পুকুর না রাস্তা, দেখে বোঝা দায়। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তার বড় বড় গর্তে জল জমে এমনই চেহারা নিয়েছে বাদুড়িয়া-বেড়াচাঁপা রাস্তার একটি বড় অংশ। গাড়ি উল্টোচ্ছে। স্কুলে যাওয়ার পথে গর্তে পড়ে জখম হচ্ছে পড়ুয়ারা। মাঝেমধ্যেই হচ্ছে দুর্ঘটনা। অথচ প্রশাসন সব জেনেও নীরব। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার নতুন হাটখোলার কাছে প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শেষে পুলিশ গিয়ে বিডিও ও পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলে চলতি মাসের মধ্যে রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন। এরপরে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়া-বেড়াচাঁপার ওই ১৩ কিলোমিটার উপর নির্ভর করেন উত্তর খাসপুর, মজারদিঘি, খাসপুর, উত্তর শেরপুর, আগাপুর, দক্ষিণ শেরপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। গ্রামগুলির কয়েক হাজার মানুষের হাটবাজার, থানা-সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে যাওয়ার ভরসা এই রাস্তা। এ দিকে, রাস্তার বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে পিচ উঠে খানাখন্দে গোটা রাস্তা ভরে গিয়েছে। বাদুড়িয়ার যদুরআটি দক্ষিণ পঞ্চায়েতের নতুনহাটখোলা, হাসপাতাল মোড়ের অবস্থা আরও শোচনীয় বলে অভিযোগ এলাকার মানুষের। সেখানে কিছু জায়গার্য় ইট ফেলে গর্ত বোজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেই ইটও ভেঙে গিয়েছে। কোথাও আবার বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির সময় জল জমে রাস্তা পুকুরের চেহারা নিয়েছে। ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বৃহস্পতিবার সকালে ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নতুনহাটখোলার কাছে একটি পণ্যবোঝাই অটো উল্টে জখম হয়েছেন দু’জন। এর পরেই এলাকার ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা টায়ার, লোহার বিম, চটের বেড়া ফেলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। |
এলাকার সাহাবুদ্দিন তরফদার, বান্টি মুখোপাধ্যায়, গোলাম রশিদ বলেন, “রাস্তাটির দীর্ঘদিন ধরে কোনও সংস্কার হয়নি। এবড়ো-খেবড়ো রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বর্ষাকালে ওই রাস্তা দিয়ে প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মাঝেমধ্যেই গর্তে পড়ে জখম হন এলাকার লোক। জল-কাদা মেখে বাড়ি ফেরে ছাত্রছাত্রীরা। আর অসুস্থ মানুষকে নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাই দুস্কর।” স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাসের, লিয়াকত মণ্ডল পঞ্চায়েত প্রধান কাজি আব্দুর রশিদ বলেন, “ওই বিপজ্জনক রাস্তাটি দিয়ে এতগুলো গ্রামের লোককে প্রত্যেকদিন যাতায়াত করতে হয়। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে মাঝেমধ্যেই এলাকায় অবরোধ-বিক্ষোভ হয়। প্রশাসনের কর্তারা এসে আশ্বাস দেন। ওই পর্যন্ত। তারপর আর কোনও কাজ হয় না।” বাদুড়িয়া থানার এএসআই অনুপম সরকার অবশ্য বলেন, “বেহাল রাস্তাটির অবিলম্বে মেরামত প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে। দিন কয়েকের মধ্যেই মেরামতির কাজ শুরু বলে তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।” |