এক দিকে চাঁদের হাট। অন্য দিকে আঁধার।
গোটা দিল্লি আজ ব্যস্ত থাকল অলিম্পিয়ানদের সংবর্ধনায়। শুধু পদকজয়ীরা নন, দিনের নানা অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে পদক না পাওয়া ভারতীয় ক্রীড়াবিদদেরও। কিন্তু পদকজয়ীদের যখন পুরস্কার, ভালবাসার বন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে তখন পদকহীনরা ছিলেন একেবারেই আড়ালে। তাঁদের দিকে কেউ তাকানোরও প্রয়োজন মনে করছিলেন না, কথা বলা তো দূরে থাক।
মন্ত্রী থেকে শুরু করে ফেডারেশন কর্তা, স্পনসর, কর্পোরেট জগতের লোক কারও হাতে মালা, কারও হাতে চেক। সবাই ছুটছেন এক দিকে। আর সে দৃশ্য দেখতে দেখতে বক্সার মনোজ কুমারের চোখ ভিজে উঠল। অলিম্পিকে বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ছিটকে যেতে হয়েছিল। আজ ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়াম এবং তার আগে বক্সিং ফেডারেশনের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হাজির থাকা মনোজ কান্নাচাপা গলায় বলছিলেন, “আমি কিন্তু অলিম্পিকে হারিনি, হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পদকজয়ীদের হিংসা করছি না। বরং প্রতিজ্ঞা করছি পরের অলিম্পিকে নিরাশ করব না।” |
এক দিকে হতাশা, অন্য দিকে আবেগের বিস্ফোরণ। সকাল থেকে তিন-চার জায়গায় সংবর্ধনা নিয়ে স্বভাতই আপ্লুত সুশীল-গগন নারঙ্গ, মেরি কম-রা। ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়ামে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের দেওয়া সংবর্ধনায় পুরস্কার প্রদানের পর দশটি খোলা জিপে করে অলিম্পিয়ানদের নিয়ে যাওয়া হয় ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতি পর্যন্ত। এই অনুষ্ঠানে অবশ্য অনুপস্থিত ছিলেন অভিনব বিন্দ্রা।
তবে পদকজয়ীদের মধ্যেও অসন্তোষের ছায়া। যেমন, লন্ডন অলিম্পিকে রুপোজয়ী শু্যটার বিজয় কুমার। পদক জয়ের পর সেনাবাহিনীতে তাঁকে সুবেদার মেজর পদে উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু বিজয় বলছেন, “আমার পদক জয় ১০ দিন বাদেই আপনারা ভুলে যাবেন। পদোন্নতিতেও আমি খুশি নই। একটা কমিশনড পদ আশা করেছিলাম।” তবে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সেনা প্রধান বিক্রম সিংহ বলেছেন, বিজয়কে শিগগিরই অফিসার পদ দেওয়া হবে।
বাকিরা ভুলে গেলে কী হবে, বক্সিং ফেডারেশনের কর্তারা কিন্তু পদকহীনদের কথা ভুলে যাননি। অলিম্পিক থেকে শূন্য হাতে ফেরা বক্সারদের একসঙ্গে মোট ১০ লাখ টাকা দিচ্ছে তারা। তবে এ দিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সেলের দেওয়া সংবর্ধনায় তাল কিছুটা কেটে যায় চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা হওয়ায়। এমনকী ক্রীড়াবিদদের নামও ঠিকঠাক ঘোষণা করা হয়নি। |