পুলিশকর্মীর চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে আদালত থেকে পালিয়েছিল দুই বিচারাধীন বন্দি। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি। রবি বাউরি নামে এক বন্দিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেছে পুলিশ। অন্য জন সোনু পিল্লাই পালাতে পেরেছে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে রঘুনাথপুর আদালতে।
রবি এর আগেও বিচারাধীন থাকাকালীন বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শৌচালয় যাওয়ার নাম করে পুলিশি প্রহরা এড়িয়ে হাসপাতালের দোতলার জানলা থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়েছিল। গত এপ্রিলে রঘুনাথপুর আদালতে সে আত্মসমর্পণ করে। রবি, সোনু দু’জনেরই বাড়ি আদ্রায়। তাদের নামে পুরুলিয়ার বিভিন্ন থানায় একাধিক অভিযোগ আছে। পুলিশ সূত্রের খবর, আদ্রায় মোটরবাইক ছিনতাই করে পালানোর সময়ে ঝাড়খণ্ডের পাঞ্চেত থানা এলাকায় ধরা পড়েছিল রবি ও সোনু। পরে তাদের ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেল থেকে নিয়ে আসা হয় রঘুনাথপুরে। তার পরেই জেলার বিভিন্ন থানায় অপরাধে জড়িত থাকার ঘটনাগুলির বিচার শুরু হয়েছিল ওই দুই জনের। |
এ দিন পুরুলিয়া জেল থেকে আরও কিছু বন্দির সঙ্গে রঘুনাথপুর আদালতে নিয়ে আসা হয় ওই দু’জনকে। এসিজেএমের এজলাসে রঘুনাথপুর থানার পাঁচটি ও কাশীপুর থানার একটি মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। দুপুর ২টো নাগাদ আদালতের মধ্যে থাকা কোর্ট লক-আপ থেকে বিচারকের এজলাসে নিয়ে যাওয়ার সময়ে কর্তব্যরত দুই কনস্টেবলের চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে চম্পট দেয় রবি ও সোনু। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়েই দুই কনস্টবলের হাত ছাড়িয়ে আদালতের মূল দরজা দিয়ে পালায় ওই দুই দুষ্কৃৃতী। আদালতের বাইরে থাকা অন্য এক পুলিশকর্মী ধাওয়া করেন তাদের। কিছু দূর গিয়ে বাজার এলাকায় ধরা পড়ে রবি। পরে ওই দুই পুলিশকর্মীর চিকিৎসা করানো হয় রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে।
আইনজীবীদের অভিযোগ, আদালতের মধ্যে ঢিলেঢালা নিরাপত্তা থাকার সুযোগেই পালাতে সক্ষম হয়েছে দুষ্কৃতীরা। রঘুনাথপুর আদালতের বার অ্যাসোসিয়শনের সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ মিশ্র বলেন, “বিচারাধীন বন্দির কাছে লঙ্কার গুঁড়ো থাকার ঘটনাই প্রমাণ করে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা ঢিলেঢালা। তাছাড়া বন্দিপিছু যে সংখ্যায় পুলিশকর্মী থাকা দরকার, তা-ও থাকে না।”
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রঘুনাথপুরে এসডিপিও কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় সহ পুলিশ কর্তারা। এসডিপিও বলেন, “সোনুর খোঁজে তল্লাশি চলছে। দুষ্কৃতীরা লঙ্কার গুঁড়ো কী ভাবে পেল, সেই বিষয়টি-সহ কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের গাফিলতির দিকও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” |