্রাত্যবাবু মনে করেন, এই ঘটনায় কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন বা আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পরিবেশ দ্রুত স্বাভাবিক হবে বলেই তাঁর আশা। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ না-মেনে কলেজে যারা কলেজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের একটি গোষ্ঠীর অভিযোগ, দুপুরে কিছু ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করাতে কলেজে যান। বহিরাগত ‘দুষ্কৃতীদের’ নিয়ে অন্য গোষ্ঠী তাঁদের উপরে চড়াও হয়। মারধর করা হয় সকলকে। আঘাত করা হয় ধারালো অস্ত্র দিয়েও। অভিযোগ, তৃণমূল-সমর্থক ছাত্রদেরই একটি গোষ্ঠী কলেজে ছাত্রভোট করাতে দিচ্ছে না। এ দিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন কলেজ-কর্তৃপক্ষ। তাতে বাধা দেওয়ার জন্যই ইচ্ছাকৃত ভাবে গণ্ডগোল শুরু করা হয়। গত সোমবার একই কারণে ঝামেলা বাধানো হয়েছিল।ওই ছাত্রদের অভিযোগ, ‘বিরোধী’ ছাত্রদের পিছনে মদত রয়েছে সিটি কলেজেরই প্রাক্তন পড়ুয়া, সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া সজল ঘোষের। অভিযোগ অস্বীকার করে সজলবাবু বলেন, “আমার নাম ওই ঘটনার সঙ্গে জড়ানো হচ্ছে বলে শুনেছি। এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত।” অন্য এক দল ছাত্রের অভিযোগ, কলেজে হামলা চালাচ্ছে সোমেন মিত্র-শিখা মিত্রের ঘনিষ্ঠ তৃণমূল ছাত্রনেতা তমোঘ্ন ঘোষের অনুগামীরা। তমোঘ্ন অবশ্য বলেন, “ওই ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” ছাত্রদের দু’টি গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে শিকেয় উঠছে পঠনপাঠন।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.