ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে মঙ্গলবার ফের উত্তাল হয়ে উঠল জঙ্গিপুর কলেজ। ছাত্র সংসদের অফিসে ভাঙচুর চলল। দু’টি ছাত্র সংগঠনের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে তাদের হাতেই হেনস্থা হলেন কলেজের অধ্যক্ষ আবু এস শুকরানা মণ্ডল। গত ২৬ জুলাই একই ভাবে তাণ্ডব চলে এই কলেজে। মঙ্গলবারের সংঘর্ষে দু’টি সংগঠনের ৬ জন করে ছাত্র আহত হয়েছেন। এ ভাবে ক্রমাগত অশান্তি চলতে থাকায় কলেজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন তিতিবিরক্ত অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষের অভিযোগ, “এ ভাবে কলেজ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গত এক মাস থেকে ছাত্র ভর্তি চলছে কলেজে। প্রায় প্রতিদিনই অশান্তি হচ্ছে ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে। এখন কলেজে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পুরোদস্তুর ক্লাস রয়েছে। অথচ বেশিরভাগ দিনই ছাত্র অশান্তির কারণে ক্লাস বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এর ফলে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কার কারণে ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে ছাত্র উপস্থিতির হার। ছাত্রীরা তো প্রায় কলেজে আসছেই না।” |
তিনি জানান, এ দিন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমর্থকেরা তাঁর কাছে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, “বেলা ২টো নাগাদ আমি তাঁদের ঘরে ডেকে পাঠাই। কিন্তু অভিযোগ এসেছে, ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা তাঁদের কলেজে ছুকতে বাধা দেন। শুরু হয়ে যায় পুলিশের সামনেই দু’পক্ষের সংঘর্ষ। গোলমালের খবর শুনে আমি বাইরে বেরিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যাই। সে সময়ে আমাকে হেনস্থা করা হয়। পুলিশ কোনও রকমে আমাকে উদ্ধার করেছে।” তিনি বলেন, “১৬ অগস্ট কল্যাণীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের বৈঠক রয়েছে। সেখানে লিখিত ভাবে কলেজে ছাত্র অশান্তির কথা বলে কলেজ বন্ধ রাখার অনুমতি চাইব। কারণ গেটে পুলিশ বসিয়ে রোজ রোজ কলেজ চালানো যায় না।” তাঁর কথায়, “অশান্তির মূল কারণ বহিরাগতেরা।”
ছাত্র পরিষদের কলেজ শাখার সভাপতি হাবিবুর রহমান মির্জা বলেন, “কলেজে ছাত্র সংসদ আমাদের দখলে। মঙ্গলবার দুপুরে সংসদ অফিসে বসে নবীন বরণ উৎসব নিয়ে আলোচনা চলছিল। তখনই অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দেওয়ার বাহানায় তৃণমূলের ছাত্ররা চড়াও হয় ছাত্র সংসদ অফিসের উপরে। ছাত্র সংসদের সম্পাদক-সহ অনেকে আহত হন। তাঁরা অফিস ভাঙচুরও করেন।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি ফিরোজ শেখ বলেন, “অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেই তার কাছে স্মারকলিপি দিতে এসেছিলাম। কলেজে ঢুকতে গেলে ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা আমাদের বাধা দেয়। তারপরে নিজেরাই ছাত্র সংসদ ভাঙচুর করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপায়। কারণ জঙ্গিপুর কলেজে তৃণমূলের উপর হামলা চালানোর শক্তি তৃণমূলের নেই।” |