আচমকাই অনেকটা কমলো দাম বাড়ার হার। জুলাইয়ে তা নেমে এসেছে ৭ শতাংশের নীচে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে গত প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নেমে মূল্যবৃদ্ধির হার ছুঁয়েছে ৬.৮৭%। জুনে ছিল ৭.২৫%। তবে তা মানুষের দৈনন্দিন খরচের বোঝা যথেষ্ট কমাতে পারেনি বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। তাই ফের হঠাৎই দাম বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকিও যথেষ্ট, মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের। তার কারণ মূলত তিনটি:
• দেশের বেশ কিছু অংশে খরার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়া। যার জেরে ১২ অগস্ট পর্যন্ত আবহাওয়া দফতরের হিসেবে গড় বৃষ্টি ঘাটতি ১৬%।
• কারখানায় তৈরি পণ্যের দাম না-কমা। এ ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি (‘কোর ইনফ্লেশন’) জুনের ৫% থেকে বেড়ে ছুঁয়েছে ৫.৫৮%। প্রধানত, সুতিবস্ত্র, কাগজ, সিমেন্ট ও চুনা পাথরের অত্যধিক দাম বাড়াই এর কারণ।
• জ্বালানি, কিছু শাক-সব্জি ও ফলের দাম কমলেও দৈনন্দিন খরচ তালিকায় থাকা বহু পণ্যের দাম বার্ষিক ভিত্তিতে কমেনি। আলু বেড়েছে ৭৩%, চাল ১০.১২%, খাদ্যশস্য ৮.২৯%, ডাল ২৮.২৬%। ডিম, মাছ, মাংস বেড়েছে ১৬% করে, দুধ ৮.০১%।
তা ছাড়া সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি কমলেও, তা এখনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৫-৬% সীমার অনেকটাই ওপরে। ফলে সেপ্টেম্বরে ঋণনীতির পর্যালোচনায় শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ কমাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ অর্থনীতিবিদদের। আর, সুদ না-কমলে শিল্পোৎপাদন চাঙ্গা হওয়ার সম্ভাবনাও কম বলে তাঁদের ইঙ্গিত। পাশাপাশি, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির হার কমলেও, এখনও তা দুই অঙ্কে, ১০.০৬%। জুনে ছিল ১০.৮১%। খাদ্যমন্ত্রী কে ভি টমাস এ প্রসঙ্গে বলেছেন, কিছু অংশে খরার আশঙ্কা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামে প্রভাব ফেলবে। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া বলেন, “মূল্যবৃদ্ধি স্বস্তিজনক অবস্থায় নেই।”
একই মত ব্যাঙ্কিং মহলের। মুম্বইয়ে আইসিআইসিআই প্রাইমারি ডিলারশিপের অর্থনীতিবিদ এ প্রসন্ন বলেন, “পরিসংখ্যান প্রমাণ করে না যে, মূল্যবৃদ্ধি কমার মুখ নিয়েছে।” ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদ নীতেশ রঞ্জন এবং কোটাক মহীন্দ্রা ব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ ইন্দ্রনীল পান-এর মতে, সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি কমলেও শিল্প পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি উদ্বেগের কারণ।
শেয়ার বাজার অবশ্য কিছুটা আশাবাদী। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সেপ্টেম্বরে সুদ কমালেও কমাতে পারে, এই আশায় ভর করে মঙ্গলবার সেনসেক্স বেড়ে যায় ৯৫ পয়েন্ট। বাজার বন্ধ হয় ১৭,৭২৮.২০ পয়েন্টে, যা ৫ মাসে সর্বোচ্চ। |