পূর্ব কলকাতা: লেকটাউন, বারাসত
দুর্গম যাত্রা
স্বপ্ন-ভাঙা সড়ক
সড়ক নিয়ে শহর কিংবা শহরতলির যাত্রীদের স্বপ্ন ছিল। কিন্তু, প্রতি বছর বর্ষায় সেই স্বপ্ন ভেঙে যায়। খালের চেহারা নেয় নিমতা থেকে কল্যাণী পর্যন্ত বিস্তৃত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে। অথচ চালকদের থেকে কর আদায় করা হয় নিয়মিত। কর দিতে দীর্ঘ লাইন পড়ে। অশান্তি হয়। অভিযোগ, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
আগেই অভিযোগ উঠেছিল, নিয়ম মেনে এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি হয়নি। প্রস্থে কম। গাছে ঢাকা বাঁকগুলি দুর্ঘটনাপ্রবণ। এর পরে রয়েছে অসংখ্য গর্ত। অসাবধান হলেই বিপদ। কিন্তু এই রাস্তা ব্যবহারের জন্য টোলপ্লাজায় নিয়মিত কর দিতে হয়। টোলপ্লাজার কর্মীদের দাবি, কর আদায়ের পরে সে টাকা কেএমডিএ-র কোষাগারে জমা পড়ে। রাস্তা সারানোর ঠিকা দেয় কেএমডিএ। তবে, রাস্তার বেহাল দশার কারণে কর আদায় খানিকটা কমে গিয়েছে।
রাস্তার অবস্থা এমনই যে, অনেক চালক রাতের দিকে এই রাস্তা ব্যবহার না করে বিটি রোড ধরেন। যদিও বিটি রোড ও যশোহর রোডের চাপ কমাতেই বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে থেকে কল্যাণী পর্যন্ত এই এক্সপ্রেসওয়েটি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কয়েক দফায় রাস্তাটি তৈরি হয়। তবে জমি অধিগ্রহণ জটে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ আটকে রয়েছে। শেষ পর্বে কাজ হয় ঘোলা থেকে নিমতা পর্যন্ত অংশটির। উদ্বোধন করার সময়ে তৎকালীন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য মাস তিনেকের মধ্যেই বাকি অংশের কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন। কিন্তু তার পরে আর কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ।
নতুন অংশটির অনেক জায়গায় রাস্তা ভেঙে বসে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের এই অংশে গাড়ির চাপ কম। বেলঘরিয়া থেকে বিরাটি পর্যন্ত এমবি রোডটি অপ্রশস্ত এবং রাস্তার নানা জায়গায় বাজার বসে বলে ভারী গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ। ফলে উত্তরবঙ্গগামী ট্রাক বা বাস সোদপুর-মধ্যমগ্রাম রোড দিয়ে বাইপাস হয়ে ঘোলা মোড় থেকে এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। তার পরেও এই অংশে বড়সড় গর্ত তৈরি হয়েছে।
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘বর্ষার শুরুতেই রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গা ভেঙে গিয়েছে। এতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকছে। কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই এক্সপ্রেসওয়েটি চার লেনের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রশাসনিক ভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক রাস্তাটির হাল খতিয়ে দেখে অবিলম্বে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষকে রিপোর্ট দেবেন।’’
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “ওই রাস্তাটি চার লেনের করা হচ্ছে। রাস্তাটির বেহাল অবস্থা খতিয়ে দেখে খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.