মাটির ব্যবসার ‘সিন্ডিকেট’-এর দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ‘নিগৃহীত’ ভাঙড়ের সেই মহিলা মঙ্গলবার ফের ‘মার খেলেন’। ফের তাঁকে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল ভাঙড়ের প্রাক্তন তৃণমূূল বিধায়ক আরাবুল ইসলামের ‘অনুগামী’দের বিরুদ্ধে। মহিলার ক্ষোভ, তাঁর এ বারের ‘অপরাধ’ পুলিশের কাছে আগের নিগ্রহের অভিযোগ জানানো। এ দিন তাঁকে জিরেনগাছা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
কলকাতার উপকণ্ঠে বিভিন্ন ‘উন্নয়নমূলক’ কাজের জন্য মাটি সরবরাহকারী চক্রের চাঁইদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোয় রবিবার ‘নিগৃহীত’ হন ভাঙড়ের কাশীপুর থানার পশ্চিম সাতুলিয়ার বিবাহিত ওই মহিলা। বেধড়ক মারধর এবং শ্লীলতাহানি করা হয় বলে তিনি পাঁচ জনের নামে কাশীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের মধ্যে সামাদ মোল্লা, বাহারুল মোল্লা ও মতিয়ার মোল্লা নামে আরাবুল ‘ঘনিষ্ঠ’ তিন জন রয়েছে। পুলিশ তাদের ধরতে পারেনি। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা দু’দিন ধরে ‘পলাতক’।
মঙ্গলবার কী হল?
ওই মহিলার দাবি, রবিবারের মারের চোটে কানে ব্যথা হওয়ায় এ দিন তিনি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় তাঁকে ‘মারধর’ করা হয়। তাঁর অভিযোগ, “সামাদ, মতিয়ার, বাহারুল, আশরাফুল ও শুকুর মোল্লা আমাকে ঘিরে ধরে। বলে, ‘কেন থানায় গিয়েছিলিস’? এর পরেই শুরু হয় চড়, ঘুষি। লাঠি দিয়েও ওরা আমায় মারতে থাকে। শ্লীলতাহানিও করে। তার পরে আমাকে টেনে পাশের খানায় ফেলে দিয়ে যায়।” এ দিনও তিনি পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। মহিলার ভাই বলেন, “দিদিকে মারধরের খবর পেয়ে ওঁর বাড়ি যাই। ভয়ে গ্রামের কেউ কিছু জানায়নি। পরে খুঁজতে খুঁজতে দিদিকে রাস্তার পাশে খানায় পড়ে থাকতে দেখি। ওঁকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
অভিযুক্তদের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’র কথা উড়িয়ে দিয়ে রবিবারের ঘটনার পরে আরাবুল বলেছিলেন, “কোথায় কে কাকে মারধর করছে, আমি তা জানি না। কেউ কোনও অপকর্ম করলেই আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। আমি এ সব কিছুই জানি না।” মঙ্গলবারের ঘটনার পরেও একই কথা বলেছেন এই তৃণমূল নেতা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পূর্ব) কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই জানিয়েছেন, ঠিক কী ঘটেছে, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। |