বিজেপিকেও ‘কালি’ মাখাতে চাইছেন সনিয়া
ক্রমণই আত্মরক্ষার সেরা উপায়। এই নীতি মেনে কয়লা কেলেঙ্কারি নিয়ে বিজেপির চাপ সৃষ্টির কৌশলকে ঠেকাতে পাল্টা আক্রমণে যেতে চাইছেন সনিয়া গাঁধী। কংগ্রেসের তরুণ তুর্কিরাও এই রণনীতির পক্ষে। তাঁদের সঙ্গে আজ সহমত প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী।
কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে সিএজি-র রিপোর্টে মনমোহন-সরকার যে বিপাকে পড়েছে, তাতে সন্দেহ নেই। এই সুযোগে বিজেপির একটা অংশও সরকারের উপর প্রবল চাপ তৈরি করতে চাইছে। গোটা অধিবেশনের জন্য সংসদ অচল করে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে। লোকসভা থেকে গণইস্তফার প্রস্তাবও দিয়েছেন কোনও কোনও বিজেপি নেতা। কিন্তু বিজেপির এই চাপের কাছে মাথা না নুইয়ে, পাল্টা আক্রমণে যেতে চাইছে কংগ্রেসও। দলের তরুণ সাংসদরা চান, বিজেপির ‘মুখোশ খুলে দিতে’ কংগ্রেসও পাল্টা আক্রমণে নামুক। সনিয়ার বার্তা মেলার পরেই আজ ‘কালি মাখানোর’ কাজ শুরু করে দিয়েছে কংগ্রেস। সংসদে সরকারের সাংসদ-মন্ত্রীরা বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিজেপি যতই দাবি করুক, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের কোনও প্রশ্নই উঠছে না। এমনকী গণইস্তফার বিষয়টিও নোহতই বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা। কারণ বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও কয়লাখনি বণ্টনে নিলাম না করার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রকে বেশ কয়েকটি চিঠি দিয়েছিল।
আজ সকালে বিজেপির হট্টগোলে লোকসভা প্রথম বারের জন্য মুলতুবি হয়ে যাওয়ার পরেই সন্দীপ দীক্ষিত, দীপেন্দ্র সিংহ হুডা, সঞ্জয় নিরুপম, জ্যোতি মির্ধা, অনু ট্যান্ডনের মতো তরুণ সাংসদরা সনিয়ার সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠক সেরে বেরিয়ে এক সাংসদ বলেন, “আমরা ওঁকে জানিয়েছি, বিজেপি যে অন্যায় ভাবে সংসদ অচল করে রাখছে, তা সাধারণ মানুষকে বোঝানো হোক। উনি তাতে সহমত হয়েছেন।” কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তরুণ সাংসদদেরই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণে সামনের সারিতে রাখা হবে। দলের মুখপাত্র জনার্দন দ্বিবেদী বলেন, “বিজেপি এখানেও পিছিয়ে রয়েছে। কারণ ওদের দলে কংগ্রেসের মতো নবীন-প্রবীণ নেতৃত্বের মেলবন্ধনটাই নেই।” কিন্তু রাহুল নিজে কেন বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণে সামনে আসছেন না, সে প্রশ্ন উঠেছে। দ্বিবেদীর জবাব, “সরকার ও দলে দায়িত্ব ভাগ করা আছে। সেখানে নাক না গলানোটা দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া নয়। দায়িত্ব পালন করা।”
কংগ্রেস বোঝাতে চাইছে, সিএজি-র রিপোর্ট নিয়ে আলোচনায় এলে বিজেপি-ই বিপাকে পড়বে। নিলাম না করে কয়লা খনি বণ্টন করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে সিএজি রিপোর্ট দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিও নিলামে আপত্তি তুলেছিল। তার প্রমাণস্বরূপ চিঠিও রয়েছে সরকারের কাছে। সংসদে বিতর্ক হলে প্রধানমন্ত্রী তাতে অংশ নিতে রাজি আছেন। কিন্তু তা সত্বেও বিজেপি আলোচনায় আগ্রহী নয়। বিজেপির বর্তমান নেতৃত্ব সংসদ অচল করে রাখার যে নীতি নিয়েছেন, অটলবিহারী বাজপেয়ী কোনও দিন এমন ‘অগণতান্ত্রিক’ পথে হাঁটেননি বলে আজ মন্তব্য করেছেন জনার্দন দ্বিবেদী।
কিন্তু প্রশ্ন হল, দু’পক্ষই আক্রমণের রাস্তা থেকে না সরলে সংসদের অচলাবস্থা কাটবে কী ভাবে? আজ রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি প্রস্তাব দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বিরোধী দলনেতাদের সঙ্গে সংসদ চালু রাখার বিষয়ে কথা বলুন। সরকারের তরফে কী কথা বলা হবে? কংগ্রেস নেতৃত্বের জবাব, বিরোধীরা যদি আলোচনার পরিবেশ তৈরি করেন, তা হলে অবশ্যই কথা হবে। আজ লোকসভার নেতা সুশীলকুমার শিন্দে অবশ্য সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথাবলেছেন। কংগ্রেসও দেখাতে চাইছে, বাম ও অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলি সংসদ অচল করে রাখার পক্ষে নন। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপিকে ‘এক ঘরে’ করার চেষ্টাও করছে কংগ্রেস।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.