রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। অথচ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ হয়নি। তার ফলে মালদহ ও দুই দিনাজপুরের ২২টি কলেজের দু’হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হতে বসেছে। ওই ঘটনায় ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রী ও তাঁদের অভিভাবকদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তুঘলকি কাযর্কলাপ ও উদাসীনতার জন্য পাস করার পরেও স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তি হতে না-পারায় ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত নষ্ট হতে বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর ২২ টি কলেজের তৃতীয় বর্ষের অনার্সের ৪ হাজার ৭৭০ জন ও পাস কোর্সের ১০ হাজারের কিছু বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেন। স্নাতকোত্তর কোর্সে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে আসন সংখ্যা প্রায় ৯০০। অনার্সে যদি ৬০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পাস করেন তবে তার মধ্যে হাজার খানেক ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তির সূযোগ পাবেন। ভর্তি প্রক্রিয়া অন্যত্র শেষ হয়ে যাওয়ায় বাকিদের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থাকছে না।
ফল প্রকাশে দেরি হওয়ার সমস্যা মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ামক সনাতন দাস বলেন, “রেজাল্ট বের করার দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সি পরিবতর্নের জন্য একটু দেরী হচ্ছে। তবে ৭ দিনের মধ্যে তৃতীয় বর্ষের রেজাল্ট বের হয়ে যাবে। আগামী বছর থেকে যাতে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রেজাল্ট বের করা যায় তার চেষ্টা করা হবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মাধব অধিকারী বলেন, “যতদূর শুনেছি তৃতীয় বর্ষের রেজাল্ট খুব শীঘ্রই বের হবে। পাস করার পর বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী যাতে স্নাতকোত্তর কোর্সে ভর্তির সুযোগ পায় তার চেষ্টা হবে।” ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় চালুর পর তিন জন উপাচার্য, ১০ জন পরীক্ষা নিয়ামক ও পাঁচ জন রেজিস্টার ও দুইটি কাউন্সিল নিয়োগ হয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ক্যালন্ডারই তৈরি হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন ডামাডোল চলছে। কর্তৃপক্ষ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলছেন। বাম আমলে যেভাবে চলছিল সেই কায়দায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালানো হচ্ছে।” তৃণমূল কলেজ শিক্ষক সংগঠন গৌড়বঙ্গ অধ্যাপক মঞ্চের জেলা সম্পাদক দিলীপ দেবনাথ বলেন, “বিগত দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন তাদের অদক্ষতার জন্যই আজ ছাত্রছাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বতর্মান উপাচার্য দক্ষতার সঙ্গে আগেকার সমস্যা মিটিয়ে পরীক্ষা ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন।” |