লজের ঘরে সঙ্গীকে খুন করে এক যুবক পালিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৩টা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বর লাগোয়া ওই লজ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম নিবাস শর্মা (২২)। ওই যুবকের বাড়ি গ্যাংটকের আরিথাংয়ে। তাঁর গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত দীপক গুরুঙ্গের বাড়িও আরিথাংয়ে। পুলিশ সন্দেহ করছে, ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় নাইলনের দড়ি বা তার জাতীয় কিছু জড়িয়ে খুন করা হয়েছে ওই যুবককে। ঘটনার তদন্তে সেখানে যান শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ রবীন্দ্রনাথ এবং অ্যাসিট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ প্রদীপ পাল।
শিলিগুড়ির ডেপুটি কমিশনার ও জি পাল বলেন, “সঙ্গীর হাতে ওই যুবক খুন হয়েছে বলে ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে। তারা ২ জন একসঙ্গে হোটেলে উঠেছিল। সকালে একজন বেরিয়ে যায়। তার পরেই আরেকজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের চেষ্টা হচ্ছে। মৃতের পরিবারের সঙ্গেও যোগাযোগের চেষ্টা হচ্ছে। তাহলে খুনের কারণ জানা যাবে।” ঘটনার তদন্তে পুলিশের একটি দল গ্যাংটক যাবে বলে ডেপুটি কমিশনার জানান।
লজের ম্যানেজার দীনবন্ধু রায় জানান, নিবাস এবং দীপক দু’জনেই গাড়ির চালক। মাঝে মধ্যেই তাঁরা শিলিগুড়িতে আসতেন। এর আগেও ওই হোটেলেও দু’জনেই আলাদা আলাদা দিনে ছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই দু’জনেই হোটেল ম্যানেজারের মুখ চেনা ছিল। |
মঙ্গলবার রাত ৭টা নাগাদ দু’জনে ওই হোটেলে যান। দীপক তার চালকের লাইন্সেস জমা নিয়ে একটি রুম ভাড়া নেন। সেখানে স্নান সেরে ফের তারা বাইরে বেরোন। রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ দু’জনে ফের হোটেলে যান। এদিন সকাল ৭টা নাগাদ দীপক হোটেল থেকে বেরিয়ে পড়েন। হোটেলের এক কর্মীকে দুপুর ৩টার পরে নিবাসকে ডেকে দিতে বলেন।
লজের কর্মী বিকাশ দেবনাথ এক কিশোর বলে, “৩টার কিছু পড়ে আমি ওই রুমে গিয়ে দেখি দরজা খোলা রয়েছে। ভেতরে ঢুকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে তাঁর শরীরের হাত দেই। শরীর শক্ত হয়েছিল। সন্দেহ হওয়ায় আমি ম্যানেজারকে জানাই।” সে জানায়, নিবাসের মুখ বালিশের দিকে ছিল। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই লজের ম্যানেজার বলেন, “ওই যুবকরা গাড়ির চালক বলে আমি আগে থেকেই জানতাম। এদিন তাদের গাড়ি খারাপ হয়েছে বলে গ্যাংটকে ফিরতে পারবে না বলে আমাকে জানায়। তাদের মধ্যে রাতে ঠিক কি হয়েছে জানি না। আমরা বাইরে থেকে কোনও আওয়াজ পায়নি।”পুলিশ সূত্রের খবর, স্টেশন চত্বরে রেলের জমি দখল করে বেশ কিছু লজ গড়ে উঠেছে। সেগুলির কোনও বৈধ কাগজপত্র নেই বলে অভিযোগ। এক চালা বাড়িতে বেশ কিছু ঘর তৈরি করে লজের ব্যবসা চলছে। যে লজটিতে এদিন খুনের ঘটনা ঘটেছে সেটিও রেলের জমিতে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর জয়দীপ নন্দী বলেন, “রেলের জমিতে বেশ কিছু বেআইনি লজ গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে। এখানে নিরাপত্তা যাতে আরও জোরদার করা হয় সে ব্যপারে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।” |