|
|
|
|
এসএসসি: কোপে ছাপাখানাও |
পরীক্ষা-বিভ্রাটে অফিসার-সহ বদলি পাঁচ জন |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্কুলশিক্ষক বাছাইয়ের পরীক্ষায় বিভ্রাটের ঘটনায় জোড়া দাওয়াইয়ের ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার।
• ওই নিয়োগ পরীক্ষায় বিভ্রাটের পরিপ্রেক্ষিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র পাঁচ অফিসার-কর্মীকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর। পাঁচ জনের মধ্যে আছেন কমিশনের এক সহ-সচিবও। ওই ডব্লিউবিসিএস অফিসারকে সরিয়ে কোথায় নিয়োগ করা হবে, সেই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে সরকারের তরফে বুধবার জানানো হয়েছে।
• এ বছর যে-ছাপাখানায় ওই পরীক্ষার সব নথি ছাপার কাজ হয়েছে, আগামী বছর তাদের যাতে কোনও দায়িত্ব দেওয়া না-হয়, কমিশন-কর্তৃপক্ষকে সেই ব্যাপারেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে বলে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের বৈঠকে এই ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত ভাবে কিছু বলতে চাননি। বুধবার তিনি বলেন, “চেয়ারম্যানকে বলেছি, ভবিষ্যতে আমাদের আরও সতর্ক ভাবে কাজ করতে হবে। কমিশনের কলকাতা ও আঞ্চলিক দফতরগুলির কয়েক জন কর্মী-আধিকারিককে অন্য জায়গায় সরানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
এসএসসি দীর্ঘ দিন ধরেই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নিয়ে আসছে। এ বছর ২৯ জুলাই ছিল এসএসসি-র লেখা পরীক্ষা। রাজ্য জুড়ে বেশ কিছু পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র নিয়ে বিভ্রাট দেখা দেয়। অনেক পরীক্ষার্থীই পরীক্ষা দিতে পারেননি। আগামী ২ সেপ্টেম্বর পাঁচটি কেন্দ্রে ফের পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। কী করে এমন গোলমাল হল, কমিশনের কাছে সেই ব্যাপারে সবিস্তার রিপোর্ট চেয়েছিলেন ব্রাত্যবাবু। রিপোর্টে দোষী ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করার নির্দেশও দেন তিনি। সম্প্রতি সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে।
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টেই সহকারী সচিব-সহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করেন এসএসসি-র চেয়ারম্যান। কমিশনের ‘অন্তর্ঘাত’-এর জেরেই যে এই বিভ্রাট, প্রথম থেকে তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে আসছেন চিত্তরঞ্জনবাবু। তাঁর রিপোর্টেও সেই সন্দেহের প্রতিফলন ঘটেছে বলে স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের একাংশের মত। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “যাঁদের বদলি করা হচ্ছে, তাঁদের কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, তাঁরা কমিশনে কাজ করতে চান না। এর থেকে মনে হয়, কমিশনের আধিকারিকদের মধ্যেও পারস্পরিক বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে।” কমিশনের তরফে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। চেয়ারম্যানও এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি।
কিন্তু চেয়ারম্যানের রিপোর্ট এবং তার ভিত্তিতে দফতরের নেওয়া সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
• পরীক্ষা সংক্রান্ত গোপন সব সিদ্ধান্ত নেন চেয়ারম্যান। অন্য আধিকারিকেরা তার সঙ্গে যুক্ত থাকেন না। তাই চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে অধস্তনদের উপরে কেন দায় চাপানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে দফতরের মধ্যেই। বিভ্রান্তিরও সৃষ্টি হয়েছে।
• এ বার যে-ছাপাখানা ওই পরীক্ষার কাজ করেছে, সেই সরকারি প্রেস সাধারণত কোনও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কাজ করে না। আগের বছরগুলিতেও ওই ছাপাখানা এসএসসি-র কাজ করেনি। প্রশ্ন উঠেছে, ওই প্রেসকে এ বার দায়িত্ব দেওয়া হল কেন? পরের বার তা কেড়েই বা নেওয়া হচ্ছে কেন? স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, “ছাপাখানাও ঢিলেঢালা ভাবে কাজ করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে। তাই ওই ছাপাখানাকে আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার দায়িত্ব দিতে বারণ করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|