ইনক্রিমেন্টের বাড়তি টাকা যোগ করে ‘পে স্লিপ’ বিলির পরেও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম কর্মীদের জুলাই মাসের বেতনের সঙ্গে ওই বর্ধিত টাকা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এনবিএসটিসি সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রতি বছর জুলাই মাসে অন্যান্য সরকারী কর্মীদের মত নিগমের কর্মীরা ইনক্রিমেন্ট পান। ফি মাসে বেতন বিলির কয়েকদিন আগে কর্মীদের পে স্লিপ বিলি করা হয়। জুলাই মাসের বেতন নিয়েও কয়েকদিন আগে কর্মীদের অনেককে পে স্লিপ দেওয়া হয়। তাতে ইনক্রিমেন্ট যুক্ত করে বেতনের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। তার পরেও অবশ্য জুলাই মাসের বকেয়া বেতনের সঙ্গে ওই ইনক্রিমেন্টের বর্ধিত টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। ২২ আগস্ট নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কোচবিহার, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ ও বহরমপুর ডিভিসনের ম্যানেজারদের চিঠি দিয়ে ইনক্রিমেন্ট যুক্ত না করে জুলাইয়ের বেতন বিল তৈরির নির্দেশ দেওয়ায় ওই ব্যাপারে কর্মীদের উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছে। নিগমের ইনটাক অনুমোদিত এনবিএসটিসি ওয়ার্কাস ইউনিয়ন ওই বিষয়ে আরও একধাপ এগিয়ে অভিযোগ তুলেছে, কর্মীদের মধ্যে বিলি করা ইনক্রিমেন্ট যুক্ত পে স্লিপ ফিরিয়ে নিচ্ছেন নিগম কর্তৃপক্ষ। গোটা ঘটনায় এনবিএসটিসি’র অন্দরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর সি মুরুগণ অবশ্য বলেছেন, “নিয়মমেনেই কর্মীরা ইনক্রিমেন্টের টাকা পাবেন। এজন্য রাজ্য সরকারের কাছে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা বাড়তি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। ওই বরাদ্দ পেলেই ইনক্রিমেন্ট মিটিয়ে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে নিগমের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জানিয়েছেন, পে স্লিপে বর্ধিত টাকা উল্লেখ রয়েছে বলে তা ফিরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। ইনক্রিমেন্টের বরাদ্দ হাতে আসেনি বলে আমরা ওই টাকা বাদ দিয়ে বিল করতে বলেছি। এনিয়ে বিভ্রান্তির ব্যাপার নেই।” এনবিএসটিসি’র কর্মীদের বড়অংশই অবশ্য ওই আশ্বাসে আশ্বস্ত নন। ইনটাকের এনবিএসটিসি ওয়াকার্স ইউনিয়ন নেতৃত্ব বুধবার কোচবিহারে উদ্ভুত পরিস্থিতি পর্য্যালোচনার জন্য বৈঠক করেন। ওয়ার্কাস ইউনিয়নের সম্পাদক সত্যানন্দ দত্ত বলেন, “এমনিতেই ফি মাসে বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। তার মধ্যে জুলাইয়ের বেতনের জন্য বিলি করা পে স্লিপে ইনক্রিমেন্ট যোগ করে বিলি করা হলেও অনেকের থেকে তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এমনকি ইনক্রিমেন্ট ছাড়া বিল করার নির্দেশও দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ছাড়া ইনক্রিমেন্ট বন্ধের এমন প্রবণতা উদ্বেগজনক। গোটা বিষয়টি আমরা রাজ্য নেতাদের জানাচ্ছি। তার পরেই এসব নিয়ে পরিবহণ মন্ত্রীর কাছে দরবার করা হবে।” সিটুর এনবিএসটিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সম্পাদক জগতজ্যোতি দত্ত বলেন, “জুলাই মাসের বেতনের সঙ্গে ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে কর্মীরা উপকৃত হতেন। আমরা ওই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য এমডি’র সঙ্গে কথা বলব।” নিগমের এনবিএসটিসি ড্রাইভার্স অ্যান্ড তৃণমূল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রহমান অবশ্য ওই বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তির জায়গা নেই বলে দাবি করেছেন। তৃণমূল প্রভাবিত ওই ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুর রহমান বলেন, “আগেভাগে ইনক্রিমেন্ট যোগ করে পে স্লিপ তৈরি করে কর্মীদের অনেককে তা দেওয়া হয়। কারও স্লিপ ফেরত নেওয়া হয়নি। পরে নির্দেশ জারি করে আগের বেতন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বরাদ্দ এলেই ইনক্রিমেন্টের টাকাও সকলে পেয়ে যাবেন। এ নিয়ে অযথা নানা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।” |